ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

‘সুপারম্যান এলিয়টের’ মুখোমুখি

মাহমুদুল হাসান বাপ্পি, সিলেট থেকে | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০২৩
‘সুপারম্যান এলিয়টের’ মুখোমুখি

‘সুপারম্যান এলিয়ট’ বলে তখনও ইডেন পার্কের ধারাভাষ্যকক্ষ থেকে চিৎকার করে যাচ্ছিলেন ইয়ান স্মিথ। চল্লিশ হাজার মানুষের আনন্দে গ্র্যান্ট এলিয়টের ছিল ‘কাজ শেষ করার’ তৃপ্তি।

আট বছর পরও তার সঙ্গে কারো দেখা কথা হলে সেটিই থাকে প্রথম প্রসঙ্গ।

বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড টেস্টে ধারাভাষ্য দিতে আসা এলিয়টকে সাক্ষাৎকারের প্রস্তাব দিতে গিয়েও তার তেমন একজন ভক্তকে দেখা হয় সামনে। ২০১৫ সালের সেমিফাইনালের কথা বলে তিনি তোলেন সেলফি। পরে বাংলানিউজকে দেওয়া দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে এলিয়ট ওই ফাইনালসহ কথা বলেছেন নানা প্রসঙ্গে।

বাংলানিউজ: টেস্ট ম্যাচের জন্য কি এই প্রথম বাংলাদেশে এলেন নাকি আগেও এসেছেন?

এলিয়ট: আগে একবার এসেছিলাম। চট্টগ্রামে একটা টেস্ট হয়েছিল, ওটাতে আমি খেলিনি। পরে ঢাকার ম্যাচে দলে ছিলাম। কিন্তু ওটা বৃষ্টিতে ভেসে গিয়েছিল ২০০৮-০৯ এর দিকে। এরপর ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলতে এসেছিলাম, দুই সিরিজেই হেরে গিয়েছিলাম। বাংলাদেশ ওই সিরিজে অসাধারণ ছিল। এরপর বিপিএল খেলতেও এসেছি।

বাংলানিউজ: বিপিএলে চট্টগ্রামের হয়ে তো অনেক খেলেছেন...

এলিয়ট: হুম। ওই দলে ক্রিস গেইল ছিল। অল্পের জন্য প্লে অফ খেলতে পারিনি। তবুও সেটা ছিল দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা।

বাংলানিউজ: অবসরের পর নিউজিল্যান্ডে অনেক ধারাভাষ্য দিয়েছেন, এখন বাংলাদেশ এলেন। অভিজ্ঞতা কেমন?

এলিয়ট: ক্রিকেটার হিসেবে অনেক ভ্রমণ করেছি। এটা রক্তের সঙ্গে মিশে গেছে। আমি কোচিং বা অন্য কিছু করার চেয়ে ক্রিকেটের কাছে থাকার ও উপভোগ করার জন্য ধারাভাষ্যটাকেই ভালো মনে করেছি। খেলা দেখার জন্য সবচেয়ে ভালো সিটটা আমাদেরই, সেরা ক্যামেরা অ্যাঙ্গেলও থাকে।

কমেন্ট্রির সঙ্গে টেকনোলজি ব্যাপারটাও আমার খুব পছন্দের। হক আই বা তাদের যা টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়, খেলা দেখার আনন্দটা আরও বেড়ে যায় এসবে। ২০০৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফাইনাল ম্যাচের টিকিট ছিল আমার।

কিন্তু আমি ওটা আমার মাকে দিয়ে বলেছিলাম, ‘তুমি যাও, আমি টিভিতেই খেলা দেখতে চাই!’ যদি ভারত জেতে, আর শচীন সেঞ্চুরি করে; আমি ওটা টিভিতেই দেখতে চাই। ব্রডকাস্ট ব্যাপারটা সবসময়ই উপভোগ করি। খেলার সময় থাকতেও করেছি; যখন ইনজুরড ছিলাম তখন।

বাংলানিউজ: আপনার ধারাভাষ্য দেওয়ার শুরুর দিকে বাংলাদেশ একটা অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটিয়ে দিলো। মাউন্ট মঙ্গানুইতে নিউজিল্যান্ডকে হারালো। আপনি তো ওখানেও ছিলেন...

