ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

বাংলাদেশ ম্যাচে ভারতকে গাঙ্গুলির সতর্কতা

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭০৯ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০১৭
বাংলাদেশ ম্যাচে ভারতকে গাঙ্গুলির সতর্কতা বাংলাদেশ ম্যাচে ভারতকে গাঙ্গুলির সতর্কতা

ক্রিকেটে দ্বৈরথের দিক দিয়ে সবচেয়ে পুরোনো অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড। দেশ দুটির ক্রিকেট ইতিহাস শতবছরেরও বেশি। তবে দ্বৈরথের পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি রোমাঞ্চ তৈরি করেছে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ। গত কয়েক ধরে বছর অবশ্য এই যুদ্ধ রাজনৈতিক কারণে ভাটা পড়েছে। কিন্তু শুরু হয় আরেক দ্বৈরথ বাংলাদেশ বনাম ভারত।

ভারতের ক্রিকেট ইতিহাস যদিও অনেক শক্তিশালী। সেই দিক থেকে বাংলাদেশ বেশ পিছিয়ে।

কিন্তু সাম্প্রতিক কালে দু’দেশের ক্রিকেট যুদ্ধ বিশ্ব দরবারে এদের মর্যাদা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। যার শুরু হয়েছিল ২০০৭ বিশ্বকাপে। সেবার ভারতকে হারিয়ে যেন শুরুটা করে টাইগাররা। আর ২০১৫‘র বিশ্বকাপে বিতর্ক তৈরি করে লাল-সবুজদের মনে ক্ষত একেঁদিয়েছিল তারা।  

এরপর চলেছে তাদের মাঠের লড়াই। এশিয়া কাপের ফাইনাল সহ গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের তীরে এসে তরী ডুবানো।

আজ এমনই এক লড়াইয়ে ফের বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভারত। এবারের ম্যাচটি অবশ্য ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। কেননা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে প্রথমবার খেলছে বাংলাদেশ। যেখানে প্রতিবেশিদের হারিয়ে ফাইনালেও যাওয়ার সুযোগ থাকছে মাশরাফিদের। এজবাস্টনে বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে তিনটায় ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে এ ম্যাচকে ঘিরে ইতোমধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে পুরো ক্রিকেট বিশ্বে। একেক জন ভিন্ন মতামত দিচ্ছেন তাদের বিশ্লেষনে। বাংলাদেশের শুভাকাঙ্খি হিসেবে পরিচিত ভারতের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলিও পিছিয়ে নেই। তবে এ ম্যাচে তার দেশের অধিনায়ক বিরাট কোহলি সহ সবাইকে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়েছেন তিনি।

কলকাতার পত্রিকা আনন্দবাজারে এ ম্যাচকে ঘিরে একটি কলাম লেখেছেন গাঙ্গুলি। পাঠকদের জন্য নিচে তার লেখা অংশটি দেওয়া হলো:

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শুরুতে কেউ ভেবেছিল ভারত-বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে সেমিফাইনালে? বাংলাদেশ কিন্তু এখন আর ক্রিকেট দুনিয়ার বামনদের মধ্যে পড়ে না। তথাকথিত বড় দলগুলোর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ে যাচ্ছে ওরা। প্রতিদিন উন্নতিও করছে।
ভারত ওদের থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী ও এগিয়ে ঠিকই। কিন্তু একটু অসাবধান হলেই পিছলে পড়ার একটা আশঙ্কা এ সব ম্যাচে থেকেই থাকে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ম্যাচ দেখার পরে যদিও তেমন সম্ভাবনা কমই দেখা যাচ্ছে।  

কিন্তু ক্রিকেট মাঠে কবে কী হবে, কে বলতে পারে? অশ্বিন দলে ফেরায় রবিন্দ্র জাদেজার ভূমিকাটাই পুরো বদলে গিয়েছে। ভুবনেশ্বর, বুমরাহ ও হার্দিকের পেস ত্রয়ীকে সামলানো ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠছে। আর ব্যাটিং নিয়ে যতই লিখি, ততই কম মনে হবে। শিখর ধাওয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিকে প্রায় ওর সেরা টুর্নামেন্ট করেই ফেলেছে। মিডল অর্ডারও ভয়ঙ্কর ফর্মে রয়েছে।

বিরাটের ফর্মের সঙ্গে সঙ্গে ওর ক্যাপ্টেন্সিও প্রতি ম্যাচে আরও ধারালো হয়ে উঠছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ওর অসাধারণ ক্যাপ্টেন্সির পরিচয় পাওয়া গিয়েছে দারুণ ভাবে। সবচেয়ে বড় কথা দলের ছেলেদের কী করে বড় যুদ্ধের জন্য তৈরি করতে হয়, তা ওর খুব ভাল করে জানা আছে। দলের ছেলেদের বিরাট নিশ্চয়ই বুঝিয়ে দিয়েছে যে বাংলাদেশকে একেবারেই হাল্কা ভাবে নেওয়া উচিত হবে না।  

আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ে প্রথম আটে আছে বলেই বাংলাদেশ এই টুর্নামেন্টে খেলছে। এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ প্রতিটা ম্যাচের সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের খেলায় উন্নতি করেছে। শেষে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওরা দেখাল, কতটা ওপরে উঠতে পারে, কতটা ভাল ক্রিকেট খেলতে পারে।  ওদের দলের ব্যালান্স কেমন, তা এই ম্যাচেই বোঝা গিয়েছে। এই ব্যালান্সটা ওদের ভারতের বিরুদ্ধে ধরে রাখাটা খুব জরুরি। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং কোনওটাই ওদের খারাপ নয়। তবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা ওদের মানসিকতার।

দলের সিনিয়রদের উচিত জুনিয়রদের পথ দেখানো। আবেগে ভেসে যাওয়া বা চাপের কাছে মাথানত করা, কোনওটাই যেন ওরা না করে। আর পাঁচটা স্বাভাবিক ম্যাচের মতোই খেলা উচিত।

ভারত-বাংলাদেশ এখন ক্রিকেট দুনিয়ায় একটা বড় শত্রুতা। ইংল্যান্ডে দুই দেশেরই প্রচুর সমর্থক থাকেন আর এই ম্যাচে তারা নিশ্চয়ই থাকবেন। তাই ম্যাচটা যে মাঠের বাইরেও হাড্ডাহাড্ডি হবে, সেই আশা করাই যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৭ ঘণ্টা, ১৫ জুন, ২০১৭
এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।