ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

সাত দিনব্যাপী জাতীয় পথনাটক উৎসব শুরু

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৩ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০২০
সাত দিনব্যাপী জাতীয় পথনাটক উৎসব শুরু কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাত দিনব্যাপী জাতীয় পথনাটক উৎসব শুরু।

ঢাকা: বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাকে উপজীব্য করে দেশব্যাপী নাটক, সভা ও সেমিনার সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রত্যয়ে শুরু হলো সাত দিনব্যাপী জাতীয় পথনাটক উৎসব ২০২০। এবার এ উৎসবের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘যুদ্ধ মাসে কেটেছে আঁধার, ছড়িয়ে দাও শিল্পের অধিকার’।

রোববার (০১ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ।

উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন, সব গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও সংকটকালে পথনাটক বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সব সময় পথনাটকের সহযোগিতা করে এসেছে এবং আগামীতেও এ সহায়তা অব্যাহত থাকবে।

বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের সভাপতি মান্নান হীরার সভাপতিত্বে উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, সহ-সভাপতি ঝুনা চৌধুরী, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের সেক্রেটারি জেনারেল কামাল বায়েজিদ এবং নাট্যকার ও নির্দেশক মাসুম রেজা।

অনুষ্ঠানে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, মঞ্চনাটকের সঙ্গে পথনাটকের একটি পার্থক্য আছে। মঞ্চনাটকে দর্শক যেখানে প্রস্তুতি নিয়ে দেখতে আসে, সেখানে পথনাটকের সঙ্গে দর্শকের তাৎক্ষণিক সংযোগ ঘটে। ফলে এর মাধ্যমে সহজে তাৎক্ষণিকভাবে দর্শকের কাছে পৌঁছানো যায়। পথনাটকের প্রয়োজনীয়তা কখনো ফুরাবে না, বরং এর ব্যাপকতা আরও বাড়বে।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি ঝুনা চৌধুরী বলেন, যখনই কোনো অসংগতি, দোলাচাল সামনে আসে, সাধারণ মানুষের কাছে যখন একটি বিষয় পৌঁছে দিতে হয়, তখনই আমরা পথে নামি। স্বাধীণতার পর থেকেই পথনাটক এই কাজটি করে আসছে নিরলসভাবে।

বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের সেক্রেটারি জেনারেল কামাল বায়েজিদ বলেন, এ উৎসব আমাদের জাগ্রত করে। তবে এ শহরে এমন অনেক মানুষ রয়েছে, যারা অন্য সংস্কৃতি লালন করে কিন্তু তিন পুরুষ পার হয়ে গেলেও শহীদ মিনার চেনেন না। তাদের জাগ্রত করতে হবে। আমাদের সংস্কৃতির উন্নয়নে একটি সাংস্কৃতিক অধিদপ্তর তৈরি এখন সময়ের দাবি।

নাট্যকার ও নির্দেশক মাসুম রেজা বলেন, আমার নাট্যকার হয়ে ওঠা পথনাটকের মধ্য দিয়ে। পথনাটকের এমন একটি শক্তি রয়েছে, যা যেকোনো শোষণ শাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠতে পারে এবং আন্দোলনকে বেগবান করে তুলতে পারে। পথনাটকে এবং মঞ্চনাটকে এখন দর্শকের অভাব। অন্য দেশে নাটক নিয়ে বহুল প্রচার থাকলেও আমাদের দেশে তা কম। তাই এ বিষয়ে একটি আলাদা ওয়েবসাইট করে নাটকের প্রদর্শনী ও নাটক সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য দর্শকদের জন্য আরও সহজতরভাবে দেওয়া যেতে পারে।

এর আগে উৎসবে স্বাগত ও শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহম্মেদ গিয়াস ও উৎসবের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান। ঘোষণাপত্র পাঠ করেন পরিষদের কার্যনির্বাহী সদস্য হামিদুর রহমান। উৎসব শুরু হয় জাতীয় সঙ্গীত ও গণসঙ্গীতের মধ্য দিয়ে। এসময় অনিক বসুর পরিচালনায় উৎসব নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্য সংগঠন ‘স্পন্দন’।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর মঞ্চে অপেরা নাট্যদল পরিবেশন করে নাহিদ স্মৃতির রচনা ও নির্দেশনায় পথনাটক ‘ভাসা ভাসা ভাষার কথা’, ঢাকা থিয়েটার মঞ্চ পরিবেশন করে আফরীন হুদা তোরার রচনা ও নির্দেশনায় পথনাটক ‘ভাস্কর্য’, ভিষণ থিয়েটার পরিবেশন করে অধ্যাপক মলয় ভৌমিকের রচনা ও শেখ ফিরোজ আহমেদ বাবুর নির্দেশনায় পথনাটক ‘প্রতিপক্ষ’ এবং বাঙলা নাট্যদল পরিবেশন করে নাসির আহম্মেদ দুর্জয়ের রচনা এবং হ ম সহিদুজ্জামানের নির্দেশনায় পথনাটক ‘বৃত্ত’। উৎসবের সাত দিনে একই স্থানে প্রতিদিন বিকেলে মোট ৩৮টি পথনাটক প্রদর্শিত হবে। উৎসব চলবে আগামী সাত মার্চ পর্যন্ত।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৩ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০২০
এইচএমএস/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।