আলিস আল ইসলামের পর এবার তানভীর ইসলাম; কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে দুটি ম্যাচ জিতিয়েছেন দেশি স্পিনাররা। আগের ম্যাচে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন বড় ইনিংস খেলেছেন, যদিও দলকে জেতাতে পারেননি।
কুমিল্লার হয়ে এবারের বিপিএলে দেশিদের পারফরম্যান্স চোখে পড়ার মতো। বিদেশি তারকাদের ভিড়ে আলো ছড়াচ্ছেন তারা। দলটির কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন নিয়মিতই আফসোস করেন দেশি ক্রিকেটারদের পরিপক্কতা নিয়ে। এবার কেমন দেখছেন? সালাউদ্দিন অবশ্য খুশি নন তবুও।
শুক্রবার চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে জয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আরও ভালো করা উচিত (দেশি ক্রিকেটারদের)। উইকেট যেমনই থাকুক, আমাদের অন্তত এই ধরনের উইকেটে খেলার অভ্যাস আছে। আমরা যদি উইকেটের দায় দেই যে উইকেট ভালো না এবং সেখানে কীভাবে খেলতে হবে, সেটা যদি ব্যাটাররা না পারে, তাহলে আমি মনে করি, সে বড়সড় ভুল করছে। ’
‘আমার কথা হলো, উইকেট যদি ১২০ রানের হয়, তাহলে ১২০ রানের মতো খেলো। উইকেট যদি ২০০ রানের মতো হয়, তাহলে ২০০ রানের মতোই খেলো। যদিও আমি মনে করি, আমাদের ছেলেদের ওই পরিপক্কতা ৯০ শতাংশেরই আসেনি। সেটা কবে হবে, জানি না। তবে একটু গভীরভাবে চিন্তা করলে তারা হয়তো এটা কাটিয়ে উঠতে পারবে। তারা যদি চেষ্টা করে, তাহলে হয়তো আস্তে আস্তে শিখে যাবে। ’
শুক্রবার সিলেট পর্বের দুই ম্যাচের কোনোটিতেই বড় রান হয়নি। সিলেট স্ট্রাইকার্সের করা ১৪২ রানের জবাবে ১২৭ রান করতে পারে দুর্দান্ত ঢাকা। পরের ম্যাচে কুমিল্লার বিপক্ষে স্রেফ ৭২ রানে অলআউট হয়ে যায় চট্টগ্রাম। উইকেট দেখে ক্রিকেটারদের নেতিবাচক হয়ে যাওয়া নিয়েও চিন্তার কথা জানান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘অনেক সময় হয় কী, উইকেট খারাপ দেখলে আমাদের ছেলেরা নেতিবাচক মানসিকতায় ঢুকে যায়। এটাকে কীভাবে ইতিবাচকভাবে দেখতে হয়, সেটা আসলে তারা দেখতে পারে না। এটা তার দোষ দিয়ে লাভ নেই। এটাও শিক্ষার ব্যাপার আছে, কীভাবে করতে হয় তা আস্তে আস্তে শিখতে হবে। এই জায়গাটা নিয়ে আমিও একটু হতাশ। এটা কবে হবে, তা নিয়ে আমরাও চিন্তা করি। ’
‘আমি আছি, সোহেল (রংপুর রাইডার্সের কোচ সোহেল ইসলাম) আছে, আমরা এটা নিয়ে খুব চিন্তা করি যে, কীভাবে তাদের মানসিক দিকটা উন্নত করা যায়। ছোটবেলা থেকে ওভাবে বড় হয়নি দেখে হয়তো এই জায়গায় এসে হঠাৎ করে বদলে যায়। ’
বিপিএল ছাড়া ঘরোয়া ক্রিকেটে আর কোনো টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা হয় না। এ নিয়ে আফসোস-আক্ষেপের কথা শোনা যায় নিয়মিতই। মোহাম্মদ সালাউদ্দিন আরও একবার মনে করালেন তেমন কিছু।
তিনি বলেন, ‘আরেকটা বড় জিনিস, আমরা একটাই টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট খেলি। এখানে ধরেন ১১টি ম্যাচ। যারা ওপরে যাবে না, তারা ম্যাচ খেলবে কয়টা? ১২ট। এর ওপরই কোনো ক্রিকেটারকে শিখতে হবে। এছাড়া তো টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট নেই। এই ছেলেটা যদি আরেকটা টুর্নামেন্ট পেত বা স্থানীয় আরেকটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট হতো, তখন সে শিখে আসতে পারত অনেক কিছু। ’
‘এখান তাকে হঠাৎ করে (বিপিএলে) বিশ্বের শীর্ষ ক্রিকেটারদের সঙ্গে খেলতে হচ্ছে। অনেক চাপের মধ্যে খেলতে হচ্ছে। সে তো ভুল করবেই, ভুল করাটাই স্বাভাবিক। যদি আরও বেশি প্রতিযোগিতামূক ম্যাচ খেলত, টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট আরও খেলত, তাহলে আমার মনে হয় ছেলেরা পরিপক্ব হয়ে যেত। ’
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০২৪
এমএইচবি/আরইউ