নিউজিল্যান্ড সফরে বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ এখন কিউই পেসারদের সামলানো। ঘরের মাটিতে তাদের পেস আক্রমণ কতটা ভয়ঙ্কর তা একটা পরিসংখ্যানে চোখ বুলালেই ধরা পড়বে।
সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৮ উইকেটের বড় পরাজয় বরণ করেছে বাংলাদেশ। ওই ম্যাচে ট্রেন্ট বোল্ট, লোকি ফার্গুসন এবং ম্যাট হেনরি, এই তিন পেসার মিলে ৭ উইকেট তুলে নিয়েছেন। তাদের পেস, সুইং আর লাইন একদম নিখুঁত। ফলে দ্বিতীয় ম্যাচেও বেশ ভুগতে হবে টাইগারদের।
ব্যাট হাতে অবশ্য কিউই ব্যাটসম্যানরা অতোটা ভয়ঙ্কর নন। শেষ পাঁচ ওয়ানডেতে ১০৯ করা কিউই অধিনায়কের ফর্ম সুবিধাজনক নয়। কিন্তু টার্গেট কম হলে কে ফর্মে আছে আর কে নেই তা ভেবে লাভ নেই। তবে বাংলাদেশের জন্য বিপদের কারণ হতে পারেন মার্টিন গাপটিল। আগের ম্যাচেই নিজের আসল চেহারা দেখিয়ে দিয়েছেন তিনি। অপরাজিত ১১৭ রানের ইনিংস আর হেনরি নিকোলসের সঙ্গে তার ১০৩ রানের জুটিতেই বড় জয় নিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে ঘরের মাঠে টানা ১১তম জয় তুলে নিয়েছে কিউইরা।
মাশরাফি বিন মর্তুজার হাতে এখন উপায় একটাই, কিউই পেসারদের সামলাতে ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে আলোচনা করা। নেপিয়ারের ম্যাচে ৫০ ওভার পর্যন্ত ব্যাট করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন তামিম-মুশফিকরা। অধিকাংশ ব্যাটসম্যানই বড় শট খেলতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন। কিন্তু এমন প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও রান করা সম্ভব তা দেখিয়ে দিয়েছেন মোহাম্মদ মিঠুন। বাকিদেরও একই পথ অবলম্বন করতে হবে। এছাড়া উপায়ও নেই আপাতত।
নেপিয়ারে কোনো বাংলাদেশি বোলারই কিউই ব্যাটসম্যানদের জন্য বিপদের কারণ হতে পারেননি। জেতার জন্য কিউইদের ৪৪ ওভার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হলেও এই সময়ে ৭জন বোলার ব্যবহার করেছেন দলপতি মাশরাফি। ঠিক এখানেই সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতি টের পাওয়া গেছে। তবে মাশরাফি, সাইফউদ্দিন, মোস্তাফিজুর রহমান, মেহেদি হাসান মিরাজ ও কয়েকজন পার্ট-টাইম বোলার নিয়ে বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ নেহাত মন্দ নয়।
বাংলাদেশের জন্য দুঃসংবাদ, ক্রাইস্টচার্চে ৯ ওয়ানডের ৮টিতেই জয় পেয়েছে নিউজিল্যান্ড। এর মধ্যে সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচেই জয়ের দেখা পেয়েছে কিউইরা। তবে এই মাঠে টস একটা বড় ফ্যাক্ট। কারণ, গত ৫ ম্যাচের ৪টিতেই আগে ব্যাটিং করা দল জয় পেয়েছে। আর ওই চার ম্যাচে প্রথম ইনিংসে জয়ী দল ২৯৪ গড়ে রান তুলেছে। অর্থাৎ, ৩০০ ছুঁইছুঁই রান না হলে এই মাঠে জেতা কঠিন।
এখন পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তাদেরই বিপক্ষে প্রথম জয়ের সন্ধান করছে বাংলাদেশ। আর তা পেতে হলে কোনো ভুল করা যাবেনা। সবগুলো সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। বিশেষ জ্বলে উঠতে হবে তামিম-মুশফিকদের। কারণ, ম্যাচটি বিগ স্কোরিং ম্যাচ হতে যাচ্ছে। যদি কিউইরা আগে ব্যাটিং করে নিশ্চিত বড় স্কোর গড়বে তারা। আর একই কাজ করতে হবে তামিমদেরও। এছাড়া খুব একটা বিকল্প নেই বললেই চলে।
সম্ভাব্য রেকর্ড:
- আর মাত্র তিনটি ডিসমিসাল হলেই উইকেটরক্ষক হিসেবে সর্বকালের সর্বোচ্চ ডিসমিসালের তালিকায় দশে স্থান করে নেবেন মুশফিক।
- আর মাত্র ৬৪ রান হলেই ৮ হাজার ওয়ানডে রান পাওয়া দ্বিতীয় কিউই ব্যাটসম্যান হিসেবে নাম লেখাবেন রস টেইলর। আর ৭১ রান করতে পারলে তিনি ছাড়িয়ে যাবেন সাবেক কিউই অধিনায়ক স্টিফেন ফ্লেমিংয়ের রেকর্ড (৮০০৭ রান)।
বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ
মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মোস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ মিঠুন, মাহমুদউল্লাহ, সাব্বির রহমান, শফিউল ইসলাম এবং মেহেদি হাসান মিরাজ।
নিউজিল্যান্ডের সম্ভাব্য একাদশ
কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), রস টেইলর, মার্টিন গাপটিল, টম ল্যাথাম (উইকেটরক্ষক), জেমস নিশাম, কলিন ডি গ্যান্ডহোম, মিচেল স্যান্টনার, হেনরি নিকোলস, ম্যাট হেনরি, লোকি ফার্গুসন এবং ট্রেন্ট বোল্ট।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৯
এমএইচএম