যে কোনো সিরিজ বা টুর্নামেন্টে তিন পেসার এখন টাইগার দলের নিয়মিত ঘটনা। কোনো কোনো ম্যাচে আবার চারজনও দেখা যায়।
তবে উইকেট স্পিন সহায়ক হলেও আসন্ন এই সিরিজে পেসাররা তাদের সুবিধা আদায় করে নিতে পারবেন বলে জানালেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের সিনিয়র পেসার শফিউল ইসলাম। রোববার (১৩ আগস্ট) বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের মিডিয়া লাউঞ্জে তিনি সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন। তার সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশটুকু তুলে ধরা হলো।
প্রশ্ন: বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশ আটজন পেসার নিয়ে লম্বা একটি সেশন কাটিয়েছেন, কী কাজ করলেন?
শফিউল: আমরা যে শেষ অনুশীলন ম্যাচটি খেলেছি, আমার মনে হয় বোলারদের একটা টেস্ট ম্যাচে যেভাবে বল করা উচিত ওইভাবে বল করতে পারেনি। আমার মনে হয় সেজন্যই এই লম্বা সেশনটি কোচ আমাদের নিয়ে করেছেন। তাছাড়া গতকাল বিশ্রাম থাকায় আমাদের পেস বোলারদের যতটুকু বল করার কথা ছিল ততটুকু করতে পারিনি বলেই মনে হয় আজকে এই পরিকল্পনা হয়েছে।
প্রশ্ন: সবশেষ ইংল্যান্ড সিরিজ বা হোমে কোনো টেস্ট ম্যাচ হলে সবসময় স্পিনারদের উপর একটা প্রত্যাশা থাকে। আপনার কী মনে হয় পেসারদেরও দেশের মাটিতে কিছু করার আছে?
শফিউল: হ্যাঁ, অবশ্যই। আমাদের দেশে হয়তো স্পিন সহায়ক উইকেট হয়। অন্যান্য দেশে পেস বোলাররাও অনেক ব্রেক থ্রু এনে দেয়। আমার মনে হয় আমাদেরও ওই জায়গাটায় উন্নতি করার সুযোগ আছে। আমাদের দ্রুত গতির বোলার আছে। আমাদের স্কিলও মোটামুটি ভালো। আমরা যদি ম্যাচে ভালো জায়গায় বল করতে পারি অবশ্যই ভালো কিছু হবে।
প্রশ্ন: তাহলে একথা বলা যায় যে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পেসারদের ভালো কিছু করার সুযোগ আছে?
শফিউল: যারাই সুযোগ পাবে যদি প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে পারে তাহলে অবশ্যই ভালো কিছু করা সম্ভব।
প্রশ্ন: আপনি অনুশীল ম্যাচে পাঁচটি উইকেট পেয়েছেন, নিজের সুযোগটি কীভাবে দেখছেন?
শফিউল: আমি আমার কাজ করে যাচ্ছি। ম্যাচ খেলেছি, নেটে যে কাজ সেটা করে যাচ্ছি। দলে যায়গা পাওয়া না পাওয়া পুরোটাই ম্যানেজমেন্টের ব্যাপার। তারা যাকে নির্বাচন করবে সেই খেলবে। তবে আমি যদি সুযোগ পাই চেষ্টা করবো সেরাটা দিতে।
প্রশ্ন: ইনজুরির কারণে অনেকবারই এই সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেছে। ইনজুরি ব্যবস্থাপনাটা সতর্কতার সাথে করছেন তো?
শফিউল: ইনজুরির ব্যাপারটা নিয়ে আমিও অনেক ভেবেছি। যখনই দলে ফিরছি তখনই একটা না একটা ইনজুরি আসছে। সবশেষ বিপিএলে ইনজুরিতে পড়ে নিউজিল্যান্ড সিরিজটা মিস হয়েছে। আসলে ইনজুরির ব্যাপারটা পুরোটাই আল্লাহর উপরে। আমি আমার ফিটনেস ট্রেনিং করে যাচ্ছি। এখন যদি ইনজুরি আসে তাহলেতো আর কিছু করার নেই। তবে যেন ফিরে না আসে সেজন্য চেষ্টা করছি।
প্রশ্ন: সিরিজ সামনে রেখে আপনার প্রস্তুতি কেমন?
শফিউল: অবশ্যই যথেষ্ট প্রস্তুতি আছে। আমাদের ফিটনেস ক্যাম্প হয়েছে, নেটে বল করেছি, সবাই ফোকাসে আছে। তো এরকম ফ্লোতে যদি যায় তাহলে অবশ্যই ভালো কিছু হবে।
প্রশ্ন: চট্টগ্রামে দল একটা সেশন কাটিয়ে আসলো, ব্যাটিং, বোলিং নিয়ে কতটুকু কাজ হয়েছে?
শফিউল: বৃষ্টির কারণে প্রস্তুতি ম্যাচটি একটু এদিক ওদিক হয়েছে। দুই দলই এক ইনিংস করে ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়েছি। শেষদিনে এক ওভারও খেলা হয়নি। সবমিলিয়ে আমার মনে হয় ভালোই হয়েছে। শেষদিনটা খেলতে পারলে আরও ভালো হতো।
প্রশ্ন: অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চট্টগ্রামে দ্বিতীয় টেস্টে সিমিং কন্ডিশন থাকবে বলে আপনার ধারণা?
শফিউল: উইকেট যেমনই হোক পেসারদের দায়িত্ব নিয়েই খেলতে হবে। যদি স্পিন সহায়ক হয় তাহলে চেষ্টা থাকবে স্পিনারদের সাহায্য করার। নতুন বলে ব্রেক থ্রু এনে দিতে পারলে স্পিনারদের জন্য কাজটা সহজ হয়ে যাবে। আর যদি পেস সহায়ক উইকেট হয় তাহলে পেসারদের দায়িত্ব নিয়ে বোলিং করতে হবে। যে উইকেটই হোক পেস বোলারদের একটা গুরুত্বপূর্ণ রোল আছে।
প্রশ্ন: আমাদের ক্যাম্পে যে পেসাররা আছে তাদের নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সাথে কতটা লড়াই করা সম্ভব? অস্ট্রেলিয়ার পেস আক্রমণের সাথে পেরে উঠা সম্ভব?
শফিউল: আমাদের পেস বোলিং বিভাগটা অনেক শক্তিশালী। যেই খেলুক তাদের ক্ষমতা আছে প্রতিপক্ষের বিপক্ষে লড়াই করার।
প্রশ্ন: উপমহাদেশে ভালো খেলা অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের নিয়ে কোনো পরিকল্পনা আছে কী না?
শফিউল: পরিকল্পনাতো অবশ্যই থাকে। ভালো বল যে কোনো ব্যাটসম্যানের জন্যই ভালো বল। স্মিথ কিংবা ওয়ার্নারসহ যারাই আছে তাদের বিপক্ষে আমাদের পেসাররা লড়াই করতে প্রস্তুত।
প্রশ্ন: সিরিজে সুযোগ পেলে আপনার ব্যক্তিগত লক্ষ্য কী থাকবে?
শফিউল: সব সমই ভালো করার ইচ্ছে নিয়ে মাঠে নামি। এবার সুযোগ পেলে অবশ্যই লক্ষ্য থাকবে দলে নিয়মিত হওয়া। দলে আমাকে যে জন্য নেবে সেই প্রত্যাশাটা পূরণ করতে চাই। সবচেয়ে বড় কথা শক্তভাবে দলে ফিরতে চাই।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৩ ঘণ্টা, ১৩ আগস্ট ২০১৭
এইচএল/এমআরপি