ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

হেলেনা ফেরদৌসীর বই ‘নয়ামাধ্যম ও আমাদের জীবন’

শিল্প-সাহিত্য ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৯
হেলেনা ফেরদৌসীর বই ‘নয়ামাধ্যম ও আমাদের জীবন’

ঢাকা: একবিংশ শতক যেন রূপ নিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তির শতকে। এই শতকে আবির্ভূত নয়ামাধ্যম অর্থাৎ স্মার্টফোন-ইন্টারনেট যেন জগৎ-জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে। বরাবরই নয়ামাধ্যমের নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে কথা বলা হলেও বৈশ্বিক অগ্রগতিতে এর অবদান কম নয়।

নয়ামাধ্যম-কেন্দ্রিক এমন ভালো-মন্দ বিতর্ক নিয়ে গবেষণাধর্মী একটি বই লিখেছেন ড. হেলেনা ফেরদৌসী। বইয়ের নাম ‘নয়ামাধ্যম ও আমাদের জীবন’।

চলতি এপ্রিলেই বইটি প্রকাশ করেছে পুরান ঢাকার বাংলাবাজারের প্রকাশনী ‘অন্যধারা’।

দশটি অধ্যায়ে সাজানো এই বইয়ে নয়ামাধ্যমের ধারণা ও সংজ্ঞায়নের পাশাপাশি আছে মোবাইল ফোন, সামাজিক মাধ্যম, ভিডিও গেমস আসক্তির বিভিন্ন দিক। বলা হয়েছে গণমাধ্যমের আলোচ্যসূচি নির্ধারণে ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমের প্রভাবের বিষয়টিও। এই বইয়ে আরও আছে ডিজিটাল মিউজিকের সম্ভাবনা, ডিজিটাল সিনেমা, ডিজিটাল বিভক্তির প্রসঙ্গ। নয়ামাধ্যম ও সন্ত্রাসবাদের সম্পর্ক বিশ্লেষণের পাশাপাশি সাইবার অপরাধের বিষয়টিও লেখক তুলে ধরেছেন এ বইয়ে।

‘নয়ামাধ্যম ও আমাদের জীবন’ বইটির ভূমিকায় হেলেনা ফেরদৌসী বলেছেন, “…শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলেই প্রযুক্তির বিভিন্ন ডিভাইসকে দৈনন্দিন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ গেজেটে পরিণত করেছে। বিপরীতে তাদের সামাজিকীকরণ গিয়ে ঠেকেছে শূন্যের কোঠায়। সামষ্টিক জীবনকে পেছনে ফেলে মানুষ আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠেছে। নয়ামাধ্যম আমাদের প্রত্যেককে বিচ্ছিন্ন দ্বীপের বাসিন্দায় পরিণত করেছে। সকলের মাঝে থেকেও আমরা সকলেই একা। // নয়ামাধ্যম বিতর্কে এর নেতিবাচক প্রভাবকে আমরা বরাবরই এগিয়ে রাখি। কিন্তু এর বৈশ্বিক অর্জনকে কোনোভাবেই ভুলে যাওয়া চলবে না। …// আলোর পাশে অন্ধকার যেমন চিরায়ত, তেমনি ভালোর পাশে মন্দ। এই বইটি নয়ামাধ্যমকেন্দ্রিক ভালো-মন্দ বিতর্কের প্রতি আলোকপাত করেছে। ”

গবেষণাধর্মী দশ অধ্যায় সংযোজিত এ বই যোগাযোগ বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় আগ্রহী শিক্ষার্থী-গবেষক-চিন্তকদের জন্য- উল্লেখ করে ভূমিকায় লেখক বলেছেন, “নয়ামাধ্যমকে উন্মোচন করার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস সার্থক হবে যদি বইটি তাদের কাছে সমাদৃত হয়। ”

হেলেনা ফেরদৌসী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্সের পর একই বিভাগের অধীন পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। দীর্ঘ ২৭ বছর শিক্ষকতায় যুক্ত হেলেনা ফেরদৌসী ১৯৯২ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ বিভাগে শিক্ষকতা করেন। এরপর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি এ বিভাগের অধ্যাপক। ২০১৪ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিনের দায়িত্বও পালন করেন। একই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্যও ছিলেন তিনি। হেলেনা ফেরদৌসী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ বিভাগ এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে পাঁচবার চেয়ারপারসন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।

দেশের বিভিন্ন জার্নালে তার বহু গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ জার্নালের প্রধান সম্পাদক ও সহযোগী সম্পাদক হিসেবে গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশে ভূমিকা রেখেছেন হেলেনা ফেরদৌসী। তিনি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের জার্নালিজম ফেলোশিপের জুরি সদস্য হিসেবে বেশ কয়েকবার দায়িত্ব পালন করেছেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে গবেষণাকর্মের সমন্বয়ক ও রিসোর্সপারসন হিসেবেও কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে তার।

হেলেনা ফেরদৌসীর লেখা অত্যন্ত সময়োপযোগী এবং গবেষণালব্ধ বই ‘নয়ামাধ্যম ও আমাদের জীবন’ পাওয়া যাবে অন্যধারায় (৩৮/২-ক, বাংলাবাজার (৫ম তলা), ঢাকা-১১০০)

বাংলাদেশ সময়: ১১০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৯
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।