ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

বাস্তবতাকে প্রমাণ করেছেন স্যার জগদীশচন্দ্র বসু

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৭
বাস্তবতাকে প্রমাণ করেছেন স্যার জগদীশচন্দ্র বসু স্যার জগদীশচন্দ্র বসু’র স্মরণ অনুষ্ঠানে অতিথি ও আলোচকরা। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম সেরা বিজ্ঞানী স্যার জগদীশচন্দ্র বসু এখনকার সময়ে ব্যবহৃত অনেক মাইক্রোওয়েভ যন্ত্রাংশেরও আবিষ্কর্তা বলে জানিয়েছেন বরেণ্য পদার্থবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. অজয় রায়।

শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে মিলনায়তনে স্যার জগদীশচন্দ্র বসু’র স্মরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. অজয় রায় আরও বলেন, স্যার জগদীশচন্দ্র বসুর কাজ ছিলো মূলত রেডিও মাইক্রোওয়েব অপটিক্সের তাত্ত্বিক দিক নিয়ে।

তিনি তার গবেষণায় এ তরঙ্গের প্রকৃতি ও প্রণালী ব্যাখ্যা করতে সক্ষম হয়েছিলেন। রেডিও গবেষণায় তার উল্লেখযোগ্য অবদান হচ্ছে- তিনিই সর্বপ্রথম রেডিও তরঙ্গ শনাক্ত করতে সেমিকন্ডাক্টর জাংশনের ব্যবহার করেন।

অনুষ্ঠানের আলোচক ইনডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের সহযোগী অধ্যাপক কথাসাহিত্যিক ড. আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেন, ব্রিটিশ শাসিত ভারতীয় উপমহাদেশে বিভিন্ন আশ্চর্যজনক যন্ত্র আবিষ্কার করে বিশ্বে হই চই ফেলে দেন স্যার জগদীশচন্দ্র বসু। এ নির্লোভ বিজ্ঞানী নিজের লাভের কথা চিন্তা না করে কাজের মাধ্যমে নিজেকে সর্বদা জনকল্যাণে নিয়োজিত রাখেন।

১৯১৭ সালে উদ্ভিদ-শরীরতত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করতে কলকাতায় ‘বসু বিজ্ঞান মন্দির’ প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। গবেষণার উদ্দেশ্যে এখানে উদ্ভিদ ও কৃষি রসায়ন, পদার্থ বিজ্ঞান এবং নৃ-তত্ত্ব বিভাগ খোলা হয়। এখানেই আমৃত্যু গবেষণা কাজ পরিচালনা করে গেছেন বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র।

আরেক আলোচক সরকারি হরগঙ্গা কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, নিরহঙ্কারী এ বাঙালি বিজ্ঞানী রেডিও সিগন্যাল শনাক্তকরণে সেমিকন্ডাক্টরের ব্যবহার বিষয়ে তার করা গবেষণাপত্র পর্যন্ত উন্মুক্ত করে দেন। ফলে অন্য বিজ্ঞানীরাও এটি নিয়ে গবেষণা করতে পারেন। তা না হলে আজ গোটাকয়েক পেটেন্টের অধিকারী হতে পারতেন এই মহাত্মা। জগদীশচন্দ্র বসুই প্রথম প্রমাণ করেন যে, প্রাণী ও উদ্ভিদের মধ্যে অনেক সাদৃশ্য রয়েছে।

অনুষ্ঠানের সভাপতি বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের সদস্য বিশিষ্ট লেখক-গবেষক সমর চন্দ্র পাল বলেন, বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসুর গবেষণা কতোটা সত্য ও বাস্তব, প্রত্যেক বাঙালি তা অনুধাবন করতে সক্ষম। বাংলাদেশের পথে-প্রান্তরে, পুকুরের ধারে, নদীর কূলে প্রায় সর্বত্র লজ্জাবতী লতা গুল্ম দেখা যায়। এ গাছকে ছোঁয়ামাত্রই দেখা যাবে, কিভাবে গাছটি লজ্জায় সব পাতা গুটিয়ে নিচ্ছে। দেখলেই বোঝা যায়, জীবন্ত প্রাণী হচ্ছে এই গুল্মরাজি। এমন কোনো ছেলে-মেয়ে নেই, যারা লজ্জাবতী লতাকে স্পর্শের আনন্দ উপভোগ করেনি।

বিজ্ঞানী বসু তার শৈশব ও কৈশোরে লজ্জাবতী গাছের স্পর্শ থেকে প্রথমে অনুভব করেন, বৃক্ষের প্রাণ আছে। আর তিনি সেই গবেষণা করতে গিয়েই প্রমাণ করেছেন একটি বাস্তবতাকে।

বাংলাদেশ সময়: ২০২১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৭
এইচএমএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।