ঢাকা: অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের দায়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে থাকা তাসকিন আহমেদের সমস্যা কেবল স্লো বাউন্সারে। তবে এ পেসারের আন্তজার্তিক ক্রিকেটে ফেরার পরীক্ষায় থাকবে সব ধরনের ডেলিভারি।
রোববার (২১ আগস্ট) মিরপুরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তাসকিন জানান, ‘এটা আইসিসির সিদ্ধান্ত। সব ধরনের ডেলিভারির জন্যই প্রস্তুতি নিতে হবে। যেন সবগুলো ডেলিভারি ঠিক থাকে। ইনশাআল্লাহ সব ঠিক থাকবে আশা রাখি। আমি সব ডেলিভারি ঠিক রেখেই ফিরবো। সবাই দোয়া করবেন। ’
‘নিষিদ্ধ’ শব্দটা নামের পাশে আর দেখতে চান না ২১ বছর বয়সী এ পেসার। এজন্য কঠোর অনুশীলন করছেন বলে জানান তাসকিন, ‘নিষিদ্ধ শব্দটি আসার পর প্রত্যেকটি দিনই একটু অন্যরকম ছিল। নিষিদ্ধ শব্দটি উঠে গেলে প্রত্যেকটি দিনই আনন্দের বলে মনে হবে। প্রস্তুতি নেওয়ার চেষ্টা করছি। কঠোর অনুশীলন করছি। বাকি সব আল্লাহর ইচ্ছে। অবশ্যই দ্রুত ফিরতে চাই। শুধু আমি না, কেউই চাইবে না জাতীয় দলের সিরিজ মিস হোক। সত্যি বলতে এটা আমার জন্য একটা বোঝা। কারণ আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বোলিংয়ে নিষিদ্ধ। যতদ্রুত সম্ভব আমার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে যেন নিষেধাজ্ঞা উঠে যায় এবং আমি যেন সামনের সিরিজে খেলতে পারি সেজন্য কষ্ট করে যাচ্ছি। ’
বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা দিতে আগামী ৬ সেপ্টেম্বর অস্ট্রেলিয়া যাবেন তাসকিন। ব্রিসবেনের পরীক্ষাগারে তাসকিনের বোলিং পরীক্ষা ৮ সেপ্টেম্বর। ‘পরীক্ষা’ শব্দটা সামনে এলেই তৈরি হয় মানসিক চাপ। খানিকটা চাপ তাই ভর করছে তাসকিনের মনে, ‘ভালো লাগছে যে তারিখ নির্ধারিত হয়ে গেছে। খেতে গেলে, ঘুমাতে শুধু চিন্তা। পরীক্ষার তারিখ ঠিক হয়েছে শোনার পর থেকে ভালো লাগছে। মানসিক একটা চাপ অবশ্যই কাজ করে। প্রস্তুতি নিচ্ছি তবুও পরীক্ষার আগে সবার মধ্যে একটু নার্ভাসনেস কাজ করে। শুধু স্কিলের উপর প্রস্তুতি নিচ্ছি সেটা না, মানসিকভাবেও প্রস্তুতি নিচ্ছি। ওভার অল প্রস্তুতি অনেক ভালো। আশা করছি ভালো একটা পরীক্ষা হবে। ’
আইসিসিরি অনুমোদিত ল্যাবে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগে বিসিবির বোলিং অ্যাকশন রিভিউ কমিটির অধীনে পরীক্ষা দিয়েছেন তাসকিন। তাতে তাসকিনের বোলিংয়ে কোনো সমস্যা আছে বলে মনে হয়নি। ইতিবাচক মতামত পেয়ে আত্মবিশ্বাসটা বেড়ে গেছে তাসকিনের, ‘আমাদের দেশের এক্সপার্টদের কাছ থেকে যেই মতামত পেয়েছি, তারা সন্তুষ্ট। এমনকি আমি নিজেও সন্তুষ্ট। তবুও আসলে পরীক্ষা... একটা ডেলিভারিতেও যদি সমস্যা হয় তাতেও ক্ষতি হয়ে যাবে। এজন্য ভালোভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার চেষ্টা করছি। ইনডোর এবং আউটডোরে বেশ কিছু ক্যামেরা দিয়ে এবং বিশেষজ্ঞ কোচদের তত্ত্বাবধানে আমার পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। সব সময় কোচরা বোলিং সেশনের ভিডিও করছেন। মাহবুব আলী জাকি স্যার উনি তিন-চার মাস ধরে আমাকে সাপোর্ট করছেন। জাতীয় দলের কোচরাও সাপোর্ট করছেন। দলের সিনিয়র ক্রিকেটাররা মানসিকভাবে সাপোর্ট করছেন। ওভারঅল সবাই সাপোর্ট করছেন। সবার সাপোর্ট নিয়ে ভালো পরীক্ষা দিতে পারব বলে আশা করছি। ’
গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চলাকালীন চেন্নাইয়ের রামাচন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাগারে বোলিং পরীক্ষা দিয়ে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন পেসার তাসকিন আহমেদ। তাসকিনের বোলিং পরীক্ষার প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন ওঠেছিল। কারণ, ৩-৪ মিনিটের মধ্যে তাসকিনকে ৮-৯টা বাউন্সার করতে হয়। এর মধ্যে তিনটি বাউন্সারে অবৈধ অ্যাকশন ধরা পড়ে। আরাফাত সানির বোলিং অ্যাকশনেও ত্রুটি ধরা পড়ে। পরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দু’জনই নিষিদ্ধ হন। ৮ সেপ্টেম্বর তাসকিনের সঙ্গে ব্রিসবেনে পরীক্ষা দিতে পারেন সানিও।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৫ ঘণ্টা, ২১ আগস্ট ২০১৬
এসকে/এমআরপি