শনিবার (১৩ মে) সকালে কেরানীগঞ্জের শাকতা অগ্রপথিক তরুণ সংঘের ক্রিকেট মাঠে কালু ক্রিকেট একাডেমির পরিচালক মো. সেলিম বাংলানিউজকে এ কথা বলেন।
আলাপচারিতায় মো. সেলিম বাংলানিউজকে বলেন, দেশের ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে কেরানীগঞ্জের অবদান ব্যাপক।
তিনি বলেন, আমার হাত ধরে দেশের কয়েকজন সুনাম কুড়ানো ক্রিকেটারের আত্মপ্রকাশ। তার মধ্যে অন্যতম, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক ক্রিকেটার মো. রফিক, আমিনুল ইসলাম বুলবুল, মেহরাব হোসেন অপি, দোলন ও নিয়াজ। আরও অনেক খেলোয়াড় আছেন যারা ঢাকা ক্রিকেট লীগে অংশগ্রহণ করছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় ক্রিকেট নিয়ে এতো কষ্ট করলেও সরকার আমাদের দিকে কোনো ধরনের নজর দিচ্ছে না।
ব্যক্তিগত অর্থ দিয়ে আর কতো দূর যাওয়া যায়, বলেও প্রশ্ন রাখেন তিনি।
ক্রিকেটে কেরানীগঞ্জের অবদান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেরানীগঞ্জে প্রতিবছর কালেন্ডি ক্রীড়া চক্রের পরিচালনায় কাল্ডেন্ডি মাঠে তিনটি ক্রিকেট লীগ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। একটি ডায়ামন্ড মেলামাইন টি-টোয়েন্টি, কেরানীগঞ্জ লীগ এ ও বি। এখান থেকে প্রতিবছর দেশের জন্য নতুন নতুন ক্রিকেটার তৈরি হচ্ছে। কিন্তু সরকারের কোনো ধরনের নজর নেই কেরানীগঞ্জের দিকে। কেরানীগঞ্জের এই ক্রিকেট লীগের মাধ্যমেই উঠে এসে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলে হয়ে খেলেছেন, মো. রফিক, আমিনুল ইসলাম বুলবুল, অপি, দোলন, নিয়াজ, আজাহার হোসেন শান্টু প্রমুখ। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের আর্থিক সুবিধা পাচ্ছে না ঢাকা শহরের দক্ষিণ-পশ্চিমে বুড়িগঙ্গা নদীর উপকণ্ঠের এই স্থানটি।
কেরানীগঞ্জে একটি ইনডোর স্টেডিয়াম হওয়ার কথা ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, এখনও হলো না! মো. রফিকের মাধ্যমে এখানে একটি ইনডোর স্টেডিয়াম হওয়ার কথা শুনেছি। যেখানে কেরানীগঞ্জের খেলা পাগল ছেলে-মেয়েরা খেলা করতে পারবে। বৃষ্টিতেও খেলা চালিয়ে যেতে পারবে। আমার বয়স তো প্রায় শেষ; আর কতো দিনই বা আর বেঁচে থাকবো। ক্রিকেটে জীবনের ৪০টি বছর পেরিয়ে গেছে- এখন এই উন্নতিটুকুই চাওয়া।
জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত ক্রিকেটের জন্য কাজ করে যেতে চান বলেও সেলিম জানান।
‘‘বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে যুক্ত আলি হোসেন এই কেরানীগঞ্জের সন্তান। যার সঙ্গে ৮০ সালের দিকে একসঙ্গে আমি খেলেছি। কিন্তু তিনি বাংলাদেশের ক্রিকেট বোর্ডে যুক্ত থাকলেও এই স্থানের ক্রিকেটের কোনো উন্নতি হয়নি। নিজস্ব অর্থ খরচ করে ক্লাবগুলো ছোট ছোট ছেলেদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। কেরানীগঞ্জে খেলার জন্য কালেন্ডি মাঠ ও টেগোরিয়া মাঠ আছে। এছাড়া আর বড় কোনো মাঠ নেই। আর এই দুটি মাঠেই সাধারণ খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। ছোট মাঠগুলোতে বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়। ফলে তখন আর ছেলেরা ক্রিকেট খেলতে পারে না’’।
কথাগুলো বলতে বলতে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন মো. সেলিম। ভেজা চোখে বলেন, জীবনে আমি কিছুই পাইনি! কিন্তু আমি এখনও বলতে পারি- আমার হাত ধরে অনেক ক্রিকেটারের জন্ম হয়েছে। শেষ বয়সে শুধু এটাই চাই সরকার কেরানীগঞ্জের ক্রিকেটের দিকে একটু নজর দিক।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৬ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৭
এসজে/আইএ