ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা নাট্যোৎসব শুরু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০২১
বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা নাট্যোৎসব শুরু

ঢাকা: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ এবং বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তীকে স্মরণীয় ও প্রাঞ্জল করতে মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়ের আয়োজনে শুরু হয়েছে ১১ দিনব্যাপী বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা নাট্যোৎসব।

শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নন্দনমঞ্চে এ উৎসবের উদ্বোধন করা হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিকেল ৫টায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও স্বাধীন বাংলাদেশের সংস্কৃতির অগ্রযাত্রায় অসামান্য ভূমিকা রাখা ৫০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা সংস্কৃতিজন প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে উৎসবের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম মোজাম্মেল হক।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরীয় পরিয়ে এবং ক্রেস্ট উপহার দিয়ে সম্মান জানানো হয়। এরপর আয়োজনে কামরুল হাসান ফেরদৌসের কোরিওগ্রাফিতে গীতিআলেখ্যা ‘স্মরণে ৭১’ পরিবেশন করে বহর। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত কবিতা পাঠ করেন কিশোরগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা লাল মাহমুদ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সূচনা বক্তব্যে বিশিষ্ট সংস্কৃতিজন বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন ইউসুফ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর যে যার কাজে ফিরে গেছেন, কিন্তু যারা সংস্কৃতি ভালোবাসেন, তারা এখনও এর সঙ্গেই আছেন। এখন আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী একসঙ্গে পালন করছি। এ সময়টি যারা দেখছেন, তারা ভাগ্যবান। এটা ঠিক যে এদেশে এখনো মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ মাথা উঁচু করতে চাইছে, তবে তাদের পরাজিত করে নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি করবো আমরা। আর আমাদের সঙ্গ দেবে তরুণরা, যারা সংস্কৃতিকে ভালোবাসে, দেশকে ভালোবাসে।

এ সময় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- বীর মুক্তিযোদ্ধা সংস্কৃতিজন ড. ফওজিয়া মোসলেম, মফিদুল হক ও ম হামিদ। তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধ আমাদের বিশাল শক্তি। এ শক্তি এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে ছড়িয়ে যাবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় যেসব কবি, বাউল, সাহিত্যিক, শিল্পী সবাই মিলে সংস্কৃতিকে তুলে ধরেছেন, সেই সংস্কৃতির শক্তি নিয়ে এগিয়ে যাবে দেশ। তা থেকে শিক্ষা নিয়ে সহনশীলতায় তরুণ প্রজন্ম গড়বে সম্প্রীতির বাংলাদেশ। মৌলিকভাবে উন্নয়ন ঘটবে বাংলাদেশের।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা দুটি সমার্থক শব্দ। একটি থেকে আরেকটি আলাদা করা যায় না। আমরা যুদ্ধ করে যে সাম্প্রদায়িকতা রুখে দিয়েছিলাম, তা আবার একটি গোষ্ঠী ছড়িয়ে দিচ্ছে। কিন্তু এ যে আমাদের সংস্কৃতি, এর ফলে এখন আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধ জাগ্রত হয়ে আছে। আমাদের নতুন যে প্রজন্ম, সেই তরুণদের এখন দায়িত্ব মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে দেশকে গড়ে তোলা।

তিনি বলেন, অস্ত্রের যুদ্ধের বিপরীত হচ্ছে সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ। এটি খুব অল্প সময়ে মানুষকে শানিত করতে পারে। তাই এ চেতনাকে উজ্জীবিত রাখতে হবে। আজকের যে বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা নাট্যোৎসব, এ যে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানানো, তা আমাদের সংস্কৃতিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং তরুণরা এ থেকে প্রত্যয় খুঁজে পাবে বলেই আমি বিশ্বাস করি।

সভাপতির বক্তব্যে উৎসব উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন বলেন, আমাদের বুকের মধ্যে যে জয় বাংলা স্লোগান, আমাদের যে জাতীয় পতাকা, এ যে মুখের ভাষা, সব আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান। তাদের নিয়ে আমরা এমন একটি আয়োজন করতে পেরে আনন্দিত। কয়েক বছর পর এ মুক্তিযোদ্ধারা হয়তো থাকবেন না, কিন্তু তারা অতীতে যেভাবে যুদ্ধ করে আমাদের এগিয়ে নিয়ে গেছেন, এখনো ঠিক তেমনি তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে আমাদের এগিয়ে নিচ্ছেন। তাদের এ ভালোবাসা ও ত্যাগকে স্মরণে রেখে তরুণদের নিয়ে সব বাধা পেরিয়ে আমরা সাংস্কৃতিক শক্তিতে এগিয়ে যাব, এটিই আশা করি এ আয়োজন থেকে।

আলোচনা পর্ব শেষে ঢাক-ঢোল, বাদ্যের সঙ্গে প্রদীপ জ্বালিয়ে এবং শিশু বন্ধুদের বেলুন ওড়ানোর মধ্য দিয়ে নাট্য উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার পরিক্ষণ থিয়েটার হলে মহাকাল নিবেদিত নাটক ‘ঘুমনেই’ মঞ্চায়ন করা হয়। নাসির উদ্দীন ইউসুফ রচিত এ নাটকটি নির্দেশনা করেছেন জন মার্টিন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০২১
এইচএমএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।