প্রোটিয়াদের ছুড়ে দেয়া ১৯৬ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ২০ ওভারে, ৯ উইকেটে, ১৭৫ রানে থেমেছে সাকিবদের ইনিংস।
ফলে ম্যাচ শেষে ২০ রানের হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে কোচ হাথুরু সিংহের শিষ্যদের।
ব্যাট হাতে বাংলাদেশের হয়ে ম্যাচ উইনিং ইনিংস কেউই খেলতে পারেননি। সবেধন নীলমণি বলতে ওপেনার সৌম্য সরকারের ৩১ বলে ৪৭ রানের ইনিংসটিই যা। অবশ্য শুরু থেকে ব্যাট হাতে যে ঝড় তিনি শুরু করেছিলেন ফেলুকওয়ায়োর বলে এলবি’র ফাঁদে না পড়লে হয়তো তার ইনিংসটি আরও বড় হতে পারতো এবং টাইগারদের হারের ব্যবধানটিও আরও কম হতো।
আরেক ওপেনার ইমরুল কায়েস ফিরেছেন ব্যক্তিগত ১০ রানে হেন্ডরিকসের বলে মিলারের তালুবন্দি হয়ে। তিন নাম্বারে নামা সাকিবকে ফ্রাইলিংকের বলে দৌড়ে এসে ক্যাচ ধরে ১৩ রানে ফিরিয়েছেন ডি ভিলিয়ার্স।
সমান সংখ্যক রানে মুশফিক ক্রিজছাড়া হয়েছেন সেই ভিলিয়ার্সের হাতেই (ক্যাচ)। তবে এবার বোলার ফাঙ্গিসো।
১৯ রানে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে সাব্বিরকে হেন্ডরিকস তুলে দিয়েছেন ফেলুকওয়ায়োর তালুতে। আর মাহমুদল্লাহ রিয়াদ ব্যক্তিগত ৩ রানে নিজের ইনিংসের ফুলস্টপ টেনেছেন ফেলুকাওয়ায়োর বলে আমলার হাতে ক্যাচ দিয়ে।
সপ্তম উইকেটে সাইফউদ্দিন ও মিরাজ জুটি লড়াইয়ে আভাস দিলেও ব্যক্তিগত ১৪ রানে প্যাটারসনের শিকার হয়ে মিরাজ ফিরে গেলে টাইগারদের অলআউট হওয়াটা স্রেফ সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।
কেননা মিরাজকে ফেরানোর পরের বলেই শূন্য রানে তাসকিনকে ক্রিজছাড়া করে হ্যাট্রিকের মুখোমুখি দাঁড়ান প্যাটারসন। তবে শফিউল তাকে সতর্ক হাতে মোকাবেলা করলে সেটি আর হয়ে ওঠেনি।
শফিউল প্যাটারসনের হ্যাট্রিক আটকালেও নিজেকে উইকেটে টিকিয়ে রাখতে পারেননি। ফ্রাইলিংকের বলে ১ রানে মিলারকে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন।
কিন্ত শেষ পর্যন্ত উইকেটে ছিলেন রুবেল হোসেন ও সাইফ উদ্দিন। রুবেল ২ রানে ও সাইফ অপরাজিত ছিলেন ব্যক্তিগত ৩৯ রানে (২৭ বল)। যা ২০ ওভার শেষে দলকে এনে দিয়েছে ১৭৫ রানের সম্মানজনক এক সংগ্রহ।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) ব্লুমফন্টেইনে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে দ. আফ্রিকা।
তবে ব্যাটে নামাটা স্বাগতিকদের খুব বেশি সুখকর হয়নি। কেননা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই মিরাজের আঘাতে ক্রিজছাড়া হন হাশিম আমলা। দ্বিতীয় ওভারে মিরাজের শেষ বলটি আমলা অফ সাইডে খেলতে গেলে তা গিয়ে তার স্ট্যাম্পে আঘাত হানলে ব্যক্তিগত ৩ ও দলীয় ১৮ রানে রানে ক্রিজছাড়া হন এই প্রোটিয়া ওপেনার।
দলীয় ১৮ রানে ও ব্যক্তিগত ৩ রানে হাশিম আমলাকে ফিরিয়ে দিয়ে মেহেদি হাসান মিরাজ বাংলাদেশ শিবিরকে আশা দেখালেও সেই আশায় পানি ঢেলে দেন দুই প্রোটিয়া টপ অর্ডার এবি ডি ভিলিয়ার্স ও কুইন্টন ডি কক।
তাদের ব্যাটে ভর করে আমলাকে হারানোর বিপত্তি কাটিয়ে ওঠে দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে এই দুই টপ অর্ডার যখন দলকে বড় সংগ্রহের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখনই আবার আঘাত হানলেন মিরাজ।
তার হানা দ্বিতীয় আঘাতে রিয়াদের হাতে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ৪৯ রানে ফিরে যান বিস্ফোরক রান গেটার ডি ভিলিয়ার্স। এই রান সংগ্রহ করতে তিনি খেলেছেন ২৭টি বল। যেখানে ৮টিই চারের মার।
ভিলিয়ার্সকে হারালেও ব্যাটিং আগ্রাসন এতটুকুও কম ছিলো না দ. আফ্রিকার। সফরকারী বোলারদের উপর রীতিমত স্টিম রোলার চালিয়ে যাচ্ছিলেন ডুমিনি ও ডি কক। তবে খুব বেশিক্ষণ এমন ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি প্রোটিয়া শিবির।
১৩তম ওভারের শেষ বলে সাকিবের কুশলী ডেলিভারিতে ব্যক্তিগত ১৩ রানে ইমরুল কায়েসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন অধিনায়ক ডুমিনি।
সাকিবের পর ডুমিনিদের সাজানো ঘরে তোপ দাগালেন রুবেল হোসেন। তাতে কাজও হলো বিস্তর। ১৫তম ওভারে তার একেবারে শেষ বলে ব্যক্তিগত ৫৯ রানে এলবি’র ফাঁদে পড়ে ক্রিজছাড়া হন ওপেনার কুইন্টন ডি কক।
আর এই রান সংগ্রহ করতে তিনি খেলেন ৪৪টি বল। যেখানে চারের মার ৫টি ও ছয়ের মার ছিল ১টি।
এরপর অবশ্য আর বিপত্তি ঘটেনি। ডেভিড মিলার (২৫ রান) ও বেহারডিয়েনের (৩৬ রান) ব্যাটে ভর করে ২০ ওভারে ৪ উইকেটের বিনিময়ে ১৯৫ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পায় দ. আফ্রিকা।
বাংলাদেশ সময়: ০১৫৫ ঘণ্টা, ২৭ অক্টোবর ২০১৭
এইচএল/জেএম