এলিয়ট: খেলা শুরুর আগেই আমি বলেছিলাম যে এই কন্ডিশন নিউজিল্যান্ডের চেয়ে বাংলাদেশকে বেশি সাহায্য করবে। কারণ সাধারণত আমাদের ওখানে খুব সবুজ উইকেট আর ঘাস থাকে। কিন্তু ওটা ছিল শুষ্ক, বল রিভার্স সুইং করছিল। এরপর একসময় আর্মিতে ভলিবল খেলা এবাদত হোসেন এসে দুর্দান্ত বল করলো।

ওটা দারুণ একটা টেস্ট ম্যাচ ছিল বাংলাদেশের দিক থেকে। আপনি সবসময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখতে চাইবেন। আমার মনে হয় বাংলাদেশ সবসময় বিশেষত নিউজিল্যান্ডে গড়পড়তা। কারণ বাউন্সি উইকেট, বোল্ট ও সাউদিকে ঘাসের উইকেট খেলতে হয়। এখানকার একদম বিপরীত কন্ডিশন।

বাংলাদেশকে ম্যাচটা জিততে দেখা দারুণ ছিল। অবশ্যই আমি কখনো চাই না নিউজিল্যান্ড হারুক। কিন্তু এটা বাংলাদেশের জন্য বড় একটা জয়। ওরা অনেকদিন ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আছে। আপনি তাদের আরও বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেখতে চাইবেন।

বাংলানিউজ: প্রতি বছরই দেখা যায় বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলছে। আপনার কি মনে হয় ধীরে ধীরে এটা বাংলাদেশকে উন্নতি করতে সাহায্য করবে?

এলিয়ট: ক্রিকেটার হিসেবে আপনি সবসময় পুরো পৃথিবী ঘুরে খেলতে চাইবেন। দেশের বাইরে কেমন খেলেন, হয়তো এটাই ঠিক করে দেয় আপনার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার কত লম্বা হবে। আমি যখন উপমহাদেশে এসেছি, আমার জন্য এটা ছিল একদমই ভিন্ন অভিজ্ঞতা। এখানে স্পিন ছিল অনেক বেশি।

কিন্তু যত আপনি ভুগবেন, তত ভালো করতে পারবেন; আলাদা কন্ডিশনে মানিয়ে নেওয়ার উপায় খুঁজে পাবেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা নিউজিল্যান্ডে গেলে বাউন্স, পেসের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়। তারা যতবার যায়, মুশফিক-লিটন, সাকিব-তামিমের মতো ক্রিকেটাররা আরও বেশি অভিজ্ঞতা ও এক্সপোজার পায়।

এরপর এটা তরুণদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারে। তারা কীভাবে অনুশীলন করে এসব বলতে পারে। কারণ ওরকম দেশে যাওয়ার আগে আপনাকে আগে থেকেই জানতে হবে ওখানকার অভিজ্ঞতা কেমন। নিউজিল্যান্ডে গিয়ে কেমন বাউন্স, সুইং বা পেস আপনি পাবেন এখানকার তুলনায়; এটা কেউই বলে বোঝাতে পারবে না যদি সে না খেলে।

বাংলানিউজ:  আপনি কি এমনিতে বাংলাদেশের দেশের বাইরের পারফরম্যান্সে কোনো উন্নতি দেখেন?

এলিয়ট: যখন দ্রুত ক্রিকেটার বদলাবেন, তখন উন্নতি দেখা কঠিন। আপনি নিউজিল্যান্ডের দিকে তাকান, তারা খুব ধারাবাহিক দল। (চন্ডিকা) হাথুরুসিংহেকে এখন পুরো ভিন্ন ক্রিকেটার নিয়ে খেলতে হচ্ছে সিনিয়ররা না থাকায়।

বাংলানিউজ: আপনি নিউজিল্যান্ডের ধারাবাহিকতার কথা বললেন। ওদেরও খেলোয়াড়ের পুলটা খুব ছোট এবং তাদের দুনিয়ার অন্যতম সেরা সিস্টেম আছে। ওই তরুণ ক্রিকেটাররা আস্তে আস্তে উন্নতি করে বড় নাম হয়। রাচিন (রবীন্দ্র) যেমন উদাহরণ হতে পারে...

