ঢাকা: বিদর্ভ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের ধূলি ওড়ানো পিচে জয় নিয়ে চার ম্যাচ টেস্ট সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ জিতে নিল বিরাট কোহলির টিম ইন্ডিয়া। সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১২৪ রানে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই ভারত ২-০তে সিরিজ নিজেদের করে রাখলো।
নাগপুরের টেস্টের দ্বিতীয় দিনেই জয়ের পথ তৈরি করে রেখেছিল স্বাগতিকরা। ম্যাচের প্রথম দুই দিনে পড়েছে ৩২ উইকেট। প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং করে টিম ইন্ডিয়া অলআউট হওয়ার আগে করে ২১৫ রান। জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকা ৭৯ রানে গুটিয়ে যায়। যা ভারতের বিপক্ষে যেকোনো দলের টেস্টে সর্বনিম্ন স্কোর। এর আগে চন্ডিগড়ে ১৯৯০-৯১ মৌসুমে শ্রীলঙ্কাকে ৮২ রানে অলআউট করেছিল ভারতীয়রা। আর ১৯৯২ সালে বর্ণবাদের নিষেধাজ্ঞা থেকে ফেরার পর এটাই দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে কম রান। ১২ রানে প্রোটিয়ারা তাদের টপঅর্ডারের ৫ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে আগের বাজে রেকর্ডটিও টপকে যায়। এর আগে ১৯০২ সালে কেপটাউনে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ৫ উইকেট হারিয়েছিল তারা ১৪ রানে।
নাগপুর টেস্টে মাত্র দুই দিনেই শেষ হয়েছে তিন ইনিংস। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে স্বাগতিকরা আরেকবার অলআউট হওয়ার আগে করে ১৭৩ রান। দ. আফ্রিকার লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩১০ রানের। তবে, জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৮৫ রানেই থেমে যায় প্রোটিয়াদের ইনিংস।
ভারতের ৮৩ বছরের টেস্ট ইতিহাসে সবচেয়ে কম রানে প্রতিপক্ষকে অলআউট করে দেওয়ার আগে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২১৫ রান সংগ্রহ করে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ রান আসে ওপেনার মুরালি বিজয়ের ব্যাট থেকে। ৪০ রান করেন তিনি। আরেক ওপেনার শিখর ধাওয়ান করেন ১২ রান। এছাড়া, চেতশ্বর পুজারা ২১, বিরাট কোহলি ২২, আজিঙ্কা রাহানে ১৩ আর রোহিত শর্মা ২ রান করেন।
শেষ দিকে ৩২ রানের দারুণ একটি ইনিংস খেলেন রিদ্ধিমান শাহা এবং ৩৪ রানের ইনিংস খেলেন রবিন্দ্র জাদেজা। অশ্বিনের ব্যাট থেকে আসে আরও ১৫ রান।
প্রোটিয়াদের হয়ে প্রথম ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট তুলে নেন সিমন হারমার। এছাড়া মরনে মরকেল তিনটি উইকেট তুলে নেন। একটি করে উইকেট পান কেগিসো রাবাদা, ডিন এলগার এবং ইমরান তাহির।
ব্যাটিংয়ে নেমে ভারতীয় স্পিনারদের দাপটে মাত্র ৭৯ রানে গুটিয়ে যায় দ. আফ্রিকা। দলের অন্য ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় রান আসে জেপি ডুমিনির ব্যাট থেকে। ৩৫ রান করেন তিনি। ডু প্লেসিস ১০ আর সিমন হারমার ১৩ রান করলেও বাকি ব্যাটসম্যানরা এক অঙ্কের ঘরেই ছিলেন।
ভারতের হয়ে ৫টি উইকেট তুলে নেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ৪টি উইকেট দখল করেন রবিন্দ্র জাদেজা আর বাকি উইকেটটি পান অমিত মিশ্র।
১৩৬ রানে এগিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৭৩ রানে অলআউট হয় ভারত। ওপেনার শিখর ধাওয়ানের ব্যাট থেকে সর্বোচ্চ ৩৯ রান আসে। পুজারা ৩১, কোহলি ১৬, রাহানে ৯, বিজয় ৫, রোহিত শর্মা ২৩ রান করেন।
প্রোটিয়াদের হয়ে ইমরান তাহির তুলে নেন সর্বোচ্চ ৫টি উইকেট। এছাড়া ৩টি উইকেট পান মরনে মরকেল।
৩১০ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে আবারো ভারতীয় স্পিনারদের দাপটে খেই হারিয়ে ফেলে দ. আফ্রিকা। দলীয় ৫৮ রানের মাথায় টপঅর্ডারের চার ব্যাটসম্যানকে হারায় সফরকারীরা। ওপেনার ডিন এলগার ১৮ এবং আরেক ওপেনার ভ্যান জিল ৫ রান করে বিদায় নেন। তিন নম্বরে নামা নাইটওয়াচম্যান ইমরান তাহির ৮ রান করেন।
দলপতি হাশিম আমলার ব্যাট থেকে আসে ৩৯ রান। ডি ভিলিয়ার্স ৯ রান করে সাজঘরে ফিরলেও ডু প্লেসিস করেন ৩৯ রান। দলের হাল ধরার চেষ্টা করা জেপি ডুমিনি করেন ১৯ রান। ডুমিনিকে ফিরিয়ে দেওয়ার ওভারে অশ্বিন ড্যান ভিলাসকেও ফিরিয়ে দিয়ে প্রোটিয়াদের অষ্টম উইকেটের পতন ঘটান। কেগিসো রাবাদাকে ফিরিয়ে দিয়ে প্রোটিয়াদের নবম উইকেটটিও তুলে নেন অশ্বিন। মরনে মরকেলকে ফিরিয়ে দশম উইকেটের পতন ঘটান অশ্বিন।
ভারতের জয়ের ম্যাচে দ্বিতীয় ইনিংসে অশ্বিন ৭টি আর মিশ্র ৩টি উইকেট দখল করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, ২৭ নভেম্বর ২০১৫
এমআর