ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

দ্য ইয়ং হিটলার আই নিউ (পর্ব-২০)

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০০ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০১৬
দ্য ইয়ং হিটলার আই নিউ (পর্ব-২০)

মূল: অগাস্ট কুবিজেক
অনুবাদ: আদনান সৈয়দ

[লেখক অগাস্ট কুবিজেক ছিলেন কুখ্যাত নাজি বাহিনীর জনক অ্যাডলফ হিটলারের ছেলেবেলার বন্ধু। তার জনপ্রিয় গ্রন্থ ‘দ্য ইয়ং হিটলার আই নিউ’ থেকে জানা যায়, হিটলার তার প্রথম যৌবনে গান গাইতেন, ধ্রুপদী সঙ্গীতের সমঝদার ছিলেন, ছিলেন একজন প্রেমিক ও ছবি আঁকায় তার ছিলো আজন্ম ঝোঁক।

তিনি যেনো এক অন্যরকম হিটলার! লেখক অগাস্ট কুবিজেক গ্রন্থটির মাধ্যমে হিটলারের জীবনের অনেক অজানা অধ্যায়কে উন্মোচন করার চেষ্টা করেছেন: অনুবাদক]

পর্ব ২০

সপ্তম অধ্যায়

স্টেফিনির নাচের বিষয়ে অ্যাডলফের অতিরিক্ত চিন্তার কারণে গোটা বিষয়টি নিয়ে সে যেনো তালগোল পাকিয়ে ফেলছিল। আমি বরং এই শঙ্কাই করছিলাম, অ্যাডলফ হয়তো স্টেফেনিকে পাওয়ার জন্য গোপনে তার ছোটবোনের সঙ্গে নাচের প্রশিক্ষণে নেমে গেছে। হিটলারের মা বাড়িতে তার জন্য একটি পিয়ানো কিনে এনেছেন। ভাবছি, খুব শিগগিরই হয়তো সেখানে আমার ওয়ালজ বাজানোর ডাক পড়বে এবং অ্যাডলফ যখন পিয়ানোর তালে তালে নাচবে তখন সেই দৃশ্যটিও আমাকে বোকার মতো হজম করতে হবে। অবশ্য নাচের জন্য অ্যাডলফের সঙ্গীতের কোনো প্রয়োজন নেই। আমি অ্যাডলফকে সঙ্গীতের তালের সঙ্গে শারীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলোর যে সুন্দর একটি সুরময় যোগসূত্র রয়েছে সে কথাটি বলতে চেয়েছিলাম। বলাইবাহুল্য এই বিষয়ের উপর সম্ভবত তার কোনো ধারণাই নেই।

কিন্তু বিষয়টা এতো ভাবার পরও খুব বেশিদূর পর্যন্ত এগুতে পারেনি। অ্যাডলফ দিন-রাত এই নিয়ে ভাবতো এবং এর একটা সুন্দর সমাধানের পথ খুঁজতে নিজেকে ব্যস্ত রাখতো। অ্যাডলফের চিন্তা-ভাবনার এই জটিল সময়ে সে একটি পাগলাটে সিদ্ধান্ত হাতে নিলো। সে স্টেফেনিকে কিডন্যাপ করার মতলব আঁটলো। পুরো বিষয়টা নিয়ে আমার সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করলো এবং এ কাজ করতে আমার যা যা করণীয় কাজ থাকবে তা বুঝিয়ে দিলো। বিষয়টা আমার জন্য মোটেও সুখকর কোনো অভিজ্ঞতা ছিলো না। আমার দায়িত্ব হলো, অ্যাডলফ যখন স্টেফেনিকে কিডন্যাপ করবে সেই মুহূর্তটা তার মাকে কথাবার্তা এবং আলাপ-আলোচনায় ব্যস্ত রাখা। ‘কিডন্যাপ যে করবে তারপর তোমরা দু’জন থাকবে কোথায়?’ আমি তাকে ব্যক্তিগতভাবে প্রশ্নটি করলাম। আমার কথা শুনে তাকে কিছুক্ষণের জন্য চিন্তাযুক্ত দেখা গেলো এবং এই সাহসী পরিকল্পনাটাই সে ভেস্তে দিলো।

