ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

ডি ভিলিয়ার্সের আত্মজীবনীতে বিশ্বকাপ হতাশা

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১, ২০১৬
ডি ভিলিয়ার্সের আত্মজীবনীতে বিশ্বকাপ হতাশা এবি ডি ভিলিয়ার্সে-ছবি:সংগৃহীত

ঢাকা: নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১৫ ক্রিকেট বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে হেরে যাওয়াটা এবি ডি ভিলিয়ার্সের জীবনে ‘সবচেয়ে বড় হতাশা’। পাশাপাশি সে ম্যাচে দলের মূল একাদশ নিয়েও খুশি ছিলেন না দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক।

বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত নিজের আত্মজীবনী ‘দ্যা ড্রিম’ এ এসব ব্যাপার তুলে ধরেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।

বিশ্বকাপে শেষ চারের ম্যাচে প্রোটিয়াদের হয়ে ফাস্ট বোলার কাইল অ্যাবোটের সেরা একাদশে থাকার কথা ছিল। তবে হঠাৎ করেই সিদ্ধান্ত পাল্টে নেওয়া হয় ভারনন ফিল্যান্ডারকে। যেখানে বলা হয়েছিল ‘ট্রান্সফরমেশন টার্গেট’ পূরণ করার জন্যই ফিল্যান্ডারকে দলে নেয়া।

দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে বর্ণবৈষ্যমের ব্যাপারটি অনেক আগে থেকেই। যেখানে প্রায়ই নতুন করে ‘সাদা-কালো’র (শেতাঙ্গ-কৃষ্ণাঙ্গ) অদ্ভুদ নিয়ম করা হয়।

জোহার্নেসবার্গে উন্মোচিত ডি ভিলিয়ার্সের আত্মজীবনীতে তিনি ২০১৫ বিশ্বকাপের বেশ গভিরে গিয়েছেন। যেখানে তার বিশ্বাস ছিল প্রোটিয়ারা বিশ্বকাপ ট্রফি জিততে পারতো।

সেবার গ্রুপ পর্বে দুটি ম্যাচ হারের পরও দ. আফ্রিকা নকআউটে পা রাখে। আর কোয়ার্টার ফাইনালে সিডনিতে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে বিশ্বকাপ আসরে প্রথমবারের মতো নকআউট পাড়ি দেয়। ডি ভিলিয়ার্স তার বইতে জানান, স্বাভাবিক ভাবে এটাই ধরা হয়েছিল, কোয়ার্টার ফাইনালের একাদশটিই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলবে।

সেই দলে সাদা রংয়ের বাইরে ছিলেন হাশিম আমলা, জেপি ডুমিনি ও ইমরান তাহির। এছাড়া আগের ম্যাচগুলোতেও সাদা রংয়ের বাইরে তিন থেকে পাঁচের মধ্যে ক্রিকেটার খেলায় প্রোটিয়ারা। নির্দিষ্ট করে কোনো সংখ্যার কথা বলা ছিল না বোর্ড থেকে।

ঘটনাটি ঘটে ম্যাচে নামার আগে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের টিম মিটিংয়ে কিছু পূর্বে। ডি ভিলিয়ার্সের কাছে একটি ফোন কল আসে। যদিও তিনি নামটি প্রকাশ করেননি। বলা হয়, ফিল্যান্ডার ফিটনেস টেস্টে উর্ত্তীন হয়েছে আর অ্যাবটোর পরিবর্তে তাকে নিতে হবে।

নিজের আত্মজীবনীতে ক্ষোভের সঙ্গেই ডি ভিলিয়ার্স বলেন, ‘ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা দেশটির একমাত্র জাতীয় গভর্নিংবডি, যাদের টার্গেট সেট করতে হয়। কিন্তু কি হলো? দলে ফিল্যান্ডার ভিন্ন রংয়ের বলে খেললো। আর অ্যাবোট সাদা তাই খেলতে পারলো না। সেমিফাইনালে চারজন ভিন্ন রংয়ের ক্রিকেটার খেললো। এই সিদ্ধান্তটি কি ক্রিকেটের জন্য ভালো হলো?’

আরও বলা হয়, ‘বর্ণবৈষ্যমের এই ব্যাপারটি আমার ও আমদের দলে ব্যাপক বিষন্নতা তৈরি করে। আমাদের দলে যদি তিন অথবা চারজন ভিন্ন রংয়ের ক্রিকেটার থাকে তবে কি কেউ আসলেই কিছু মনে করবে?

এত হতাশার পরও ডি ভিলিয়ার্স নিজেকে আবারও ফিরে পেতে চান। তিনি জানান, দক্ষিণ আফ্রিকা দলের হয়ে বিশ্বকাপ জেতা তার ‘জ্বলন্ত উচ্চাকাঙ্ক্ষা’। যেখানে ২০১৯ বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি।

ডি ভিলিয়ার্স ইতোমধ্যে তিনটি ব্যর্থ ওয়ানডে বিশ্বকাপ মিশনে দলের হয়ে খেলেছেন। যেখানে ২০০৭ বিশ্বকাপে সেমিফাইনালকে তিনি বলেছেন ‘সহজভাবে খুব কঠিন চেষ্টা’। ২০১১ বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হারকে বড় করে না দেখলেও জানান, সেবার অধিনায়ক গ্রায়েম স্মিথ সতর্ক করে দেন, দেশে ফিরলে মানুষ ‘ছুরি ও পাথর’ ছুঁড়তে পারে। সেবার স্মিথ দলের সঙ্গে দেশে ফিরেননি।

৩৬৫ ডিগ্রি খ্যাত ভিলিয়ার্স ছয়টি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলেছেন। যেখানে দুটিতে তিনি দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সর্বশেষ ভারতের মাটিতে টি-২০ বিশ্বকাপে প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নিয়েছিল প্রোটিয়ারা। আর সেবার হারের পর ভিলিয়ার্স বলেছিলেন, ‘নতুন করে কিছুই বলার নাই ও নতুন করে কিছু চিন্তা করার নাই। প্রোটিয়ারা যতদিন পর্যন্ত আইসিসির সীমিত ওভারের কোনো টুর্নামেন্ট জিতবে না, ততদিন পর্যন্ত আনন্দ হবে না। তবে শুভদিন আসবেই। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, ০১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।