ঢাকা: ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের (আইইউবি) ২৩তম সমাবর্তন অনুষ্ঠান রোববার (১৯ মার্চ) রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত আইইউবি ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের প্রতিনিধি হিসেবে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব এবং সনদ বিতরণ করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী চাকরির পেছনে ছোটে। শুধুমাত্র চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন ও আদর্শ সমাজ গঠনে আপনাদের এগিয়ে আসতে হবে। উদ্যোক্তা তৈরির পরিবেশ সৃষ্টিতে অভিভাবকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অবকাঠামোর প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু, এর পাশাপাশি দক্ষ মানবসম্পদ না থাকলে সেই অবকাঠামোর দশা হয় অনেকটা কঙ্কালের মতো, যার নিজের কিছু করার ক্ষমতা নেই। তাই আমি তোমাদের আহ্বান জানাবো, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য তোমরা তোমাদের অর্জিত জ্ঞান ও শিক্ষা উৎপাদনশীল কাজে ব্যবহার করবে।
আইইউবি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই সরকার বলেন, আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করি, তার কদিন পরেই শুরু হয়েছিল আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ। টালমাটাল সেই সময়ে আমাদের সমাবর্তন পাওয়া হয়ে ওঠেনি। তবে তোমরা আমাদের তুলনায় অনেক ভাগ্যবান কারণ তোমরা যথাসময়ে সমাবর্তনের মাধ্যমে স্নাতক হিসেবে সম্মান পাচ্ছো। আর এটা সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র তোমরা একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক বলে। যেই স্বাধীনতার জন্য ১৯৭১-এ লাখো মানুষ আত্মত্যাগ করেছেন। জীবনে চলার পথে তাদের অবদান ভুলে গেলে চলবে না।
এডুকেশন সায়েন্স টেকনোলজি অ্যান্ড কালচারাল ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্ট-এর ভাইস চেয়ারম্যান মিসেস সালমা করিম বলেন, আইইউবির গ্র্যাজুয়েটরা দেশ-বিদেশে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে কর্মরত রয়েছেন। আমি আশা করবো যে ২৩তম সমাবর্তনের গ্র্যাজুয়েটরাও তাদের মতোই সফল হবেন। দেশ ও আইইউবির নাম উজ্জ্বল করবেন।
আইইউবির উপাচার্য তানভীর হাসান বলেন, আইইউবিতে বেশ কয়েক বছর ধরেই নারী শিক্ষার্থীরা পুরুষ শিক্ষার্থীদের তুলনায় ভালো ফলাফল করছেন। এবারের সমাবর্তনে চ্যান্সেলর্স গোল্ড মেডেল পাওয়া তিন শিক্ষার্থীই নারী। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস যে সাম্প্রতিক সময়ে আমরা আইইউবিকে নারীবান্ধব ক্যাম্পাস হিসেবে গড়ে তোলার জন্য যেসব উদ্যোগ নিয়েছি, আমাদের নারী শিক্ষার্থীদের সাফল্য তারই ফল।
অনুষ্ঠানের শেষে উপস্থিত সবার প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আইইউবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান।
এবারের সমাবর্তনে সর্বমোট ১ হাজার ৪৫৯ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন যাদের মধ্যে ১ হাজার ১৪০ জন স্নাতক ও ৩১৯ জন স্নাতকোত্তর পর্যায়ের। ভ্যালেডিক্টোরিয়ান মনোনীত হন চ্যান্সেলর্স গোল্ড মেডেল পাওয়া সোশিওলজি বিভাগের শিক্ষার্থী এ্যান্ড্রিয়ানা বাশার। এছাড়াও বিবিএ’র দুই শিক্ষার্থী অপসরা আহসান এবং সানজিদা আফরিনও চ্যান্সেলর্স গোল্ড মেডেল পান। অলরাউন্ডার অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন গ্লোবাল স্টাডিজ অ্যান্ড গভর্নেন্স বিভাগের শিক্ষার্থী সোবাইতা ফাইরোজ। স্নাতকোত্তার পর্যায়ে অসাধারণ ফলাফলের জন্য টপ অ্যাচিভার্স অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অভিজিত সাহা এবং এনভাইরনমেন্ট ম্যানেজমেন্টের আলাভী কিফায়াত রেজা।
অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতির পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমের সফল শিক্ষার্থীদেরও সম্মাননা দেওয়া হয়। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডর জন্য সম্মাননা পেয়েছেন বিবিএ’র শিক্ষার্থী তাওহীদুর রহমান অনন্য এবং বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড বায়োটেকনোলজির শিক্ষার্থী সাদিয়া রওশন। খেলাধুলায় ভালো করার স্বীকৃতি অর্জন করেন বিবিএ’র স্যামুয়েল রিকার্ডো রোজারিও এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মো. মাহিম রহমান প্রান্ত। সমাজসেবামূলক কাজে অংশগ্রহণের জন্য সম্মাননা পান বিবিএ’র মো. আনাতুল আরাফ হক রিসাদ।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আইইউবির সম্মানিত ট্রাস্টিরা, অভিভাবকরা এবং আইইউবির শিক্ষক ও কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২৩
আরআইএস