ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

দিল্লি টেস্টের যত রেকর্ড

রাহাত মাহমুদ, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০১৫
দিল্লি টেস্টের যত রেকর্ড ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা: রেকর্ডময় দিল্লি টেস্ট যেমন ভারতের জন্য ঐতিহাসিক হয়ে থাকবে, ঠিক তেমনি এ ম্যাচের স্মৃতি নিশ্চয়ই ভুলে থাকতেই চাইবে দক্ষিণ আফ্রিকা। নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের ব্যবধানের জয় তুলে নেয় টিম ইন্ডিয়া।

অন্যদিকে, মন্থর ব্যাটিংয়ে প্রোটিয়ারা রেকর্ডের খাতায় নাম লেখায়।

দিল্লি টেস্টের স্কোর উল্লেখ না করলেই নয়। ভারত – ৩৩৪ ও ২৬৭, দ. আফ্রিকা – ১২১ ও ১৪৩। আগেই চার ম্যাচের টেস্ট সিরিজ নিশ্চিত করা ভারত শেষ ম্যাচেও নিজেদের দাপট অব্যাহত রাখে। ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ হেরে যেন প্রোটিয়াদের শেষ রক্ষাও হলো না!

নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে রেকর্ড ৩৩৭ রানের জয় তুলে নেয় ভারত। এর আগে ২০০৮ সালে মোহালি টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩২০ রানের জয় পেয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। শুধু তাই নয়, এর আগে কখনোই টেস্টে প্রোটিয়াদের ৪৮১ রানের লক্ষ্য বেধে দিতে পারেনি ভারত। সব মিলিয়ে যেকোনো দলের বিপক্ষে এটি তাদের পঞ্চম বৃহত্তম রানের টার্গেট।

পেসারদের মধ্যে টেস্টে এক ইনিংসে (কমপক্ষে ৯০ বল) সেরা ইকোনমি রেটের পরিসংখ্যানে দীর্ঘ ৫৮ বছরের রেকর্ড ভাঙেন উমেশ যাদব। দিল্লি টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ২১ ওভার (১৬টি মেডেন) বল করে ০.৪২ ইকোনমি রেটে ৯ রানের বিনিময়ে তিনটি উইকেট লাভ করেন ভারতীয় পেসার।

এর আগে ১৯৫৭ সালের মার্চে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ০.৫৬ ইকোনমি রেটে বোলিং করার রেকর্ড গড়েছিলেন সাবেক প্রোটিয়া পেসার ট্রেবর গোডার্ড। পোর্ট এলিজাবেথে দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি ১৬ ওভার বল করে আট মেডেনে দু’টি উইকেট লাভ করেছিলেন।

ভারতের হয়ে এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি মেডেন ওভার নেওয়ার তালিকায় নবম স্থানে ওঠে আসেন রবিন্দ্র জাদেজা। দিল্লি টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৬ ওভার বোলিং করে ৩৩টিই মেডেন নেন ২৭ বছর বয়সী এ বাঁহাতি স্পিনার। এখনও শীর্ষস্থান দখলে প্রয়াত ভারতীয় স্পিনার ভিনু মাকাদের। ১৯৫১ সালের নভেম্বরে ইংলিশদের বিপক্ষে তিনি ৭৬ ওভারের মধ্যে ৪৭টি মেডেন নেন।

চেন্নাইয়ে ১৯৬৩-৬৪ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টানা ২১টি মেডেন ওভার নিয়েছিলেন সাবেক ভারতীয় স্পিনার নাদকার্নি। টানা ১৭টি মেডেন ওভার নিয়ে স্বদেশী বাপু নাদকার্নির রেকর্ডটি অবশ্য ভাঙতে পারেননি জাদেজা।