এলিয়ট: একদম তাই। তারা ক্রিকেটারদেরকে অনেক সুযোগ দেয়। আপনি যখন একবার নিউজিল্যান্ড জাতীয় দলে সুযোগ পাবেন, তারা আপনাকে ব্যাক করবে। এক-দুই ম্যাচ সুযোগ দিয়ে সরে যাবে না। টুর্নামেন্টগুলো ওখানে খুব ভালো স্ট্রাকচারড। ক্রিকেটারদের জন্য পথটা পরিস্কার করা।

ছয়টা স্টেট দলের সঙ্গে কয়েকটা সহযোগী দল আছে। হয়তো একশ জন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটার আছে। ওই পুল থেকে ক্রিকেটারদের দ্রুত আইডেন্টিফাই করা হয়। তাদের সুযোগ দেওয়া হয়। রাচিন রবীন্দ্র দলের সঙ্গে দুই বছর ধরে ঘুরেছে। এমন না যে এসেই পারফর্ম করে ফেলেছে।

তাকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে জাতীয় দলের সঙ্গে অভ্যস্ত হওয়ার। কারণ এই জায়গাটা কঠিন। শুধু ক্রিকেট না, এখানে ভ্রমণের ব্যাপার আছে, স্ট্রেন্থ এন্ড কন্ডিশনিং, মানসিক শক্তি দরকার হয়। যখন আপনি একবার জাতীয় দলে আসবেন, এসবে অভ্যস্ত হয়ে আস্তে আস্তেই ভালো করবেন।

বাংলানিউজ: এখন আসল কথাটাতে আসি। কেউ যখন আপনার সঙ্গে কথা বলবে ২০১৫ বিশ্বকাপের ওই সেমিফাইনালটা তো নিশ্চিতভাবেই চলে আসে। ওই অভিজ্ঞতাটা একটু বলুন...

এলিয়ট: এক কথায় বললে, অসাধারণ। অনেকদিন হয়ে গেলো এখন। কিন্তু ২০১৫ সালের ওই দলটা ছিল আমি খেলেছি এমন দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো পারফর্ম করা। আমরা খুব কাছাকাছি গিয়েছি বিশ্বকাপ জেতার। ব্রেন্ডন ম্যাককালাম অধিনায়ক ছিল, দারুণভাবে দলের নেতৃত্ব দিচ্ছিল।

আমরা ভাগ্যবান ছিলাম বিশ্বকাপটা হয়েছে নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ায়। মানুষ আমাদের পাশে ছিল, লোকজন রোমাঞ্চিত ছিল ক্রিকেট নিয়ে। তারা ক্রিকেটটা উপভোগ করছিল, আমরাও খুব ভালো করছিলাম। অস্ট্রেলিয়াকে ইডেন পার্কে হারিয়েছি, এরপর প্রথমবার ফাইনালে উঠেছি।

দুর্ভাগ্যবশত ফাইনালটা নিউজিল্যান্ডে হয়নি, অস্ট্রেলিয়ায় খেলতে হয়েছে। হয়তো যদি আমরা ওখানে আরেকটু মানিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেতাম...। কিন্তু আমরা সম্ভবত ১৫০ রানে ৩ উইকেট ছিলাম ৩৫ ওভার শেষে। ভালো অবস্থায় ছিলাম একটা ভালো রান করার।

আমার জীবনের অন্যতম আফসোস ওই ফাইনালটা। আমি স্টার্কের যে বলটাতে আউট হয়েছি, আমার খেলা সবচেয়ে ভালো বল। এরপর ৫-৭ ওভারের মধ্যে আমরা পথ হারিয়েছি। কিন্তু ওই দলটা নিয়ে আমি গর্বিত, যা কিছু অর্জন করেছি তা নিয়েও।

বাংলানিউজ: সেমিফাইনালে আপনার ওই ইনিংসটা পরে নিশ্চয়ই অনেকবার দেখেছেন...

