নাঈম শেখ তখন ব্যাট করছিলেন ৬৯ রানে। মোহাম্মদ মিঠুনের ডেলিভারিটি ব্যাকফুটে গিয়ে মিড উইকেটের দিকে খেলতে চেয়েছিলেন বাঁহাতি এই ওপেনার।
প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেটারদের চোখেমুখে ছিল বিস্ময়ের ছাপ। কেন আউট দেওয়া হয়নি সে ব্যাপারে আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলতে এগিয়ে আসেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। যে কারণে খেলা বন্ধ থাকে প্রায় পাঁচ মিনিটের মতো।
আম্পায়ারিং বিতর্কের পর স্কোরবোর্ডে ৪ উইকেটে ৩৪১ রানের পাহাড় গড়ে আবাহনী লিমিটেড। তাড়া করতে নেমে সেই রানের ধারে কাছেও যেতে পারেনি প্রাইম ব্যাংক। ইনজুরি কাটিয়ে মাঠে ফেরা মুশফিকুর রহিম সেঞ্চুরি পেলেও তা বিফলেই যায়।
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে প্রাইম ব্যাংককে ৫৮ রানে হারিয়ে টানা দশম জয় পেল আবাহনী। টস হেরে ব্যাট করতে নামা দলটির হয়ে সেঞ্চুরির দেখা পান নাঈম ও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের চলতি মৌসুমে দুজনেরই এটি প্রথম সেঞ্চুরি।
ওপেনিং জুটি থেকেই ১১০ রান আসে আবাহনীর। বিশাল চৌধুরীর থ্রোয়ে এনামুল হক বিজয় (৪৫) রান আউট হলে ভাঙে সেই জুটি। রেজাউর রহমান রাজার বলে আউট হওয়ার আগে শান্তর সঙ্গে ৮৯ রানের জুটি গড়েন নাঈম। ১০৪ বলে ১০ চার ও ২ ছক্কায় ১০৫ রান করেন বাঁহাতি এই ওপেনার।
এরপর তাওহীদ হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে ঝড় তোলেন শান্ত। ৭৭ বলেই তুলে নেন সেঞ্চুরি। তবে তিন অংকের দেখা পেয়ে বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি। হাসান মাহমুদের বলে বোল্ড হয়ে ৮৫ বলে ১৩ চার ও ৪ ছক্কায় ১১৮ রান করেন তিনি। তাতে ভাঙে হৃদয়ের সঙ্গে তার ৬২ বলে ১২৩ রানের জুটি। হৃদয় অবশ্য অপরাজিত থাকেন শেষ পর্যন্ত। ৩৫ বলে ২ চার ও ৪ ছক্কায় ৬৫ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন ডানহাতি এই ব্যাটার।
তাড়া করতে নেমে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৮৩ রানের বেশি করতে পারেনি প্রাইম ব্যাংক। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ১ রান করা তামিমকে সাজঘরে ফেরান তাসকিন আহমেদ। ৪৩ রানের ভেতর কাটা পড়েন জাকির হাসান (৮) ও শাহাদাৎ হোসেন দীপু (১২)।
এরপর মুশফিকের সঙ্গে ৮৩ রানের জুটি গড়ে আশা জাগিয়েছিলেন পারভেজ হোসেন ইমন। কিন্তু ফিফটি ছোঁয়ার পর তাকেও ফিরতে হয়। ৭০ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৫৬ রানে আউট হন বাঁহাতি এই ওপেনার। বাকিটা সময় মুশফিককে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি আর কোনো ব্যাটার। আঙুলের চোট কাটিয়ে এটাই ছিল অভিজ্ঞ এই ব্যাটারের প্রথম ম্যাচ। ১০৫ বলে ১৪ চারে ১১১ রান করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন তিনি।
আবাহনীর হয়ে তিনটি করে উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ ও তানজিম হাসান সাকিব। তাসকিন অবশ্য ইনিংসের শেষ দিকে ফিল্ডিং করার সময় চোটে পড়ে। সতীর্থদের কাঁধে চড়ে মাঠ ছাড়তে দেখা যায় তাকে।
১০ ম্যাচে ১০ জয়ে ২০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষস্থান আরও মজবুত করল আবাহনী।
শেখ জামাল ও রূপগঞ্জের জয়
ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। আগে ব্যাট করতে নেমে ২০৫ রানেই গুটিয়ে যায় পারটেক্স। শেখ জামালের হয়ে ৪ উইকেট নেন শফিকুল ইসলাম। এছাড়া স্রেফ ১৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করেন তাইবুর রহমান।
তাড়া করতে নেমে ৪ ওভার হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছায় শেখ জামাল। ৭৫ বলে অপরাজিত ৭৬ রানের ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক নুরুল হাসান। দারুণ বোলিংয়ের পর ব্যাট হাতে কার্যকরী ৩৯ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন তাইবুর। ১০ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দুইয়ে আছে শেখ জামাল।
বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে দিনের আরেক ম্যাচে গাজী টায়ার্স ক্রিকেট একাডেমিকে ১০ উইকেটে হারিয়েছে লেজেন্ডস অফ রূপগঞ্জ। আগে ব্যাট করতে নেমে ১৫০ রানেই গুটিয়ে যায় গাজী টায়ার্স। শুভাগত হোম ৪, আব্দুল হালিম ও মাশরাফি বিন মুর্তজা নেন দুটি করে উইকেট।
জবাবে তৌফিক খান তুষারের ঝোড়ো সেঞ্চুরিতে গাজী টায়ার্সকে উড়িয়ে দেয় রূপগঞ্জ। ৬৬ বলে ১২ চার ও ৮ ছক্কায় একাই ১১৪ রানে অপরাজিত থাকেন এই ওপেনার। অপর প্রান্তে সাদমান ইসলামের অবদান কেবল ৩৫ রান।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২৪
এএইচএস