ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কর্পোরেট কর্নার

লাখো প্রতিবন্ধকতা পার করে আলো ফোটাচ্ছে নগদ

বিজনেস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০২৩
লাখো প্রতিবন্ধকতা পার করে আলো ফোটাচ্ছে নগদ

ঢাকা: বাউল নিরঞ্জন অধিকারীর চোখের আলো নেই সেই ছোটবেলা থেকেই। অভাবের ঘরে নিত্য অবহেলাই তার সঙ্গী ছিল।

আগে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গেয়ে কিছু আয় হতো, এখন তাও কমে গেছে। এ অবস্থায় এসে তার একমাত্র সম্বল এখন বাংলাদেশ সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা। আর সেটা তার হাতে পৌঁছে দিচ্ছে মোবাইল আর্থিক সেবা নগদ।  

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য মতে, দেশব্যাপী প্রতিবন্ধীর সংখ্যা প্রায় ৪৮ লাখ। শহরের চেয়ে গ্রামে যে সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি। এদের মধ্যে ৫৯ শতাংশ প্রতিবন্ধীই প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত যেতে পারে না। এরচেয়েও শোচনীয় উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে, ৭৫ শতাংশই উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোতে পারে না। যার কারণে মোট জনসংখ্যার একটি বড় অংশ সমাজে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর কাতারে।

দেশের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় এসব পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোর অধিকার নিশ্চিতে সরকারের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে নগদ। সমাজসেবা অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশের মোট ২৯ লাখ প্রতিবন্ধীদের দেওয়া হচ্ছে ভাতা। মাসিক ৮৫০ টাকা করে এ খাতে সরকারের বরাদ্দ ২ হাজার ৯৭৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা।

ডিজিটাল বাংলাদেশের এ ২৯ লাখ প্রতিবন্ধীর সিংহভাগই ভাতার টাকা পান নগদের মাধ্যমে। যার ফলে কোনোরূপ ভোগান্তি ছাড়াই ভাতার টাকা পৌঁছে যাচ্ছে তাদের কাছে। এ ছাড়া ব্যাংকে গিয়ে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার মতো প্রতিবন্ধকতাও দূর হয়েছে সহজেই।

নিরঞ্জন বাউল বলছিলেন, ‘এ ভাতার টাকাটা ছাড়া আমার চলার মতো আর তেমন উপায় নাই। আগে এ টাকা পাইতে অনেক কষ্ট করতে হতো। ব্যাংকে গিয়ে সারা দিন লাইন ধরা লাগতো। একবার ব্যাংকে লাইন ধরে থাকতে থাকতে অসুস্থ হয়ে গেছিলাম। এখন আর সেই কষ্ট নাই। নগদে টাকা চলে আসে মোবাইলে। চাইলেই বাড়ির পাশে থেকে টাকা তোলা যায়। ’

এরকমই আরেকটি গল্প মানিকগঞ্জের সুবল বণিকদের। সুবল বণিকরা তিন ভাই। তবে তিন ভাইয়ের কেউই স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেননি। প্রত্যেকেই কোনো না কোনো অঙ্গ ছাড়া এসেছেন পৃথিবীতে। এ প্রতিবন্ধকতা তাদের জীবনকে করে দিয়েছে পাথরসম কঠিন। তবে অভাবের সংসারে এখন একটু সহায় হয়ে এসে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে নগদ।  

কেবল এ তিন ভাই নয়, দেশের এমন কোটি অসহায় মানুষের সহায় হয়ে উঠেছে নগদ। সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বয়স্ক ভাতা, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা এবং প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তিসহ সরকারি বিভিন্ন আর্থিক সহায়তা ‘নগদ’ সরাসরি উপকারভোগীদের হাতে পৌঁছে দিচ্ছে। বিশেষ করে প্রতিবন্ধী ভাতা বদলে দিয়েছে এ অসহায় মানুষগুলোর জীবন।  

সুবল বলছিলেন, ‘নগদে টাকা দেওয়ায় খুব উপকার হইছে। আগে তো টাকা তুলতে হয়রানি ছিল। এখন আর তা নেই। ভাতার টাকা পাইতে কষ্ট করতে হয় না। ’

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় নগদের মাধ্যমে ভাতা সুবিধা পাওয়া এসব অসহায় মানুষদের সরকারি সহায়তা নিশ্চিত করতে নিরন্তর কাজ করেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা। ভাতাভোগীরা তাদের টাকা সময় মতো পাচ্ছেন কি না অথবা কীভাবে খরচ করছেন সেসব খোঁজখবর নিয়মিত রাখেন ইউনিয়ন পর্যায়ের সমাজসেবা কর্মীরা।

মো. সুজন মিয়া নামে এক মাঠকর্মী বলেন, এ ভাতার টাকা প্রতিবন্ধী মানুষগুলোকে সমাজে গ্রহণযোগ্য করেছে। এ মানুষগুলো এখন আর কারো জন্য বোঝা নয় বরং তাদের নিজস্ব আয় আছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০২৩
আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

কর্পোরেট কর্নার এর সর্বশেষ