কপাল খারাপ থাকলে যা হয় সেসময় স্টেফেনির মেজাজটাও খুব ফুরফুরে ছিলো না। সে যখন স্কিমিয়েডটোরেক অতিক্রম করতো তখন এমনভাবে হাঁটতো এবং ভাব করতো যে, অ্যাডলফ নামের কেউ যেনো তার আশেপাশে নেই। স্টেফেনির এই অবজ্ঞা অ্যাডলফকে আরো বেশি জেদি করে তুললো। ‘আমি আর এটি নিতে পারছি না। আমি এর শেষ দেখে ছাড়বো। ’ অ্যাডলফ চিৎকার করে কথাগুলো আমাকে শোনাতো।

যতদূর মনে পড়ে, সেটিই ছিলো অ্যাডলফের প্রথম এবং শেষ আত্মহত্যা করার প্রচেষ্টা। পরিকল্পনাটা আমাকে সে জানিয়েছিল। সে দানিয়ুব নদীর উপর যে ব্রিজটি রয়েছে সেখান থেকে লাফিয়ে পড়বে এবং এভাবেই জীবনের ইতি টানবে। কিন্তু স্টেফেনিকেও তার সঙ্গে মরতে হবে। সে নিজেও ব্রিজ থেকে ঝাঁপ দেবে, স্টেফেনিকেও তার সঙ্গে ঝাঁপ দিতে বাধ্য করবে। অ্যাডলফ এ কথাটাও যোগ করলো। পরিকল্পনা অ্যাডলফের মনে তখন পায়চারি করছিল। তার প্রতিটা ভয়ংকর পরিকল্পনার সঙ্গে আমাকেও সে যুক্ত করতো এবং তখন আমার কী ভূমিকা থাকবে সেটাও সে আমাকে আগে থেকেই জানিয়ে রাখতো। যেহেতু আমি বেঁচে থাকবো তাই বিষয়টা আমাকে খুব যন্ত্রণা দিত। এমনকি স্বপ্নেও বিষয়টা আমাকে ভাবাতো।

