জয়ের জন্যই মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। তবে, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পচেফস্ট্রুম টেস্ট যেভাবে বাংলাদেশ হেরেছে, তাতে হতাশ মুশফিক।
নিজের বোলারদের দিকে অভিযোগের তীর ছুঁড়ে মুশফিক আরও বলেন, ‘ফ্ল্যাট উইকেটে আপনি উইকেট না পান, ঠিক জায়গায় বোলিং তো করতে পারেন। প্রথম ইনিংসে বোলাররা আমাকে অনেক হতাশ করেছে। এটা ফ্ল্যাট ট্র্যাক ছিল কিন্তু আমরা ভালো জায়গায় বল করতে পারিনি। ৫০০-৫৫০ রানের বোঝা নিয়ে খেলা আর ৩০০-৪০০ রানের বিপক্ষে খেলা দুই রকম ব্যাপার। বোলাররা তাহলে কেন জাতীয় দলে খেলছে, যদি বোলিংটাই লাইনে ফেলতে না পারে? আমি তো দুই দিকে সুইং চাইনি। চেয়েছি যেহেতু উইকেট পাওয়া যাচ্ছে না, তাহলে রান আটকে রাখতে। বারবার বলা হচ্ছে বোলাররা কম ম্যাচ খেলেছে। এই অনভিজ্ঞতার অজুহাত আর কত দিন দেব? তারা যদি ভালো না-ই খেলতে পারে, ৫-১০ বছরে নামের পাশে মাত্র ৫-১০ টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা থাকবে। অথচ দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের দিকে তাকিয়ে দেখুন, ওরা কিন্তু খুব বেশিদিন টেস্ট খেলেনি। ’
পরিসংখ্যান ঘাটলে মুশফিকের কথার যুক্তি আছে। মরনে মরকেল ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকার বাকি বোলারদের কেউ ২০১৫ সালের আগে কোনো টেস্ট খেলেনি। পক্ষান্তরে বাংলাদেশের পেসার শফিউল ইসলাম টেস্ট খেলছেন ২০১০ সাল থেকে। কিন্তু, সেই অভিজ্ঞতার কোনো ছাপ পড়ে না তাদের বোলিংয়ে। এক মুমিনুল হকই যা উইকেট পাওয়ার পেয়েছেন। সাকিবের অনুপস্থিতিতে বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে মুমিনুল ২০১৩ সালের পর বোলিংয়ে উইকেট তুলে নিয়েছেন তিনটি। তার ক্যারিয়ারের মোট উইকেট হলো চারটি।
দুই ইনিংস মিলিয়ে ২০২ ওভার বোলিং করে মাত্র ৯টি উইকেট পেয়েছে বাংলাদেশ, তার একটি রান আউট। মুশফিকের ক্ষোভটা সেখানেই আটকে থাকেনি, ‘যদি কেউ ভালো না করে, আমাদের বিকল্প দেখতে হবে। অন্য বোলার খুঁজতে হবে। তার আগে উন্নতিটা নিজেকেই করতে হবে। বোলিং ইউনিটের শেখার অনেক কিছু আছে। নিজেদের উদ্যোগটা আগে নিতে হবে। আপনাকে বারবার কেউ শিখিয়ে দেবে না। ভালো স্কিলের জন্য আপনি জাতীয় দলে খেলেন। নইলে তো আমিও ছয়টা বলের মধ্যে দুইটা বল লাইনে ফেলতে পারতাম! গত পাঁচ বছরে ব্যাটসম্যানরা নিজেরা যে উন্নতি করেছে, সেটা বোলাররা করতে পারেনি। দুর্বল বোলিং নিয়ে সব সময়ই ব্যাটিং ইউনিটের ওপর ভরসা করতে পারেন না। নিজের উন্নতির জন্য কোচেরও দরকার নেই। ’
৪২৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় সেনওয়েস পার্কে পঞ্চম ও শেষ দিন ৯০ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। অতিথিদের দ্বিতীয় ইনিংস টিকে মাত্র ৩২.৪ ওভার। দলের এমন পারফরম্যান্সে বিব্রত মুশফিক জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। দ্বিতীয় টেস্ট নিয়ে মুশফিক জানান, ‘ভাবিনি একটা সেশনের মধ্যে ৭ উইকেট পড়ে যাবে। আশা করি আমরা পরের ম্যাচে ভালো করবো। পেশাদার হিসেবে আমাদের মানসিকভাবে দৃঢ় হতে হবে। ’
বাংলাদেশ সময়: ২১০৮ ঘণ্টা, ২ অক্টোবর ২০১৭
এমআরপি