এলিয়ট: খুব বেশি দেখিনি। মজার ব্যাপার হচ্ছে কোভিডের সময় কোনো খেলা ছিল না। তখন আমাকে একজন ফোন করে বললো, ‘২০১৫ সালের ম্যাচটা আবার দেখাচ্ছে। তোমার দেখা উচিত। ’ আমি ওটা আমার ছোট ছেলের সঙ্গে বসে দেখেছিলাম।

ও এর আগে কখনো দেখেনি ম্যাচটা। আমার ছেলে খুব নার্ভাস হয়ে দেখছিল। সে জানতো না কী হবে সামনে। ও যেমন উত্তেজনার মধ্যে ছিল, দেখাটা খুব উপভোগ্য ছিল। দর্শকরা লাইভ দেখে কেমন অনুভব করেছে, বুঝতে পেরেছি।

বাংলানিউজ: এখনও কি একই রকম অনুভূতি হয় আপনার? যখন ম্যাচটা নিয়ে ভাবেন বা দেখেন...

এলিয়ট: পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে আমি কেবল আমার কাজটা করেছি। যখন খেলাটা শেষ করেছি, অবশ্যই দারুণ মুহূর্ত ছিল। কিন্তু তখন কেবল মনে হচ্ছিল আমি আমার কাজটা ঠিকঠাক করতে পেরেছি।

বাংলানিউজ: আপনার তো আসলে বিশ্বকাপে থাকারই কথা ছিল না...

এলিয়ট: হ্যাঁ, আমাকে বলা হয়েছিল বিশ্বকাপে জায়গা হবে না। হঠাৎ করে খুব ভালো একটা ঘরোয়া মৌসুম কাটে। এরপর আমাকে নেওয়া হয়। আমি খুব ভাগ্যবান ছিলাম। কারণ বিশ্বকাপ খেলা আমার স্বপ্ন ছিল। ‘৯৫ বিশ্বকাপের সময় স্কুল থেকে বহিষ্কারও হয়েছিলাম ম্যাচ দেখতে গিয়ে।

আমার স্বপ্ন ছিল বিশ্বকাপ খেলা। আমি এটা অর্জন করতে পেরেছি। সবসময় অবশ্য ভেবেছি দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে খেলার কথা। কিন্তু পরে নিউজিল্যান্ডকে প্রতিনিধিত্ব করি, সেটাও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে! যাই হোক, ওটা ছিল স্পেশাল একটা মুহূর্ত।

বাংলানিউজ: ড্রেসিংরুম থেকে যখন মাঠে যাচ্ছিলেন, তখন আপনার মাথায় কী কাজ করছিল?

এলিয়ট: এরকম ম্যাচ আসলে ভালো করার জন্য সবচেয়ে ভালো উপলক্ষ। আপনি ক্রিকেটার হিসেবে এমন মঞ্চ  খুব বেশি পাবেন না। সেমিফাইনাল, তাও নিউজিল্যান্ডে, ৪০ হাজার মানুষের সামনে; যদি তখনও শরীরে শিহরণ না জাগে, আপনি দুনিয়ার কোনো কিছুতেই রোমাঞ্চিত হবেন না।

এটাকে একটা দারুণ সুযোগ হিসেবে দেখেছি নিজের সবকিছু দেওয়ার জন্য। ওই দিন আমি সৌভাগ্যবান ছিলাম, অন্যদিন হয়তো থাকতাম না। কারণ ক্রিকেট হচ্ছে ব্যর্থদের খেলা! আপনি ব্যাটারদের দেখুন, ৬০ শতাংশের বেশি সময় তারা আউট হয়ে যায়। এতবার ব্যর্থ হলে আপনাকে প্রাণবন্ত হতে হবে। বিশেষত যখন আপনার মুখে হাই রেজ্যুলেশন ক্যামেরা ধরে রাখা, তখন তো অবশ্যই। আমি সেটাই হতে চেয়েছি।

বাংলানিউজ: এরপর আপনি মুখোমুখি হলেন ডেল স্টেইনের। দুনিয়ার সেরা বোলারদের একজন তখন। ওই বলটার আগে কী ভাবছিলেন?

