প্রশ্নটা তার জন্য ছিল অবধারিত। দুই ইনিংসের মাঝ বিরতিতেও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের জন্য লক্ষ্যটা কঠিনই মনে হচ্ছিল।
এই ব্যাটার বলেন, ‘আমার জীবনে তো সেরা…এমন কখনো হয়নি যে এত ভালো পার্টনারসহ ব্যাটিং করেছি। যেভাবে সে ব্যাটিং করেছে সেটা অসাধারণ। নন স্ট্রাইক থেকে দেখতে ভালো লাগছিল। তার থেকে বড় জিনিস, একজন পার্টনারের কাজ হচ্ছে আরেক পার্টনারকে রিলিফ করে দেওয়া। আমার মনে হয় সে আমাকে পুরো রিলিফ করে দিয়েছে খেলাটা বড় করার জন্য। ’
রংপুরের দেওয়া ১৮৬ রান তাড়া করতে নেমে ৮৯ বলে ১৪৩ রানের জুটি গড়েন হৃদয় ও লিটন। তাদের এমন জুটিতে ম্যাচ সহজ হয়ে যায় কুমিল্লার জন্য। পরে আরও কয়েকটি উইকেট হারালেও শেষ অবধি পথ হারায়নি তারা। বিদেশি তারকাদের ভিড়ে দুজন দেশি ব্যাটারে ভর করে জয়ে কি বেশি স্বস্তি?
লিটন বলেন, ‘হ্যাঁ অবশ্যই। সাধারণত আমরা টি-টোয়েন্টিতে বড় বড় রান তাড়া করি না। সেদিক থেকে অন্যতম সেরা বলতে পারেন। দুজনই বাংলাদেশি। দুজনই জাতীয় দলের খেলোয়াড়। আশা করি যে আমরা এটা ধারাবাহিকভাবে করতে পারি। ’
এর আগে ২০১৯ বিশ্বকাপে সাকিবের সঙ্গে দারুণ এক জুটি ছিল লিটনের। ৩২২ রান তাড়া করতে নেমে ১৩৫ বলে ১৮৯ রানের জুটি গড়েন তারা। এবার হৃদয়ের সঙ্গে জুটি নিয়েও উচ্ছ্বসিত লিটন। কোনটিকে এগিয়ে রাখবেন?
লিটন বলেন, ‘সেটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট, এবং ৫০ ওভারের খেলা। এটা টি-টোয়েন্টি। অবশ্যই সেটা আমার জীবনের প্রথম বিশ্বকাপের ম্যাচ ছিল, সাকিব ভাইর সঙ্গে সেটাও অন্যরকম ছিল। কিন্তু এটাও আলাদা। সংস্করণটা আলাদা তো, এই জন্য আমি বললাম। টি-টোয়েন্টিতে পার্টনারসহ আমি এরকম ইনিংস খেলিনি। ’
এবারের বিপিএলে দারুণ খেলছেন তাওহীদ হৃদয়, একটি ম্যাচে হাঁকিয়েছেন সেঞ্চুরিও। ১৩ ম্যাচে ৪৪৭ রান করে হৃদয়ই এখন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। তার ব্যাটিং খুব কাছ থেকে দেখেছেন লিটন। কোন জিনিসটি আলাদা করেছে হৃদয়কে?
লিটন বলেন, ‘সে ভালো বলে ছয় মারতে পারে। যেটা আমাদের দেশে খুব কম ব্যাটসম্যান পারে। স্বাভাবিক, যে কোনো বোলার যে সংস্করণেই হোক না কেন উইকেটেই বল করবে। আর সে উইকেটের বলটাই খুব বেশি ভালো মারে। এটা সে নয়, যারা বিশ্ব ক্রিকেটে সফল ব্যাটসম্যান, সবাই স্ট্যাম্পের বল ভালো খেলে। এটা তার সবচেয়ে ভালো প্লাস পয়েন্ট। দেখতে ছোট হলেও বড় বড় মারতে পারে। যেটুক সামনে থেকে দেখি, আমার মনে হয় সে ক্রিকেট নিয়ে অনেক চিন্তা করে। অনেক হার্ড ওয়ার্কার। ফ্রিকুয়েন্টলি জিমে যায়; কিছু না কিছু কাজ করতেই থাকে। এটা তার ভালো একটা দিক।
হৃদয়ের সঙ্গে জুটিতে শুরুর দিকে কিছুটা ধরে খেলছিলেন লিটন। প্রথম ২৬ বলে তিনি করেছিলেন ২৪ রান। আরেকদিকে বাউন্ডারি হাঁকাচ্ছিলেন হৃদয়। শেষ অবধি ৫৭ বলে ৮৩ রান করেছেন লিটন। শুরুতে ধীরে খেলার কারণ কী?
কুমিল্লার অধিনায়ক বলেন, ‘আমরা জানতাম নতুন বলে তাদের বোলার কে কে। সাকিব ভাই আর ফজল হক। দুজনই উইকেট নেওয়ার মতো বোলার। হৃদয় তার খেলা খেলেছে। সে সাকিব ভাইকেও চার্জ করেছে, ফজল হককেও চার্জ করেছে। কিন্তু আমি জানি যে সাকিব ভাই তাদের মূল শক্তি। আমরা যদি দ্রুত উইকেট দিয়ে দিই, আমাদের বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ছিল শেষের দিকে, যেমন মঈন আলী। আমি চাইনি মঈন আলী দ্রুত উইকেটে আসুক। তাহলে খেলাটা ওপেন হয়ে যাবে। শেখ মেহেদী, নবী ভাই বল করবে। আমার মাথায় এটা চলছিল যে যতক্ষণ দুই ডানহাতি ব্যাটিং করে যেতে পারি তত ভালো। পাঁচ নম্বর ওভার থেকে আমাদের মোমেন্টার সম্পূর্ণ পক্ষে চলে এসেছে। তার পর মনে হয় আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। আজ তাদের ডেথ ওভার ওতটা ভালো ছিল না। আর হাসান প্রথম ওভারে মার খেয়েছে। সে মানসিকভাবে পিছিয়ে ছিল। এই জিনিসগুলো মাথায় কাজ করছিল। ’
বাংলাদেশ সময়: ০০০১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৪
এমএইচবি/এমজে