ঢাকা: থিয়েটার চর্চায় পেশাদারিত্ব প্রতিষ্ঠায় ২০২১ সালে গড়ে ওঠে বাঁশরী রেপার্টরি। আরণ্যক, নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়, থিয়েটার ’৫২ ও থিয়েটার আর্ট ইউনিটের কিছু মঞ্চশিল্পীর সম্মিলন ঘটে এ নাট্যদলে।
শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটোরিয়ামে মঞ্চায়িত হলো নাটক ‘বনের মেয়ে পাখী’র তৃতীয় মঞ্চায়ন। নাটকটি নতুন করে নির্দেশনা দিয়েছেন নাট্য নির্দেশক সাজ্জাদ সাজু।
নাটকটি নিয়ে সাজ্জাদ সাজু বলেন, আমাদের কাছে এটা এক ভিন্ন ধরনের অনুভূতি। বিষয়টি দলের জন্য বিশেষ গুরুত্ববহ। তাই আবেগের সঙ্গে ভালোলাগার অনুভব কাজ করছে সবার মধ্যে। দলের পক্ষ থেকে প্রযোজনাটিকে সর্বোচ্চ নিখুঁতভাবে মঞ্চায়নের আয়োজন করা হয়েছে। মানুষের জীবনবোধ, বিশ্বাস ও সাম্যের জয়গানে চির জাগরূক কবি নজরুলের সৃষ্টির নির্যাসে। সমাজ বাস্তবতায় নাটকের মাধ্যমে নজরুল চর্চার প্রসার ঘটাতে চাই। ভবিষ্যতেও আমরা আরও ভালো কাজ করতে চাই।
নাটকের গল্পে দেখা যায়, রায়গড়ের পাহাড় ও জঙ্গালাকীর্ণ পথে বাঘের আনাগোনা প্রবল। সেই সংকুল পথে পালকিবাহী বেহাড়া দল বাঘের আক্রমণের শিকার হয়। জানের মায়ায় পালকি ফেলে রেখে তারা পালিয়ে যায়। আর পালকির অভ্যন্তরে নারী কণ্ঠের আর্তনাদে ছুটে আসে সাপুড়ে ভগুলাল। বাঘের সঙ্গে লড়াই করে সে উদ্ধার করে এক শিশুকন্যাকে। কিন্তু শিশুটির মাকে বাঁচাতে পারে না ভগুলাল। শিশুটিকে আগলে রেখে তার দেখভালের দায়িত্ব নেয় বাঘা ভগুলাল। তার নাম রাখে পাখি, বনের মেয়ে পাখি। ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠে সে। সর্পদেবী মনসার কৃপায় পাখি পেয়ে যায় যে কোনো ব্যাধি সারাবার ক্ষমতা। সেই সঙ্গে তার জীবনে যুক্ত হয় সুজন নামের জীবনসঙ্গী। মনসার বরে প্রাপ্ত ক্ষমতা পাখিকে নিয়ে চলে তার হারানো পরিচয় পুনরুদ্ধারের পথে। এভাবেই এগোতে থাকে ‘বনের মেয়ে পাখী’র কাহিনী।
নাটকটি মঞ্চায়নের উপদেষ্টা ও বাঁশরীর সভাপতি ড. ইঞ্জিনিয়ার খালেকুজ্জামান বলেন, আমরা জাতীয় কবির সব ধরনের সৃষ্টিকর্মকে গণমানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ করেছি, যেমন: বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন শহরে নিয়মিত নজরুল অনুষ্ঠান, গান ও কবিতার অনলাইন ও অফলাইন কোর্স, নজরুল সংগীত প্রশিক্ষণ, নিয়মিত ফেসবুক লাইভ অনুষ্ঠান ও নাটক মঞ্চায়ন ইত্যাদি। ২০২১ সালে আমরা বাঁশরী রেপার্টরী থিয়েটারের ব্যানারে মঞ্চে নিয়ে আসি নজরুলের নাটক ‘বনের মেয়ে পাখী’।
নাটক নির্মাণের বিভিন্ন দায়িত্বে ও অভিনয়ে আছেন সুপরিচিত ও দক্ষ নাট্য শিল্পীরা। নাটকটিতে মঞ্চে অভিনয় করেছেন- কামরুল হাসান, শামীমা শওকত লাভলী, জুবায়ের জাহিদ, রুবলী চৌধুরী, সাজ্জাদ সাজু, মেহমুদ সিদ্দিকী (লেলিন), ইন্দ্রানী ঘটক/ অধরা প্রিয়া রাণী দাস, আরশে নওয়ার অদ্রি, নজরুল ইসলাম সোহাগ, ঝুমু মজুমদার, ফিরোজ আল মামুন, রুহুল আমিন, মাজহারুল ইসলাম জুয়েল, শিমুল মিস্ত্রি, নুরজাহান, পাপ্পু, সম্রাট এবং লাভলী আক্তার।
নেপথ্যে ছিলেন উপদেষ্টা: ড. ইঞ্জিনিয়ার খালেকুজ্জামান, নাট্য নির্দেশনা: সাজ্জাদ সাজু, মঞ্চ: সাজু খাদেম, আলো: ঠান্ডু রায়হান, ধ্বনি ও সংগীত: তানভীর আলম সজীব, সংগীত সহকারী: আবদুল আলীম, মাজহারুল ইসলাম জুয়েল, সংগীত প্রক্ষেপণ: রনধীর বড়ুয়া, বাঁশি: উৎস চক্রবর্তী, কোরিওগ্রাফি ঝোটন সিলভেস্টার ছেড়াও, ভিডিও ধারণ প্রতাপ হাজং ও এফ আই বিটু, মেকআপ আর্টিস্ট: রতন সরকার।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩
এইচএমএস/আরআইএস