ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

কোহলি-ধোনির জার্সিরও ‘অবসর’ চান ভারতীয়রা

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৭
কোহলি-ধোনির জার্সিরও ‘অবসর’ চান ভারতীয়রা ছবি: সংগৃহীত

ফুটবলে দেশের সেরা খেলোয়াড়টি ‘১০ নম্বর’ জার্সি পড়ে খেলেন। ক্রিকেটে গত সেপ্টেম্বরে ভারতের পেস বোলার শার্দুল ঠাকুর দেশটির ক্রিকেটে ‘আইকনিক দশ নম্বর’ জার্সি পড়ে খেলতে নেমেছিলেন। এর পর থেকেই সমালোচনা শুরু হয়। কারণটা বোধ হয় সবারই জানা। এই ‘দশ নম্বর’ জার্সি গায়ে চাপিয়ে ভারতের ক্রিকেট ঈশ্বর খ্যাত শচীন টেন্ডুলকার মাঠে নামতেন।

জীবন্ত কিংবদন্তির অবসরের পর আর কোনো ভারতীয় ক্রিকেটার টেন্ডুলকারের ‘দশ নম্বর’ জার্সিটা গায়ে চাপানোর সাহস করেননি। যেটা করেছিলেন শার্দুল ঠাকুর।

তাতে সমালোচনা ঝড়ে পড়ে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডও। কেন শার্দুল ঠাকুরকে টেন্ডুলকারের আইকনিক জার্সি গায়ে খেলার অনুমতি দেওয়া হলো সেটি নিয়ে তোলপাড় ছিল ভারত থেকে শুরু করে পুরো ক্রিকেট বিশ্ব। শার্দুল ঠাকুর অবশ্য এরপর থেকে ৫৪ নম্বর জার্সিতেই ফিরে যান।

সম্প্রতি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড শচীনের ‘১০’ নম্বর জার্সিকে অবসর দিতে ঘোষণা করেছে। দেশটির ক্রিকেট বোর্ড চাইছে টেন্ডুলকারের আইকনিক এই জার্সি গায়ে যেন আর কোনো ভারতীয় ক্রিকেটার খেলতে না পারেন সেই ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করা।

তাতে, ভারতীয় ক্রিকেট পাগলরা বেজায় খুশি। এদিকে, ক্রিকেট ভক্তরা ভারতের বর্তমান দলপতি বিরাট কোহলি, সাবেক দলপতি মহেন্দ্র সিং ধোনির জার্সিকেও অবসরে পাঠানোর দাবি তুলেছেন। কোহলি তার ট্রেডমার্ক ‘১৮’ এবং ধোনি ‘৭’ নম্বর জার্সি গায়ে খেলছেন।

.কোহলি আর ধোনি ভক্তদের এমন দাবি অযৌক্তিক নয়। কোহলি ‘১৮’ নম্বর জার্সির পেছনে আছে বেদনার ইতিহাস। ২০০৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর কোহলির বাবা প্রেম কোহলি না ফেরার দেশে চলে যান। তখনো অবশ্য ভারতের মূল দলের আশপাশেও তিনি নেই, দিল্লির হাজারো ক্রিকেট-পাগল তরুণের ভিড়ে স্বপ্ন নিয়ে মাঠে মাঠে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। মাথার ওপর বটবৃক্ষ হয়ে থাকা বাবা তাকে প্রথম ব্যাট ধরা শিখিয়েছিলেন। ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা গড়ে দেওয়ার কাজটিও তিনিই করেছিলেন। কোহলির আজকের বিরাট হয়ে ওঠার প্রেরণা ছিলেন তিনি। সেই প্রেরণা, সেই ভরসা যখন চলে গেলেন, সেটি মানসিকভাবে বেশ বড় ধাক্কা দিয়ে যায় কোহলির মনে। বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে তখনকার ১৮ পূর্ণ না হওয়া কোহলি আরও বড় প্রতিজ্ঞাই করে বসেন।

এরপরই শুরু হয়েছিল কোহলির স্বপ্নযাত্রা। ভারতের অনূর্ধ্ব ১৯ দলের অধিনায়ক হয়ে ২০০৮ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জেতা, ধীরে ধীরে ভারতীয় দলে নিয়মিত হওয়া, আজকের ‘শচীন টেন্ডুলকারের উত্তরসূরি’ হয়ে যাওয়া। সবই ওই ১৮ ডিসেম্বর, ২০০৬ সালে ১৮ বছর বয়সী তরুণের নতুন করে নিজেকে চেনানোর ফল। এরপর থেকে ‘১৮’ জার্সিটাকে পিঠে ঠিকই বয়ে নিয়ে চলছেন ভারতীয় অধিনায়ক কোহলি।

আর ভক্তরা ধোনির জার্সিকে অবসরে পাঠানোর দাবি তুলেছেন ভিন্ন কারণে। ধোনি নেতৃত্বে যেমন সফল, একজন উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান হিসেবেও দুর্দান্ত। বিশ্ব ক্রিকেটে তিনি পরিচিত ‘ক্যাপ্টেন কুল’ হিসেবে। তাই ভক্তদের চাওয়া টেন্ডুলকারের পাশাপাশি ধোনির জার্সিটিও যেন দেশটির ক্রিকেট বোর্ড তুলে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।

ধোনির ‘৭’ নম্বর জার্সির ইতিহাস অবশ্য বেদনাদায়ক নয়। ছোটবেলায় ফুটবলকে মনেপ্রাণে ভালোবাসতেন ধোনি, করতেন গোলকিপিং। ফুটবলার হিসেবে এই ৭ নম্বর জার্সি ছিল ধোনির ফেভারিট। তাই এই জার্সিকে বেছে নিয়েছিলেন ধোনি। আরও একটা কারণ আছে ধোনির ৭ নম্বর জার্সির নেপথ্যে। তার জন্মদিন ৭ জুলাই। তাই জন্মদিনের তারিখকে জার্সি নম্বর বেছে নেন ধোনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৪ ঘণ্টা, ৩০ নভেম্বর ২০১৭
এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।