ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

মিরাজের বাড়িতে আনন্দের বন্যা, মিষ্টির ছড়াছড়ি

মাহবুবুর রহমান মুন্না, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৬
 মিরাজের বাড়িতে আনন্দের বন্যা, মিষ্টির ছড়াছড়ি ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মিরাজের খুলনার খালিশপুরের বাসা থেকে ফিরে: সরু গলির মধ্যে রোড লাইটের আলো নেই। তবু অন্ধকার মাড়িয়ে ক্রিকেট ভক্তরা মিরাজের বাবাকে শুভেচ্ছা জানাতে তার বাসায় পৌঁছে গেছেন।

হাতে মিষ্টির প্যাকেট। উচ্ছ্বাস ভরা হাসি নিয়ে মিষ্টি খাইয়ে দিচ্ছেন মিরাজের বাবা জালাল হোসেনকে। ঘরে বসতে দেওয়ার মতো জায়গা নেই তাই রাস্তায় চেয়ার দিয়ে সবার বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এত মানুষকে বসার ও মিষ্টি বিতরণের কাজটা নিজ হাতে সামাল দিচ্ছেন মিরাজের বাবা। এর মধ্যে আবার ফোনে আত্মীয়-স্বজনের শুভেচ্ছা গ্রহণ করছেন তিনি।

বর্তমান ক্রিকেট বিশ্বে সবচেয়ে আলোচিত তারকা মেহেদী হাসান মিরাজের খুলনার খালিশপুরের হাউজিংয়ের ভাড়া বাসায় গিয়ে দেখা যায় মিরাজের সাফল্যে বাড়িতে আনন্দের বন্যা বইছে।

এখানে টিনের চালার ঘরে মিরাজের পরিবারের বসবাস। মিরাজের বাবা মো. জালাল হোসেন সাবেক গাড়িচালক। মা মিনারা বেগম গৃহিণী। মিরাজের একমাত্র বোন রুমানা আক্তার মিম্মা।

দুই টেস্টে মোট ১৯ উইকেট নিয়ে খুলনার ছেলে মেহেদী হাসান মিরাজ জায়গা নিলেন দুই ম্যাচের অভিষেক টেস্ট সিরিজের সর্বোচ্চ উইকেটধারীদের তালিকায়। পেছনে ফেললেন উনবিংশ শতকের বোলিং সেনসেশন জন জেমস ফেরিসকে। ১৮৮৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার বাঁহাতি এ পেসার সর্বোচ্চ ১৮ উইকেট নিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে।

তার বোলিং জাদুতেই কিনা ২৭৩ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে কোনো উইকেট না হারিয়ে শত রান তোলার পরও ইংলিশরা গুড়িয়ে গেল ১৬৪ রানে। বাংলাদেশ জিতলো ইতিহাস গড়া টেস্ট। আর মিরাজ জানান দিলেন তার সম্ভাবনার কথা।

রোববার (৩০ অক্টোবর) টেস্ট জয়ের পর রাতে মিরাজের বাসায় গিয়ে কথা হয় তার বাবা জালাল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘ছেলের এই সাফল্যে শুধু খুলনা নয়, সারাদেশে আনন্দের বন্যা বইছে। মিরাজ যে স্বপ্ন নিয়ে খেলতে নেমেছে সে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আল্লাহর কাছে এ জন্য শুকরিয়া। আমি টিভিতে ছেলের খেলা দেখেছি। খুব ভালো লেগেছে।

তিনি জানান, মিরাজের সাফল্য নিয়ে মিষ্টির ছড়াছড়ি। নিজে এ পর্যন্ত ১০-১৫ কেজি মিষ্টি কিনেছেন। ভক্ত ও স্বজনদের খাইয়েছেন। যারা আসছেন তারা তো নিয়েই আসছেন। আগের দিন মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ায় মিরাজের বাড়ির উঠানে এখনও পানি-কাদা হয়ে আছে। ফলে শুভেচ্ছা জানাতে আসা শুভাকাঙক্ষীরা বাড়িতে প্রবেশ না করার জন্য অনুরোধ জানান তিনি এবং সামনের রাস্তায় চেয়ার নিয়ে বসতে দেন সাবাইকে।
 
এই সাফল্য যেনো ধারাবাহিক হয় সে জন্য তিনি দেশবাসীর কাছে ছেলের সাফল্যও কামনা করেন। তিনি আশা করছেন সোমবার মিরাজ খুলনায় আসবে।

বোন রুমানা আক্তার মিম্মা বলেন, ভাইয়া যে বিশ্বরেকর্ড করেছে তার আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না।

মিরাজের সাবেক কোচ মো. শাহনেওয়াজ বলেন, মিরাজ ছোটবেলা থেকেই অসম্ভব ভালো খেলতো। বিভিন্ন সময় তাই ওকে হায়ারে অনেকে খেলতে নিয়ে যেতো। তখনই বুঝেছিলাম মিরাজ একদিন ক্রিকেট বিশ্বে জায়গা করে নেবে। আজ সে স্বপ্ন পূরণ হলো। আমরা গর্বিত মিরাজকে নিয়ে।

সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মিরাজের বাড়িতে মিষ্টি নিয়ে যান খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) সহকারী কমিশনার মো. কামরুল ইসলাম। তিনি মিরাজের পিতাকে জড়িয়ে ধরেন। মিষ্টি তুলে দেন তার মুখে।

বাংলাদেশ সময়: ২২১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৬
এমআরএম/টিআই

 

 

 

 

 

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।