ঢাকা: ছয় কারণে দেশে ডলারের বাজার অস্থির হয়ে পড়েছে বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ বাজারের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) ডলার দাম নিয়ে দেওয়া ব্যাখ্যায় এসব তথ্য জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্রের দপ্তর থেকে বলা হয়েছে, ডিসেম্বর বছর সমাপনী মাস। এ কারণে নানা ধরনের ঋণ পরিশোধের ভ্যালু ডেট এ মাসে পড়ে যায়। ফলে পেমেন্ট শিডিউলে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে ডলারের চাহিদা বাড়ে। তাই ডলারের দাম বেড়ে যায়।
ডলারের বাজার অস্থির হওয়ার অন্যতম কারণ সরকারের এ মুদ্রা বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) টার্গেট পূরণ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি ডলার বিক্রি বন্ধ রেখেছে। ফলে আন্তঃব্যাংক বাজারে ডলারের যোগান বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে পারছে না।
বাংলাদেশের রেটিং অবনমনেও ডলারের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। ফলে বেড়ে গেছে ডলারের দাম।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগ বলছে, রেটিং অবনমনে ফরেন ব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যাংকসমূহের করেসপন্ডেন্ট রিলেশনশিপ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। ফলে ইউ-পাস এলসি খোলা বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে, পেমেন্টের ম্যাচুরিটি ডেফার্ড করা সম্ভব হয়নি এবং অফশোর ব্যাংকিং ঋণের আন্তঃপ্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে।
ডলারের বাজার অস্থিরতার চতুর্থ কারণে হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, বৈদেশিক দেনা পরিশোধে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার। এতে ডলারের চাহিদা বেড়েছে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলছে, ডিসেম্বর মাসের মধ্যে বৈদেশিক দেনা পরিশোধ সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার বাজারে চাপ বাড়িয়েছে। এছাড়া রেমিট্যান্স আহরণে অ্যাগ্রিগেটরদের একচেটিয়া ও মধ্যস্বত্বভোগী ভূমিকা বাজারে বিনিময় হারকে অস্থিতিশীল করা ও বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহের ডলার ইনফ্লো-আউটফ্লোয় অসঙ্গতির কারণে এ বাজারে অস্থিতিশীলতা পরিলক্ষিত হয়েছে।
ডলারের দাম স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক উদ্যোগও নিয়েছে। তার অন্যতম হলো ইতোমধ্যে রেমিট্যান্স আহরণের বিনিময় হার সর্বোচ্চ ১২৩ টাকা প্রতি ডলার (ক্রস কারেন্সি হলে তা ক্রস ক্যালকুলেশন করে ১২৩.০০ প্রতি ডলারের ঊর্ধ্বে হবে না) নির্ধারণ করেছে। পাশাপাশি ড্যাশবোর্ড/ডাটা মনিটরিং ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ফলে নতুন বছরের নতুন মাসের শুরুতে ডলার বাজার স্থিতিশীল হয়ে আসবে বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২৪
জেডএ/এমজে