আর টেস্ট ইনিংসে (কমপক্ষে ১৮০ বল) সেরা ইকোনমি রেটের পরিসংখ্যানে দুই নম্বরে ওঠে আসেন জাদেজা। এ তালিকায় শীর্ষ তিনটি আসনই ভারতীয়দের দখলে। দিল্লি টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৬ ওভার বল করে ০.৫৬ ইকোনমি রেটে জাদেজা দু’টি উইকেট লাভ করেন। শীর্ষস্থানটি সাবেক ভারতীয় স্পিনার নাদকার্নির দখলে। ১৯৬৪ সালের জানুয়ারিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি ০.১৫ ইকোনমি রেটে ৩২ ওভার বোলিং করেছিলেন। তিন নম্বরে সাবেক ভারতীয় অফস্পিনার শিবলাল যাদব। ১৯৮৬ সালের জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তার ৩৩ ওভারের ইকোনমি রেট ছিল ০.৫৭।

এ তো গেল দিল্লি টেস্টে ভারতের কীর্তি। এবার দ. আফ্রিকার পালা। তবে প্রোটিয়াদের হয়ে ভুলে থাকার মতোই রেকর্ড গড়েন ডুমিনি-আমলা-ডি ভিলিয়ার্সরা।

ভারতে টেস্ট সিরিজে জেপি ডুমিনির ব্যাটিং গড় ১৪.০০। বিদেশের মাটিতে (কমপক্ষে দুই ইনিংস) এটি তার সর্বনিম্ন ব্যাটিং গড়। দিল্লি টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়ে সর্বসাকুল্যে ১ রান করেন প্রোটিয়াদের ‍অন্যতম নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান। অন্য যেকোনো দলের বিপক্ষে টেস্টে কখনোই তার ব্যাটিং গড় ২০-এর নিচে নামেনি।

এদিকে, দিল্লি টেস্টের চতুর্থ দিনে মন্থর ব্যাটিংয়ের রেকর্ড বইয়ে নাম লেখায় দ. আফ্রিকা। দ্বিতীয় ইনিংসের পঞ্চাশ ওভারে প্রোটিয়াদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪৯ রান। যা ২০০২ সালের পর টেস্ট ইনিংসে পঞ্চাশ ওভার শেষে যেকোনো দলের সর্বনিম্ন স্কোর। এর আগের সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড ৬৮ রানের। এটিও প্রোটিয়াদের দখলে। ২০০৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পঞ্চাশ ওভারে স্কোরবোর্ডে এ পরিমান রান তোলে দ. আফ্রিকা।

কমপক্ষে ২০০ বলের হিসেবে ধীরগতির পার্টনারশিপের রেকর্ড গড়েন হাশিম আমলা ও ডি ভিলিয়ার্স। এমন পরিসংখ্যানে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ২৭ রান তুলতে দু’জনের রান রেট দাঁড়ায় ০.৬৪। তালিকায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানেও প্রোটিয়ারা। এ ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসেই ফাফ ডু প্লেসিসের সঙ্গে ০.৯৯ রান রেটে ৩৫ রান তোলেন ডি ভিলিয়ার্স। আর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তেম্বা বাভুমা ও আমলা ১.১৩ রান রেটে ৪৪ রান যোগ করেন।

অন্যদিকে, কমপক্ষে ২০০ বলে সর্বনিম্ন স্ট্রাইক রেটের পরিসংখ্যানে শীর্ষে ওঠে আসেন অামলা। ২৪৪ বল মোকাবেলায় ১০.২৪ স্ট্রাইক রেটে ২৫ রান করেন প্রোটিয়া অধিনায়ক। এর আগে এমন রেকর্ড গড়েছিলেন সাবেক ইংলিশ ব্যাটসম্যান জ্যাক রাসেল। ১৯৯৫ সালে জোহানেসবার্গে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে তিনি ১২.৩৪ স্ট্রাইক রেটে ২৯ রানে অপরাজিত থাকেন।

আধুনিক ক্রিকেটে আমলা-ডি ভিলিয়ার্সদের এমন ‘বিরক্তিকর’ মন্থর ব্যাটিং ক্রিকেটভক্তরাও নিশ্চয়ই আর দেখতে চাইবেন না। অদূর ভবিষ্যতে টেস্ট ক্রিকেটে প্রোটিয়ারা না হোক, অন্য কোনো দল আবার এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করে কিনা সেটিই এখন দেখার বিষয়!

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৫
আরএম

** শেষ রক্ষাও হলো না প্রোটিয়াদের

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।