ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ক্রিকেট

সাংবাদিককে ‘পাগল’ বললেন মল্লিক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০১৭
সাংবাদিককে ‘পাগল’ বললেন মল্লিক ছবি: শোয়েব মিথুন / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেট নিয়ে প্রশ্ন তোলায় এক সাংবাদিককে ‘পাগল’ বলে অপমান করলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রভাবশালী পরিচালক ইসমাইল হায়দার মল্লিক। যে সাংবাদিকদের বলা হয় জাতির দর্পণ তাদেরই যখন কেউ পাগল বলে মন্তব্য করে তখন সেই ব্যক্তির হিতাহিত জ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন উঠবে এটাই স্বাভাবিক।

সঙ্গত কারণেই এখন তার হিতাহিত জ্ঞান নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। আদৌ কী বাংলাদেশ ক্রিকেটের এমন গুরুত্বপূর্ণ আসনে তার থাকা শোভা পায়?ছবি: শোয়েব মিথুন / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমকী দোষ ছিল ওই সাংবাদিকের? বিপিএলে চার ছক্কার শ্বাসরুদ্ধকর খেলা উপভোগ করতেই তো টাকা দিয়ে টিকিট কিনে মাঠে আসেন ক্রিকেট প্রেমীরা।

কিন্তু মাঠে আসার পর যখন তারা দেখেন মাত্র ৬৭, ৯৭ রানেই ইনিংস গুটিয়ে যাচ্ছে! তখন তাদের মানসিকতা কেমন থাকে?

তাদের কী আর মাঠে এসে খেলা দেখার আগ্রহ থাকে? যদি বলা হয় এই স্বল্প রানের জন্যই দেশের সকল ভেন্যুর তুলনায় মিরপুরের দর্শক সমাগম বেশি হয়, ভুল হবে? মোটেই না। শুধু দর্শকই কেন? মিরপুরের বন্ধা উইকেট নিয়ে শনিবারের (২ ডিসেম্বর) ম্যাচ শেষে বিষাদগার করেছেন কুমিল্লা দলপতি তামিম ইকবাল ও রংপুর দলপতি মাশরাফি বিন মর্তুজাও। তামিম তো ‘জঘন্য’ই বলে বসেন।

বিপিএলের চলতি আসরে সিলেট ও চট্টগ্রাম পর্বে যে রান বন্যা দেখা গেছে শের-ই-বাংলায় তা একেবারেই নেই। চট্টগ্রামের প্রতিটি ম্যাচেই গড়ে ১৭০-১৮০ করে রান দেখা গেছে। বিপিএলের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহও (২১৩) কিন্তু ওখানেই দেখা গেছে। ছবি: শোয়েব মিথুন / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমসিলেটর গড় অতটা বেশি না হলেও মিরপুরের মতো এতটা লোয়ার স্কোরিং ছিল না। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত আটটি ম্যাচের সর্বনিম্ন স্কোর ছিল ১৩৫ রান। আর সর্বোচ্চ ২০২ রান। যেখানে মিরপুরের চিত্র সম্পূর্ণই উল্টো।   

রান উৎসব দূরে থাক, টি-টোয়েন্টিতে স্বাভাবিক যে রান (১২০-১৪০) তাই বা এখানে আসছে কই? ঢাকার প্রথম পর্বে ব্যতিক্রম ছিল একটি বা দুটি ম্যাচ (ঢাকা ডায়নামাইটসের ২০১ রান)। কিন্তু ব্যতিক্রম তো আর উদাহরণ হতে পারে না।

সে কারণেই রোববার (৩ ডিসেম্বর) বিসিবি কার্যালয়ের সামনে ইসমাইল হায়দার মল্লিকের কাছে জানতে চেয়েছিলেন মিরপুরের উইকেট কেন এমন আচরণ করছে? কেন তা জানতে চেয়েছিলেন সেই সাংবাদকি। তার উত্তরে রেগে দিয়ে মেজাজ হারিয়ে মল্লিক বললেন, আপনাকে তো একই কথা বললাম। আপনি যদি বুঝতে না পারেন পাগলকে তো আর বোঝাতে পারবো না। উত্তর তো ক্লিয়ার করে দিয়েছি। এখানে তো বাংলাদেশ দল খেলেছে। ম্যাচ জিতেছে। একই উইকেটে ২০৫ রানও হয়েছে। ’ছবি: শোয়েব মিথুন / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমসাংবাদিককে পাগল বলার প্রসঙ্গ থেকে এবার আসি তিনি উইকেট নিয়ে ব্যাখ্যাটি কী দিয়েছিলেন, ‘এই মাঠেই টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিও হয়। আমাদের উইকেট জাতীয় দলের কথা চিন্তা করে বানানো হয়। জাতীয় দলের সুবিধার কথা চিন্তা করে বানানো হয়। এই উইকেট রাতারাতি পরিবর্তন করা যায় না। এটা পরিবর্তন করতে তিন থেকে চার মাসের মতো সময় লাগে। ’

মিরপুরের উইকেট নিয়ে কতুটুকু সঠিক তিনি বলেছেন তার প্রমাণ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদের উইকেটের দিকে তাকালেই তো হয়। সেখানেও তো টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি নিয়মিতই হচ্ছে। এরপরও এবারের সবোর্চ্চ রানের স্কোরটি কিন্তু সেখানেই।      

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৬ ঘণ্টা, ৩ ডিসেম্বর ২০১৭
এইচএল/এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।