ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

৬৫ বছরে বাংলা একাডেমি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০১৯
৬৫ বছরে বাংলা একাডেমি

ঢাকা: সময়ের পথপরিক্রমায় ৬৫ বছরে পা রাখলো বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের চেতনায় ঋদ্ধ হয়ে ১৯৫৫ সালের ৩ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয় বাঙালি জাতিসত্তা ও বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষের প্রতীক এই প্রতিষ্ঠানটি।

ইতিহাসের পাতা থেকে জানা যায়, ১৯৫৫ সালের ৩ ডিসেম্বর ‘বর্ধমান হাউস’র সম্মুখে বটতলায় (বর্তমান নজরুল মঞ্চ) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পূর্ববাংলার তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী জনাব আবু হোসেন সরকার ‘উদ্বোধনী ভাষণ’ পাঠ করেন।

পূর্ববাংলার তদানীন্তন শিক্ষামন্ত্রী জনাব আশরাফ উদ্দীন আহমদ চৌধুরীও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

বাংলা একাডেমির প্রথম সচিব ছিলেন মুহম্মদ বরকতুল্লাহ, তার পদবি ছিল বিশেষ কর্মকর্তা বা স্পেশাল অফিসার। প্রথম পরিচালক অধ্যাপক মুহম্মদ এনামুল হক, প্রথম মহাপরিচালক ছিলেন অধ্যাপক মাযহারুল ইসলাম। একাডেমি থেকে প্রকাশিত প্রথম গ্রন্থ ছিল আহমদ শরীফ সম্পাদিত দৌলত উজির বাহরাম খানের ‘লাইলী মজনু’। সেই থেকে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে ছয় সহস্রাধিক বই।

বইয়ের পাশাপাশি নিয়মিত প্রকাশনাও রয়েছে বাংলা একাডেমির। ‘বাংলা একাডেমি পত্রিকা’, ‘উত্তরাধিকার’, ‘বাংলা একাডেমি বার্তা’, ‘বাংলা একাডেমি বিজ্ঞান পত্রিকা’, ‘বাংলা একাডেমি জার্নাল’ ও ‘ধানশালিকের দেশ’ নামে ছয়টি নিয়মিত প্রকাশনা রয়েছে তাদের।

চারটি বিভাগের মাধ্যমে বাংলা একাডেমি বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পাদন করছে। সেগুলো হলো গবেষণা, সংকলন ও ফোকলোর বিভাগ; ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও পত্রিকা বিভাগ; পাঠ্যপুস্তক বিভাগ এবং প্রাতিষ্ঠানিক, পরিকল্পনা ও প্রশিক্ষণ বিভাগ।

বাংলা একাডেমির আয়োজনে প্রতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে অনুষ্ঠিত হয় ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’। সেই সঙ্গে দেওয়া হয় বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, যা দেশের অন্যতম সর্বোচ্চ সম্মান হিসেবে বিবেচিত। এছাড়া এখান থেকেই রবীন্দ্র পুরস্কার, জসীমউদদীন সাহিত্য পুরস্কার, মযহারুল ইসলাম কবিতা পুরস্কার, সা’দত আলি আখন্দ সাহিত্য পুরস্কার, মেহের কবীর বিজ্ঞানসাহিত্য পুরস্কার, হালীমা-শরফুদ্দীন বিজ্ঞান পুরস্কার ও প্রবাসী সাহিত্য পুরস্কার দেওয়া হয়।

এসবের পাশাপাশি বর্ধমান হাউসে ভাষা আন্দোলন জাদুঘর, জাতীয় সাহিত্য ও লেখক জাদুঘর ও লোকঐতিহ্য জাদুঘর পরিচালনা করে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া ভাস্কর নভেরা প্রদর্শনালয় নামে একটি গ্যালারিও রয়েছে একাডেমির অধীনে।

কর্মসূচি : বাংলা একাডেমির ৬৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সকালে ভাষা আন্দোলনের অমর শহীদদের স্মৃতিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করা হবে।

বিকেল ৪টায় একাডেমির রবীন্দ্রচত্বরে ‘বাংলা একাডেমি ও আমাদের সমাজ’ শীর্ষক বক্তৃতা রাখবেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। স্বাগত বক্তব্য রাখবেন বাংলা একাডেমির সচিব মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী।

এছাড়া সন্ধ্যা ৬টায় আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে স্মৃতিচারণ, সংবর্ধনা জ্ঞাপন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। স্মৃতিচারণে অংশ নেবেন ও সংবর্ধিত হবেন একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক, সচিব, পরিচালক এবং উপ-পরিচালকরা। সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেবেন বাংলা একাডেমির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

বাংলাদেশ সময় ০১৫০, ডিসেম্বর ০৩, ২০১৯
ডিএন/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।