ঢাকা: দেশি-বিদেশি শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পেয়েছে ওয়ালটন আয়োজিত দেশের প্রথম একক শিল্পমেলা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভান্সড কম্পোনেন্টস অ্যান্ড টেকনোলজি (এটিএস) এক্সপো-২০২৩। এক্সপোতে স্থানীয় ও বহুজাতিক বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা মূল্যের ক্রয়াদেশ পেয়েছে ওয়ালটন।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) সকালে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ওয়ালটন কর্পোরেট অফিসে আয়োজিত 'এটিএস এক্সপো- ২০২৩ এর সার্বিক সাফল্য' শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও গোলাম মুর্শেদ।
সংবাদ সম্মেলনে গোলাম মুর্শেদ বলেন, বাংলাদেশে ওয়ালটনই প্রথম একক কোম্পানি হিসেবে ৫০ হাজারেরও বেশি অ্যাডভান্স টেকনোলজি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাটেরিয়ালস, কম্পোনেন্টস ও সলিউশনস পণ্য প্রদর্শনী করেছে। এটিএস এক্সপোতে প্রত্যাশার চেয়েও অনেক বেশি সাড়া পেয়েছি আমরা। দেশি-বিদেশি বেশিরভাগ শিল্প প্রতিষ্ঠানের পূর্ণ ব্যক্তিরাসহ বাণিজ্যমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী, বাণিজ্য সচিব, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, সরকারি-বেসরকারি সংস্থার উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও দেশের তরুণ উদ্যোক্তারা ওয়ালটনের এই শিল্পমেলা পরিদর্শন করেছেন। এই উদ্যোগ সর্বমহলে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। তাদের ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখে আমরা খুবই আনন্দিত।
তিনি বলেন, এসি অ্যাপোকে ভারতে অ্যাবাল ক্যাড হুন্দাইয়ের একটি লাইসেন্সড প্রতিষ্ঠান এবং পশ্চিম বাংলার খ্যাতনামা একটি ইলেকট্রনিক পণ্য বিপণন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রায় ১৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের রেফ্রিজারেটর ও কম্পোনেন্টসের অর্ডার পেয়েছি। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১৪২ কোটি টাকা। এছাড়াও এক্সপোতে প্রায় ৫০ কোটি টাকার হোম অ্যাপ্লায়েন্স ও কম্পোনেন্টস, পাঁচ কোটি ৫০ লাখ টাকার পিসিবি, পিসিবিএ বা মাদারবোর্ড, মোবাইল, ল্যাপটপ ও এক্সেসরিজ: পাঁচ কোটি টাকার লিফট ও এক্সেসরিস, ছয় কোটি টাকা মূল্যের ফ্যান, এই সুইচ-সকেট, ডিবি বক্স ইত্যাদি: সাত কোটি টাকার শিপিং ও লজিস্টিকস সার্ভিসেস: দুই কোটি টাকা মূল্যের কেমিক্যাল কম্পোনেন্টস: দুই কোটি ২৬ লাখ টাকা মূল্যের ভিআরএফ ও এয়ার এডিশনার এক কোটি ১০ নাম টাকার কম্প্রেসার এ মেটাল কাস্টিং এর অর্ডার পেয়েছে ওয়ালটন। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ব্যবসায়িক চুক্তির আলোচনাও হয়েছে। আগামীতে আরও বিশাল ক্রয়াদেশ মিলবে বলে আশা করছি।
ওয়ালটনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও বলেন, এটিএম এক্সপোতে আগত ক্রেতা-দর্শনার্থীদের থেকে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি এবং ওয়ালটন ব্র্যান্ড ও পণ্যের ওপর তাদের যে আস্থা দেখেছি তা আগামীতে এই ধরনের শিল্পমেলা আয়োজনে আমাদেরকে আরও বেশি অনুপ্রাণিত করেছে। আমরা প্রতিবছর এই ধরনের ক্ষুদে আয়োজন করব, যেন দেশিয় শিল্পোদ্যোক্তাদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল কম্পোনেন্টস, ম্যাটেরিয়ালস এবং টেস্টিং সলিউশনসের জন্য আর বিদেশে যেতে না হয়। পাশাপাশি বৈশ্বিক বাজারে দেশিয় প্রযুক্তি সম্প্রসারণে উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতেও এই ধরণের শিল্পমেলা আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে ওয়ালটনের।
গোলাম মুর্শেদ বলেন, এটিএস এক্সপো আয়োজনের মূল লক্ষ্যই ছিল দেশিয় শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহকে আমদানি বিকল্প গুণগতমানের কম্পোনেন্টস, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাটেরিয়ালস ও টেস্টিং সলিউশনস দেওয়ার মাধ্যমে দেশের আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশিয় শিল্পের ক্ষমতায়ন বাড়ানো। সেই বিবেচনায় বলা চলে ওয়ালটনের এই আন্তর্জাতিক শিল্পমেলা সফল হয়েছে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের চিফ মার্কেটিং অফিসার দিদারুল আলম খান, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মোহাম্মদ শাহজাদা সেলিম এবং সিনিয়র ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর রবিউল ইসলাম মিলটন।
উল্লেখ্য, এটিএস এক্সপোতে চারটি ক্যাটাগরিতে মোট ২১টি স্টলে ওয়ালটনের তৈরি আন্তর্জাতিক মানের ৫০ হাজারেরও বেশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাটেরিয়ালস, কম্পোনেন্টস, সার্ভিসেস এবং টেস্টিং ফ্যাসিলিটিস প্রদর্শন করা হয়েছে। এগুলোর অধিকাংশেই প্রায় সব প্রকার শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ধাপে প্রধান কাঁচামাল কম্পোনেন্ট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। নিজস্ব চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি দেশের অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহকে আমদানি বিকল্প গুনগতমানের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাটেরিয়ালস, কম্পোনেন্টস ও টেস্টিং সলিউশনের আমদানি নির্ভরতা কমানোর মাধ্যমে বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় ও দেশিয় শিল্পের ক্ষমতায়নে অবদান রাখবে ওয়ালটন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২৩
এইচএমএস/এসআইএ