কিন্তু খুব শিগগিরই আকাশ আবার নীল হলো। এবং অ্যাডলফের জন্য সবচেয়ে সুখের একটি দিন এলো। সেটি ছিলো ১৯০৬ সাল। আমি নিশ্চিত এই স্মৃতিটুকু অ্যাডলফও নিশ্চয় ঠিক আমার মতোই তার স্মৃতিতে বহন করে চলেছে। লিজ শহরে শুরু হলো বসন্ত উৎসব। বরাবরের মতো অ্যাডলফ আমার জন্য কারমেলাইট চার্চের সামনে অপেক্ষা করছিল। প্রতি রোববার আমি আমার বাবা-মায়ের সঙ্গে এই চার্চে যেতাম এবং সেখান থেকে স্কিমিয়েডটোরেকে স্টেফেনিকে দেখার আশায় আমরা দু’জনেই আমাদের অবস্থান নিতাম। অবস্থানগত কারণে এটি আমাদের জন্য সুবিধার ছিলো এ কারণেই যে, স্কিমিয়েডটোরেকের ঢালটি অনেক নিচু ছিলো এবং যেখানে বসন্ত উৎসব চলছিল সেখান থেকে তা খুব কাছেই। সেখানে ফুলের দোকানে সুশ্রী সুন্দরী তরুনী এবং মহিলারা ফুল নিয়ে আনন্দ উৎসবে মেতে আছে। কিন্তু এডলফের এসব দেখার না আছে চোখ আর না আছে কান। তার চোখ শুধু কখন স্টেফেনি আসবে সেই আশায় যেনো সময় গুনছে। আমিও ইতোমধ্যে স্টেফেনির দেখা পাওয়ার সবরকম সম্ভাবনা ছেড়েই দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অ্যাডলফ আমার বাহুতে এমন শক্ত করে চাপ দিলো যে আমি ব্যথায় চিৎকার করে দেওয়ার অবস্থা। আমরা দু’জনেই আবিষ্কার করলাম ফুল দিয়ে সাজানো সুন্দর একটি ঘোড়ার গাড়িতে স্টেফেনি ও তার মা বসে আছে এবং তারা দু’জনেই যেনো স্কিমিয়েডটোরেকের দিকেই আসছে। সেই দৃশ্যটির কথা আমার এখনও স্পষ্ট মনে আছে। হালকা ধূসর রঙের একটা গাউন আর মাথায় একটি গোলাপি রোদ নিবারক টুপি পরে স্টেফেনির মা এমনভাবে বসে রয়েছে যেনো গোটা এলাকায় তার সেই বসন্তের আভাটি ছড়িয়ে পরেছে। সিল্কের একটি জামা পরা স্টেফেনির হাত ভরে আছে লাল রঙের পপি, কিছু গোলাপ আর নীল রঙের ফুলকপির ফুল। সেই ফুলের আভায় বসন্ত যেনো আরও বন্য হয়ে সেখানে ধরা পড়েছিল। স্টেফেনি এবং তার মাকে বহন করা ঘোড়ার গাড়িটা যখন আমাদের দিকে আসছিল তখন অ্যাডলফ যেনো আনন্দে বাতাসে ভাসছিল। তাকে দেখে মনে হচ্ছিল সে যেনো এমন দৃশ্য তার জীবনে আর কখনই দেখেনি। তাদের ঘোড়ার গাড়িটা আমাদের খুব কাছেই চলে এলো। অ্যাডলফ এবং স্টেফেনির মায়াবী দৃষ্টি বিনিময় হলো। স্টেফেনি তার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো এবং আমাদেরকে অবাক করে দিয়ে সঙ্গে রাখা ফুলের ঝুড়ি থেকে একটি ফুল অ্যাডলফের দিকে ছুড়ে মারলো।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৪ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০১৬
এসএনএস

আগের পর্ব পড়তে ক্লিক করুন-
** দ্য ইয়ং হিটলার আই নিউ (পর্ব-১)
** দ্য ইয়ং হিটলার আই নিউ (পর্ব-২)
** দ্য ইয়ং হিটলার আই নিউ (পর্ব-৩)

**দ্য ইয়ং হিটলার আই নিউ (পর্ব-৪)
** দ্য ইয়ং হিটলার আই নিউ (পর্ব-৫)
** দ্য ইয়ং হিটলার আই নিউ (পর্ব-৬)
** দ্য ইয়ং হিটলার আই নিউ (পর্ব-৭)
** দ্য ইয়ং হিটলার আই নিউ (পর্ব-৮)
** দ্য ইয়ং হিটলার আই নিউ (পর্ব-৯)
** দ্য ইয়ং হিটলার আই নিউ (পর্ব-১০)
** দ্য ইয়ং হিটলার আই নিউ (পর্ব-১১)
** দ্য ইয়ং হিটলার আই নিউ (পর্ব-১২)
** দ্য ইয়ং হিটলার আই নিউ (পর্ব-১৩
** দ্য ইয়ং হিটলার আই নিউ (পর্ব-১৪)

** দ্য ইয়ং হিটলার আই নিউ (পর্ব-১৫)
** দ্য ইয়ং হিটলার আই নিউ (পর্ব-১৬)

** দ্য ইয়ং হিটলার আই নিউ (পর্ব-১৭)
** দ্য ইয়ং হিটলার আই নিউ (পর্ব-১৮)
** দ্য ইয়ং হিটলার আই নিউ (পর্ব-১৯)

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।