এলিয়ট: অনেক চাপ তো অবশ্যই ছিল। মাথায় সেসব ঘুরপাকও খাচ্ছিল। আমি আসলে আউটকাম কী হবে তা নিয়ে খুব বেশি ভাবনায় ছিলাম না। একটা ব্যাপার ভাবছিলাম- আমার বোনের বিয়েতে থাকা হবে না! কারণ ওটা ছিল একদম বিশ্বকাপের ফাইনালের দিন।

ও অবশ্য আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল ওই দিনই তারিখটা ঠিক করবে। ওকে তখন বলেছি, ‘আমাকে তো বলেছে কেউ ইনজুরিতে না পড়লে বিশ্বকাপ খেলার সম্ভাবনা নেই। আর নিউজিল্যান্ডও কখনো বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলেনি। অথচ...।

আমি খুব ভাগ্যবান ছিলাম যে বলটা ঠিক জায়গায় গিয়ে পড়েছে। ইডেন পার্কে ইয়র্কার হচ্ছে করার জন্য ঠিক বল। কিন্তু আমি পেলাম ব্যাক অব দ্য লেন্থ। আর দিনটা তো আমার ছিলই!

বাংলানিউজ: ওই ছক্কাটা মারার পর গ্যালারিতে যখন তাকালেন, অনুভূতিটুকু কেমন ছিল?

এলিয়ট: সবচেয়ে সন্তুষ্টির ব্যাপার ছিল দল হিসেবে। কারণ আমরা খুব বন্ধুত্বপূর্ণ ছিলাম সবাই। শুধু আমিই ছিলাম না ওই ম্যাচে, ব্রেন্ডন ম্যাককালাম দুর্দান্ত একটা ইনিংস খেলেছে, কোরি অ্যান্ডারসন ভালো খেলেছে; সবাই পুরো টুর্নামেন্টে অবদান রেখেছে। আমরা দল হিসেবে একজন-আরেকজনের ওপর ভরসা করেছি সবসময়।

জয়ের চেয়েও বড় আনন্দটা ছিল যখন আমি হাতটা বাতাসে ছুড়লাম বলটা ব্যাটে লাগাতে। তখনকার উচ্ছ্বাসটা ছিল অন্যরকম। অনেক চাপ ছিল, আর নিশ্চয়ই চাইছিলাম না কাউকে হতাশ করতে। পরে যখন আমার সতীর্থ, গ্যালারির মানুষদের আনন্দ দেখেছি; ওটা ছিল স্পেশাল একটা মুহূর্ত।

বাংলানিউজ: আপনি তো একটা ফাইনালে খেলেছেন। পরে ২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ড খুব কাছে গিয়েও পারেনি। কোনটা বেশি হৃদয় ভেঙেছে?

এলিয়ট: দুটোই। কিন্তু ২০১৯ সালে আমাদের একটা হাত ছিল ট্রফিতে। ওটা নিউজিল্যান্ডের সমর্থকদের জন্য একটু বেশি হৃদয়বিদারক ছিল।

বাংলানিউজ: আপনার কী মনে হয় নিউজিল্যান্ড শুধুই ভাগ্যের কারণে বিশ্বকাপ জিততে পারছে না?

এলিয়ট: বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ড ফেভারিট হিসেবে যায় না। আমাদের সবসময় লড়াই করে জায়গাটা করে নিতে হয়। ২০১৫ সালে হয়তো আমরা ওখানে ছিলাম, সেরা দুই দলের একটা। কিন্তু যদি বলেন ‘ডিজার্ভ করি কি না’ তাহলে বলবো, না। কারণ ফাইনালের দিনটা যে কারোই হতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০২৩
এমএইচবি/এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।