শনিবার (১৯ আগস্ট) মিরপুরে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে ডিএমপি কমিশনার এ কথা জানান। তিনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা প্রদান কার্যক্রমের বিস্তারিত তুলে ধরেন।
আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, আমরা ক্রিকেটপ্রিয় জাতি, আমরা খেলাকে ভালবাসি। মানুষ যেন নির্বিঘ্নে এই সিরিজ উপভোগ করতে পারে, সেজন্য যাবতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
‘মোটাদাগে যদি বলি— স্টেডিয়ামকেন্দ্রিক একটা নিরাপত্তা ব্যবস্থা, রুটে নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং হোটেলকেন্দ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা, অর্থাৎ তিনভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আমরা সাজিয়েছি। ’
স্টেডিয়ামের নিরাপত্তার বিষয়টি তুলে ধরে ডিএমপি কমিশনার বলেন, পুরো স্টেডিয়াম চত্বরকে সিসি ক্যামেরার অধীনে আনা হয়েছে। আমাদের আইটি বিশেষজ্ঞরা রিয়েল টাইম মনিটরিং (সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ) করবেন। উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এটা তদারকি করবেন। যখন-যেখানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে মাঠ পর্যায়ে নির্দেশনা দিতে হবে, সেটি তারা দেবে। আমাদের থাকবে মাঠকেন্দ্রিক, গেটকেন্দ্রিক, গ্যালারিকেন্দ্রিক আন্তঃবেষ্টনী ও বহির্বেষ্টনী। এছাড়া মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর থেকে স্টেডিয়াম পর্যন্ত পুরো এলাকায় দুই পাশে পুলিশ নিয়োজিত থাকবে।
খেলোয়াড়দের টিম হোটেল থেকে মাঠে পৌঁছানো পর্যন্ত রাস্তায় নিরাপত্তার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি জানান, খেলোয়াড়রা যখন হোটেল থেকে স্টেডিয়ামে আসবে, তখন মিরপুর ১০ থেকে স্টেডিয়াম পর্যন্ত সব ভাসমান দোকান সরিয়ে দেওয়া হবে এবং অন্যান্য দোকানের শাটার নামানো থাকবে।
এসময় স্টেডিয়ামে ঢুকতে নকল টিকিট ও স্টেডিয়াম এলাকায় ধারালো কোনো বস্তু বা দাহ্য পদার্থ বহন থেকে বিরত থাকারও পরামর্শ দেন আছাদুজ্জামান মিয়া।
তিনি বলেন, নকল টিকিট নিয়ে যেন কেউ ঢুকতে না পারে, সেজন্য মেশিনে ও ম্যানুয়ালি তল্লাশি করা হবে। গেটগুলো দিয়ে দর্শনার্থীরা যখন আসবেন, প্রত্যেকের দেহ তল্লাশি করা হবে। এছাড়া মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে আমরা তাদের ম্যানুয়েল চেকিং করবো। খেলা দেখতে যারা আসবে, কেউ কোনো ধরনের ধারালো চাকু, কাঠি, দাহ্য পদার্থ, ম্যাচ, ব্যাগ, ট্রলি, ভ্যানিটি ব্যাগ ও হ্যান্ডব্যাগ অথবা ফ্ল্যাক্স বা পানির বোতল জাতীয় কিছু সঙ্গে আনবেন না।
কর্তব্যরত পুলিশ ও বিসিবির নিরাপত্তাকর্মীদের তল্লাশি কাজে সহযোগিতার জন্য সবাইকে অনুরোধ করে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, সবাই মনে রাখবেন, দেশের সম্মান ও ভাবমূর্তি অবশ্যই আমাদের কাছে প্রধান।
দেশি-বিদেশি সব খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার ওপর গুরুত্বারোপ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, হোটেল থেকে যখন স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়ার প্লেয়াররা যাবেন, পুরো রাস্তায় থাকবে আমাদের নিরাপত্তা। গাড়ির বহরে থাকবে র্যাব ও পুলিশের চৌকস বাহিনী, থাকবে ফায়ার ফাইটিং অ্যাম্বুলেন্স। পথিমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ এলাকার রুফটপে নিরাপত্তা বাহিনী ও বিভিন্ন পিকেট ডিউটি থাকবে। ভিভিআইপিদের যে মর্যাদায় নেওয়া ও আনা হয়, দেশের স্বার্থে অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশ দলকে সেভাবেই আনা-নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। ’
আবাস হোটেলে নিরাপত্তার বিস্তারিতও তুলে ধরেন ডিএমপি কমিশনার। বলেন, ‘হোটেলে কয়েকস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। পুরো হোটেল চত্বর লাইটিং ও সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। থাকবে লাগেজ ও মোটর স্ক্যানার। তার মধ্য দিয়ে চেক করে নিয়ে আসা হবে। কোনো দর্শনার্থী বা নিয়মের বাইরে কোনো সংবাদকর্মী খেলোয়াড়দের সাক্ষাৎকার নিতে পারবেন না। তাদের সাক্ষাৎ পেতে হলে বিসিবি’র অনুমোদন নিতে হবে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৭
এইচএল/এমআরপি/এইচএ/