সোমবার (২৭ নভেম্বর) জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে দুপুর ২টায় দিনের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক চিটাগং ভাইকিংসকে হারিয়ে খুলনাকে টপকে শীর্ষে উঠেছিল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন সাকিবের ঢাকা ডায়নামাইটস। সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হওয়া দিনের দ্বিতীয় ম্যাচেই শীর্ষস্থান নিজেদের দখলে এনেছে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের খুলনা।
চলমান বিপিএলের ৩০তম ম্যাচে মুখোমুখি হয় শিরোপা প্রত্যাশী মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের খুলনা টাইটান্স এবং পয়েন্ট টেবিলের নিচের দিকের দল ড্যারেন স্যামির রাজশাহী কিংস। টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন গতবারের রানার্সআপ রাজশাহীর দলপতি ড্যারেন স্যামি। নির্ধারিত ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে খুলনা ২১৩ রান তোলে। এটিই বিপিএলের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। ২০১৩ সালে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ঢাকা করেছিল ২১৭ রান। আর এই আসরে সিলেট সিক্সার্সের বিপক্ষে চিটাগং ভাইকিংস করেছিল ২১১ রান। ২১৪ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে রাজশাহী ১৯ ওভারে গুটিয়ে যাওয়ার আগে করে ১৪৫ রান। টাইগার পেসার শফিউল ইসলাম তুলে নেন ৫ উইকেট। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে খুলনার ওপেনার রিলে রুশো ব্যক্তিগত ৬ রান করে বিদায় নেন। আরেক ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত করেন ৪৯ রান। তার ৩১ বলের ইনিংসে ছিল ৫টি চার আর দুটি ছক্কার মার। দলপতি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ১ রান করে বিদায় নেন। এরপর উইকেটে ঝড় তোলেন আফিফ হোসেন আর নিকোলাস পুরান। ক্যারিবীয়ান উঠতি তারকা পুরান মাত্র ২৬ বলে করেন ৫৭ রান। তার ইনিংসে ছিল ৬টি চার আর তিনটি বিশাল ছক্কা।
১৪ বলে তিনটি করে চার ও ছক্কায় ৩৪ রান করেন কার্লোস ব্রাথওয়েইট। আফিফ ৩৮ বলে ৫টি ছক্কায় করেন অপরাজিত ৫৪ রান। আরিফুল ১ রানে অপরাজিত থাকেন।
রাজশাহীর জেমস ফ্রাঙ্কলিন ৪ ওভারে ৫০ রান দিলেও তুলে নেন তিনটি উইকেট। মোস্তাফিজ ৪ ওভারে ৪৯ রান খরচায় কোনো উইকেট পাননি। ৪ ওভারে ৪২ রান দিয়ে উইকেট শূন্য ছিলেন মেহেদি হাসান। কেরসিক উইলিয়াম ৪ ওভারে ৪৬ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। আর মোহাম্মদ সামি ৪ ওভারে ২২ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন।
২১৪ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে রাজশাহীর ওপেনার মুমিনুল হক ১১ আর লুক রাইট ১ রান করে বিদায় নেন। ২৩ বলে ৫টি চার আর একটি ছক্কায় ৩৬ রান করেন রনি তালুকদার। জাকির হাসান ফেরেন ১২ বলে ১৯ রান করে। দলপতি ড্যারেন স্যামির ব্যাট থেকে আসে ১ রান। দলের আইকন মুশফিক ১০ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় করেন ১১ রান। জেমস ফ্রাঙ্কলিন ১৪ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন। মেহেদি হাসান মিরাজ ২৩ বলে ২৯ রান করেন। মোহাম্মদ সামির ব্যাট থেকে আসে ১৮ রান।
খুলনার তারকা আবু জায়েদ ৪ ওভারে ৪৮ রান দিয়ে নেন দুটি উইকেট। পেসার শফিউল ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে পান ৫ উইকেট। জোফরা আরচার, আফিফ, মাহমুদুল্লাহ একটি করে উইকেট দখল করেন।
দিনের প্রথম ম্যাচে চট্টগ্রাম পর্বে স্বাগতিক চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে ৭ উইকেটে জিতেছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ঢাকা ডায়নামাইটস। টুর্নামেন্টের ২৯তম ম্যাচে টস হেরে চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে ফিল্ডিংয়ে নামে সাকিব আল হাসানের দল। নির্ধারিত ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ভাইকিংসরা তোলে ১৮৭ রান। ব্যাটে ঝড় তোলেন এনামুল হক বিজয়। ৪৭ বলে তিনটি চার আর ছয়টি ছক্কায় ৭৩ রান করেন তিনি। দলপতি লুক রঞ্চি করেন ৪০ বলে ৫৯ রান।
তবে, ১৮৮ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৮.৫ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে ডায়নামাইটস। দলের হয়ে ব্যাটে ঝড় তোলেন এভিন লুইস। ৩১ বলে তিনটি চার আর ৯টি বিশাল ছক্কায় ৭৫ রান করেন তিনি। এছাড়া, জো ডেনলি ৪৪, সাকিব অপরাজিত ২২ আর ক্যামেরুন ডেলপোর্ট অপরাজিত ৪৩ রান করেন।
রাজশাহী কিংস: ডোয়াইন স্মিথ, মুমিনুল হক, লুক রাইট, জাকির হাসান, মুশফিকুর রহিম, জেমস ফ্রাঙ্কলিন, ড্যারেন স্যামি (অধিনায়ক), মেহেদি হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ সামি, মোস্তাফিজুর রহমান, হোসেন আলী।
খুলনা টাইটান্স: নাজমুল হোসেন শান্ত, রিলে রুশো, আফিফ হোসেন, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), নিকোলাস পুরান, আরিফুল হক, কার্লোস ব্রাথওয়েইট, জোফরা আরচার, কাইল অ্যাবোট, শফিউল ইসলাম, আবু জায়েদ।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪২ ঘণ্টা, ২৭ নভেম্বর ২০১৭
এমআরপি