ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

শুধু রাগ নয়, সঙ্গীত পূর্ণতায় বেঙ্গলের ‘সুনাদ’

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৮
শুধু রাগ নয়, সঙ্গীত পূর্ণতায় বেঙ্গলের ‘সুনাদ’ উচ্চাঙ্গ সংগীতের আসর সুনাদ। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: অপেক্ষা কথাটার মধ্যে কেমন যেনো একটা ‘অপয়া’ ব্যাপার আছে। তাইতো প্রেয়সীর জন্য ‘প্রতীক্ষা’র আবেগ মূর্ত হয়ে ওঠে উচ্চাঙ্গ সংগীতের রাগ ‘বাগেশ্রী’তে। হলোও ঠিক তাই। খেয়াল পরিবেশনায় শিল্পী রাগ বাগেশ্রীর আলাপে বিরহ, অনুযোগ, অভিমান, তৃষ্ণার্ত অপেক্ষা আর প্রতিদান ও প্রত্যাশাহীন ভালোবাসাসহ বিরহ বেদনার পূর্ণতা ছড়িয়ে দিলেন পুরো মিলনায়তনের দর্শকদের মাঝে।

রাত তখনও গভীর হয়নি। তবে তাতে কি, রাতের শরীরে একটু গাঁঢ় আঁধারের শাড়ি পরিয়েই গেয়ে ওঠা যায় হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সংগীতের জনপ্রিয় রাগগুলোর মধ্যে অন্যতম রাগ বাগেশ্রী।

তাই গাইলেন শিল্পী অলোক সেন। খেয়ালের পরিবেশনায় রাগ বাগেশ্রীর জাদুতে রোমান্টিকতায় টেনে নিলেন মিলনায়তনের দর্শক শ্রোতাদের।

সোমবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বেঙ্গল ফাউন্ডেশন আয়োজন করে উচ্চাঙ্গ সংগীতের আসর সুনাদ। রাজধানীর ছায়ানট মিলনায়তনের এ আয়োজনে সঙ্গীত পরিবেশন করেন বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের শিল্পীরা।

বাংলাদেশে উচ্চাঙ্গসংগীতের প্রচার ও প্রসারের উদ্দেশ্যে বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে নবীন ও প্রতিভাবান শিক্ষার্থীদের নিয়ে সংগঠিত হয়েছে বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়। এ সব শিক্ষার্থীর খেয়াল ও ধ্রুপদ পরিবেশন এবং সরোদ, সেতার, তবলা ও এসরাজ বাদন নিয়েই নিয়মিত আয়োজন হিসেবে সূচনা করা হয় ‘সুনাদ’। ছায়ানটের এ অায়োজন ছিল তারই প্রথম অধিবেশন।

সন্ধ্যায় আয়োজনের শুরুতেই শিল্পীদের উত্তরীয় পরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের সভাপতি আবুল খায়ের। এসময় তিনি বলেন, যে আশা নিয়ে আমরা বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব শুরু করেছিলাম তারই প্রতিফলন বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়, যা গত ৪ বছর ধরে চলছে। এরই মধ্যে আমাদের ২ জন শিক্ষার্থী ভারতে পরিবেশন করে এসেছে। আমরা আনন্দিত এবং আশা করছি এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।

বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের শিক্ষার্থী ইশরা ফুলঝুরি খান, ইলহাম ফুলঝুরি খান, সাদ্দাম হোসেন এবং আরেফিন রনি'র দলীয় সরোদ বাদনের মাধ্যমে শুরু হয় আয়োজন। এসময় পরিবেশন করা হয় রাগ ভুপাল। তাদের সঙ্গে তবলায় ছিল সংগীতালয়ের শিক্ষার্থী সুপান্থ মজুমদার এবং রতন কুমার দাস।

এরপর রাগ-শ্রী (খেয়াল) পরিবেশন করেন সংগীতালয়ের শিক্ষার্থী মিরাজুল জান্নাত সোনিয়া। এসময় তবলায় ছিলেন সংগীতালয়ের শিক্ষার্থী প্রশান্ত ভৌমিক, হারমোনিয়ামে আলমগীর পারভেজ সুমন এবং তানপুরায় ছিলেন সুপ্রিয়া দাস, সুস্মিতা দেবনাথ।

বিকেল শেষ করে সন্ধ্যায় প্রবেশের সময়কে সামনে নিয়ে আসে রাগ শ্রী। সে রাগেই গোধূলির বিষণ্নতায় শূন্যতার অনুভূতি জাগানো খেয়াল পরিবেশনা শেষে মঞ্চে তবলার লহরা নিয়ে আসেন সুপান্থ মজুমদার। এসময় হারমোনিয়ামে সঙ্গ দেন আলমগীর পারভেজ সুমন।

প্রথমদিনের সর্বশেষ পরিবেশন রাগ-বাগেশ্রী (খেয়াল) পরিবেশন করেন অতিথি শিল্পী অলোক সেন। এসময় তবলায় সঙ্গত করেন সবুজ আহমেদ এবং হারমোনিয়ামে মোহাম্মদ শাকুর, তানপুরায় দ্বীপ চন্দ্র দাস ও ধ্রুব সরকার। আয়োজনে ভজন পরিবেশনের মধ্যদিয়ে প্রথম দিনের অনুষ্ঠান শেষ করেন শিল্পী।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী।

মঙ্গলবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় দ্বিতীয়দিনের মতো শুরু হবে ‘সুনাদ’র আসর। এদিন দলীয় সেতার বাদন, খেয়াল ও ধ্রুপদ পরিবেশন এবং দলীয় এসরাজ বাদন থাকবে ছায়ানটের মিলনায়তনে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৮
এইচএমএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।