দিনের প্রতিটি প্রহরেই যেন বৃষ্টির দাপট। বিরাম বিশ্রামহীন বৃষ্টির দাপটে জন-জীবন যেমন বিপর্যস্ত তেমনি বিপর্যস্ত প্রায় অবস্থা আসন্ন অস্ট্রেলিয়া সিরিজও।
গুরুত্বপূর্ণ এই সিরিজটিকে সামনে রেখে গেল মাসের ১০ তারিখ থেকে শুরু হয়েছিল অনুশীলন ক্যাম্প। ক্যাম্পের প্রথম দুই সপ্তাহ কিছুটা নির্বিঘ্নে কাটলেও বৃষ্টির চোখ রাঙানিতে সপ্তাহের শেষে ইনডোরের নেটে ব্যাটিং অনুশীলন ও জিমে ফিটনেস করেই ক্ষান্ত থাকতে হয়েছে টাইগারদের।
বৃষ্টির ধারাবাহিক এই দাপট অব্যাহত ছিল চট্টগ্রামের অনুশীলন ক্যাম্পেও। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়মে এক সপ্তাহের কন্ডিশনিং ক্যাম্পের প্রথম তিন দিন রোদ বৃষ্টির খেলার মধ্যেই প্রস্তুতি সেরেছে টাইগাররা। নিস্তার মেলেনি প্রস্ততি ম্যাচেও। তিন দিনের এই ম্যাচের প্রথম দুই দিন খেলা হলেও শেষের দিন পুরোটাই বৃষ্টিতে ভেসে গেছে।
দল চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় ফেরার পরেও সেই একই চিত্র, বৃষ্টি। প্রতিদিনই হচ্ছে। এতে করে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রস্তুতিটা হচ্ছে বাধাগ্রস্থ। আটঘাট বেধে প্রস্তুতি বলতে যা বোঝায় সেটা হচ্ছে না বলাই শ্রেয়।
যেমন আজকের কথাই ধরা যাক। বুধবার (১৬ আগস্ট) সকাল ১০টা থেকে মিরপুরে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল ম্যাচ সিচুয়েশন অনুশীলন। কিন্তু ভারী বৃষ্টির সেটা হতে দিল না। সকাল বেলা ওয়ার্ম আপ শেষে ম্যাচের লক্ষ্যে যেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন অমনি বৃষ্টি বাধ সাধলো। আউটডোরে কোন অনুশীলনই হলো না, যা হওয়ার হল ওই ইনডোরের নেটে।
বৃষ্টির সমস্যার শেষ এখানেই নয়। ঢাকা আবহাওয়া অফিসের মতে বর্তামানে যে বৃষ্টি হচ্ছে তা ১৭ আগস্ট কমে যাবে। ৫ দিন বিরতির পর আবার ২২ আগস্ট থেকে শুরু হবে। তাতে করে বিঘ্নিত হতে পারে বাংলাদেশ ও অস্ট্রোলিয়ার মধ্যকার প্রস্তুতি ম্যাচটি। প্রস্তুতি ম্যাচ ভেস্তে গেলে খুব বেশি কিছু এসে যাবে না। কিন্তু ২৭-৩১ আগস্ট মিরপুরে অনুষ্ঠেয় দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট যদি বৃষ্টি বাগড়ায় ভেস্তে যায় তাহলেতো মুশকিল।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বিভাগের কর্মকর্তা আবুল কালাম মল্লিক তেমন কিছুরই ইঙ্গিত দিলেন, ‘বর্তমানে যে বৃষ্টিপাত হচ্ছে সেটা ১৭ আগস্ট কমে যাবে। এরপর ২২ আগস্ট থেকে আবার হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি শুরু হবে। আমরা আশা করছি ২৭ তারিখ থেকে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার ম্যাচে বৃষ্টি ও রোদ থাকবে। অর্থাৎ বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকবে। এই মাসের শেষের দিকে প্রতিদিনই হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি থাকবে। এক পশলা দু’পশলা বৃষ্টি হবেই। ’
দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে দিলেন এই আবহাওয়া কর্মকর্তা। কেননা বৃষ্টি না হয়ে সিরিজটি নির্বিঘ্নে মাঠে গড়ালে একটি ফলাফল আসবে। দু’দলের একটি দল জয়ের আনন্দে ভেসে মাঠ ছাড়তে পারবে। সেঞ্চুরি, ডাবল সেঞ্চুরি কিংবা উইকেটের বিচারে প্লেয়ারদের কেউ হবেন নায়ক কেউ মহায়নায়ক। বিশ্ব ক্রিকেটে যুগান্তকারী এক ইতিহাসের রচনাও হতে পারে এই সিরিজে। কিন্তু এই সব পথ রুদ্ধ করে খলনায়কের অট্টহাসিতে হাসতে দেখা পারে অনাহুত এই বৃষ্টিকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৫ ঘণ্টা, ১৬ আগস্ট, ২০১৭
এইচএল/এমএমএস