আশিদা ফার্নান্দোর বলটা ব্যাটের কানায় লেগেছিল মুশফিকুর রহিমের। লেগ স্লিপ দিয়ে সেটা পার হয় সীমানা দড়ি।
এই আক্রমণটা অবশ্য থাকল না তার ব্যাটে। ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরিটা পেয়েছেন, তবে ম্যাচটাকে ড্রয়ের দিকে নিয়ে যাওয়ার বড় কৃতিত্বটাও মুশফিকেরই। বাংলাদেশ অবশ্য পেয়েছে লিড, ম্যাচের শেষদিনে শ্রীলঙ্কার চেয়ে ২৯ রানে এগিয়ে থেকেই মাঠে নামবেন মুমিনুলরা। শেষ বিকেলে প্রতিপক্ষের দুই উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে স্বস্তি এনে দিয়েছেন বোলাররা। শ্রীলঙ্কার পক্ষে ৪৫ বলে ১৮ রান করে অপরাজিত আছেন করুণারত্নে।
৩ উইকেট হারিয়ে ৩১৮ রান নিয়ে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে চতুর্থ দিন শুরু করে বাংলাদেশ, বৃষ্টির কারণে এদিন খেলা শুরু হয়েছিল আধঘণ্টা পরে। আগের দিন দারুণ ছন্দ থাকা মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস পাড় করেন পুরো প্রথম সেশন। রান অবশ্য তুলতে পেরেছিলেন কেবল ৬৭।
সেঞ্চুরির পথে থেকে লাঞ্চে যান দুজনেই। কিন্তু সেখান থেকে ফিরে যেন মতিভ্রম হয় লিটনের। রাজিথার করা প্রথম বলে জায়গায় দাঁড়িয়ে অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বলে শট খেলতে যান তিনি। যা হওয়ার তা-ই হয় তাতে! উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা নিরোশান ডিকভেলার হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ১৮৯ বলে ৮৮ রান করে আউট হন লিটন।
তৃতীয় দিনে ১৩৩ রানে অপরাজিত থেকে রিটায়ার্ড হার্ট হয়েছিলেন তামিম। লিটনের বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন তিনি। নিজের ইনিংসটাকে অবশ্য আর লম্বা করতে পারেননি এই ওপেনার। রাজিথার বলের লাইন মিস করে বোল্ড হন। ১৫ চারে ২১৮ বলে ১৩৩ রানেই ইতি হয় তামিমের ১০ম টেস্ট সেঞ্চুরির।
সাকিব আল হাসানও ৩ চারে ৪৪ বলে ২৬ রানেই সাজঘরে ফেরত যান। মুশফিকুর রহিম অবশ্য তুলে নেন ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরি। কিন্তু যখনই ইনিংসটাকে লম্বা করার সময়, তখন মুশফিক ফেরেন সুইপ খেলতে গিয়ে। ২৮২ বলের ইনিংসে ৪টি চার মেরে ১০৫ রানেই থামেন তিনি।
এরপর বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হতে আর বেশি সময় লাগেনি। ৪৫ বলে ২০ রান করে আউট হন তাইজুল ইসলাম। শরিফুল আঘাত পেয়ে হন রিটায়ার্ড হার্ট। ৪৬৫ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। লিড পায় ৬৮ রানের।
লঙ্কানদের পক্ষে ২৪ ওভার ১ বল হাত ঘুরিয়ে ৬০ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন রাজিথা। আশিদা ফার্নান্দো তিন আর ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ও লাসিথ এম্বোলদোনিয়া নেন একটি করে উইকেট।
শেষ বিকেলে ব্যাটিংয়ে নামে শ্রীলঙ্কাও। তাদের শুরুটাও অবশ্য খুব একটা ভালো হয়নি। অধিনায়ক দিমুথ করুণারত্নের সঙ্গে ভুল বুঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে ফেরেন ওশাদা ফার্নান্দো। তাইজুলের ডিরেক্ট হিটে ফেরার আগে ৩৬ বলে ১৯ রান করেন তিনি।
এরপর টাইগারদের আরও এক উইকেট এনে দেন তাইজুলই। এবার অবশ্য বল হাতে। লাসিথ এম্বোলদোনিয়াকে করা তার বল অফ স্টাম্পের অনেক বাইরে পড়ে আঘাত হানে স্টাম্পে। তার এই আউটে যেন ইঙ্গিতই মিলল, স্পিনারদের জন্য ইতোমধ্যেই কার্যকরী হতে শুরু করেছে উইকেট। এমনটা হলে পঞ্চম দিনে বেশ রোমাঞ্চই ছড়ানোর কথা চট্টগ্রাম টেস্ট।
বাংলাদেশ সময় : ১৮১০, মে ১৮, ২০২২
এমএইচবি