বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) প্রথম কোয়ালিফায়ারে রোমাঞ্চ তৈরি করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারিয়ে ফাইনালে উঠে গেল ফরচুন বরিশাল। ম্যাচের শেষ ওভারে কুমিল্লার দরকার ছিল ১৮ রান।
সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) মিরপুর শের ই বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ১৪৩ রানের মাঝারি সংগ্রহ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় বরিশালকে। জবাবে মাঠে নেমে ধীরগতির সূচনায় ১৫ ওভারে ১০০ রানে পৌঁছায় কুমিল্লা। শেষ পাঁচ ওভারে মাত্র ৪৪ রান দরকার হলেও বরিশালের বোলারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে তা পারেনি ইমরুল কায়েসের দল। ১৩৩ রানেই থামতে হয় তাদের। ফলে ১০ রানের জয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে সাকিব আল হাসানের দল।
বরিশালের হয়ে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু করেন মুনিম ও গেইল। ৩৮ বলে ৫৮ রানের জুটি গড়েন এ দুই ওপেনার। সপ্তম ওভারে বল করতে এসেই গেইলকে শিকার করেন শহিদুল ইসলাম। ১৯ বলে ৪ চারে ২২ রান করে সাজঘরে ফেরেন ইউনিভার্স বস। দশম ওভারে তানভিরের বলে এলবিডব্লিউ হন ঝড়ো ব্যাট করা মুনিম। ৪ ছক্কা ও ২ চারে ৩০ বলে ৪৪ রান করে বিদায় নেন এই ওপেনার।
মুনিমের বিদায়ের পর ব্যাট করতে নেমে থিতু হতে পারেননি টানা পাঁচ ম্যাচ প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচের রেকর্ড গড়া সাকিব আল হাসান। রান আউট হয়ে বরিশালের এই অধিনায়ক বিদায় নিলে বিপর্যয়ে পড়ে দল। এরপর ১৩ রান করে বিদায় নেন তিনে ব্যাট করতে নামা নাজমুল হোসেন শান্তও। ১ রানে মঈন আলীর শিকার হন তৌহিদ হৃদয়। ব্যাট হাতে কিছুক্ষণ থিতু হয়ে দলের সংগ্রহ বাড়ান ডোয়াইন ব্রাভো ও জিয়াউর রহমান। পঞ্চদশ ওভারে স্ট্যাম্পিং হয়ে ১৭ রানে বিদায় নেন জিয়াউর।
ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়া বরিশাল এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায়। ১৭ রানে ব্রাভোর বিদায়ের পর ১১ রানে উইকেট হারান নুরুল হাসান সোহানও। শেষদিকে ব্যাট করতে নেমে ৬ রানে অপরাজিত থাকেন মুজিব উর রহমান। ১৪৩ রানে থামে বরিশালের ইনিংস। কুমিল্লার পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেন শহিদুল। জোড়া উইকেট পান মঈন। একটি করে উইকেট শিকার করেন সুনীল নারাইন ও তানভির ইসলাম।
জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ধীরগতির শুরু করেন কুমিল্লার দুই ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও লিটন দাস। ৬৪ বলে ৬২ রানের জুটি গড়ে একাদশ ওভারে মেহেদি হাসান রানার শিকার হন জয়। ৩০ বলে ২০ রান নিয়ে সাঝঘরে ফেরেন তিনি। পরের ওভারেই ৫ রান যোগ করতেই শফিকুল ইসলামের বলে উইকেট হারান ইমরুল কায়েস। একই ওভারে বিদায় নেন ৩৫ বলে ৩৮ রান করা লিটন দাস।
দল যখন ব্যাটিং বিপর্যয়ে তখন হাল ধরেন ফাফ ডু প্লেসি ও মঈন আলী। ২১ বলে ৩৬ রানের জুটি গড়েন তারা। ষোড়শ ওভারে মঈন আলীকে বোল্ড করেন ব্রাভো। ১৫ বলে ২২ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেন তিনি। ব্যাট করতে নেমে ডু প্লেসিকে সঙ্গ দেন নারাইন। কিন্তু শেষদিকে এসে মেহেদি হাসানর রানার বলে তৌহিদ হৃদয়ের হাতে ক্যাচ তুলে দেন ডু প্লেসি। এতেই জয়ের আশা একরকম শেষ হয়ে কুমিল্লার। পরবর্তী তিন বলে ২ রান দিয়ে বরিশালকে জয়ের কাছে নিয়ে যান রানা।
শেষ ওভারে কুমিল্লার প্রয়োজন ছিল ১৮ রান। বল করতে আসেন মুজিব উর রহমান। স্ট্রাইকে থাকা মাহিদুল প্রথম বলেই স্ট্যাম্পিং হয়ে বিদায় নেন। দ্বিতীয় বলে ব্যাট করতে নামা নাহিদুল ইসলাম ১ রান নিলে স্ট্রাইকে আসেন নারাইন। তৃতীয় বলে ছক্কা মেরে কুমিল্লার জয়ের আশা বাঁচিয়ে রাখেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই অলরাউন্ডার। কিন্তু চতুর্থ বলে রান পাননি তিনি। পঞ্চম বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ১৭ রানে বিদায় নেন। আর এতেই ফাইনালে যাওয়া হয়নি কুমিল্লার। ১০ রানের পরাজয়ে আগামী বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) কোয়ালিফায়ারে চট্টগ্রামের মুখোমুখি হতে হবে ইমরুল কায়েসদের।
বরিশালের হয়ে ৩ ওভারে ১৫ রান খরচায় ২ উইকেট শিকার করে প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ হন মেহেদি হাসান রানা। এছাড়া জোড়া উইকেট শিকার করেন মুজিব ও শফিকুল। একটি উইকেট পান ব্রাভো।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২২
আরইউ