কিন্তু গত প্রায় এক দশক ধরে চট্টগ্রামের মশাল বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এক ‘নিঃসঙ্গ’ সৈনিক। তিনি তামিম ইকবাল।
চট্টগ্রামের হয়ে বয়সভিত্তিক কিংবা অন্য দলে খেলছে এমন কেউও শুরুর তামিম-আফতাবের মতো প্রতিভাবান নয়। তাই স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন ওঠেছে ক্রিকেটের উর্বর ভূমির তালিকা থেকে কি নাম কেটে গেল চট্টগ্রামের?
চট্টগ্রামের ক্রিকেট আবেগের সর্বোচ্চ ঠিকানা খান পরিবারের প্রথম আন্তর্জাতিক তারকা আকরাম খান এ বিষয়ে রোববার কথা বললেন বাংলানিউজের সঙ্গে। চট্টগ্রামের মাঠ সমস্যা নিয়ে বরাবরই সোচ্চার আকরাম খান জবাব দিলেন একরাশ প্রশ্নের। দিলেন সমাধানও।
আকরাম খান বলেন, ‘আমরা অনেক প্রতিকূলতার মাঝে অনুশীলন করে জাতীয় পর্যায়ে গিয়েছি। তার আগের সময়টা চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গণের জন্য তেমন ভালো সময় ছিল না। তবুও দেশ চট্টগ্রাম থেকে অনেক ক্রিকেটার পেয়েছিল। এরপর দীর্ঘদিন ধরে একটা শূন্যতা চলছে। ভালো মানের কোনো ক্রিকেটার উঠে আসছে না এই অঞ্চল থেকে। ’
একের পর এক দখল হয়ে যাচ্ছে খেলার মাঠ। যেগুলো এখনও টিকে আছে সেগুলোতেও বসে কখনও ট্রাকস্ট্যান্ড, কখনও আবার দখলে থাকে বিভিন্ন ডেকোরেশনের। সঙ্গে সারাবছর এই মেলা সেই মেলা তো আছেই।
গত ৯ আগস্ট অস্ট্রেলিয়া সিরিজকে সামনে রেখে টাইগারদের অনুশীলন পর্ব দেখতে চট্টগ্রামে এসেছিলেন আকরাম খান। সেই সময় তিনি বলেছিলেন ‘বর্তমানে চট্টগ্রামে মাঠের কিন্তু বড় অভাব। আমি, নান্নু ভাই, তামিম, নাফিস, আফতাব যে মাঠগুলোতে খেলে উঠে এসেছি সেই মাঠগুলোতে খেলা দূরে থাক, যাওয়ার কোনো উপায়ও নেই এখন। এটা আমাদের জন্য খুবই উদ্বেগজনক। আমাদের এই ব্যাপারটা খুব সিরিয়াসলি দেখা উচিত। কারণ যতো কিছুই করি না কেনো মাঠ ছাড়া ভালো ক্রিকেটার তুলে আনা সম্ভব নয়। ’
সেই একই কথারই পুনরাবৃত্তি ঘটালেন তিনি এদিনও। বলেন, ‘ডিসেম্বরটা হচ্ছে শিশুদের খেলাধুলার সবচেয়ে বড় সময়। কারণ সেই সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। কিন্তু ওই সময়েই মাঠগুলোতে চলে মেলা। ’
শুরুতেই বাচ্চারা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে মন্তব্য করে আকরাম খান বলেন, ‘যেকোন স্পোর্টসই খেলুক না কেনো-বাচ্চাদের ফিটনেসটা ছোটকাল থেকেই গড়ে ওঠে। কিন্তু মাঠের ওভাবে তারা তো শুরুতেই বাধাগ্রস্ত হয়ে যাচ্ছে। ’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সময় আমরা আউটার স্টেডিয়ামে খেলেছি, প্যারেড মাঠে খেলেছি-যখন তখন। কিন্তু এখন যখন তখন খেলা যায় না। সেই মাঠগুলো এখন কোনো না কোনো সময় খেলার বদলে অন্য বিষয়ে ব্যস্ত আছে। ’
তবে এতোকিছুর মাঝেও আশার আলো দেখছেন চট্টগ্রামের বিখ্যাত সন্তান।
‘অনূর্ধ্ব ১৯ টিমে আমাদের ৭-৮ জন ক্রিকেটার আছে। অন্য বয়সভিত্তিক দলগুলোতেও বেশ কয়েকজন আছে। সবমিলিয়ে চট্টগ্রামের বেশ কিছু ভালো ট্যালেন্ট ক্রিকেটার ভবিষ্যতের জন্য তৈরি হচ্ছে। ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতে তারা জাতীয় দলে গিয়ে ভালো কিছু উপহার দিতে পারবে চট্টগ্রামকে। ’
তিনি চট্টগ্রামের মেয়র, বিসিবি সহ সভাপতি ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনকে কৃতিত্ব দিতে ভুলেননি।
বলেন, ‘তিনি ক্রীড়াঙ্গণে আসার পর থেকে চট্টগ্রামের ক্রিকেটে দৈন্যদশার বদল হয়েছে। সবাই যদি ওনাকে হেল্প করেন তাহলে ক্রিকেটে চট্টগ্রাম আরও এগোবে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০১৭
টিএইচ/আইএসএ/টিসি