চট্টগ্রাম: পৃথিবীতে বড় বড় কাজ বেশি টাকা দিয়ে হয় না। যদি বেশি টাকা দিয়ে কাজ হতো, তাহলে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বড় বিজ্ঞানী, সাহিত্যিক ও শিল্পীরা হতো মধ্যপ্রাচ্যে।
শুক্রবার (৩ মার্চ) বিকেল ৪টায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অবৈতনিক বিদ্যালয় স্বপ্নবাগিচা বিদ্যানিকেতনের আয়োজনে টাইগারপাস রেলওয়ে কলোনি মাঠে দুই দিনব্যাপী স্কুল উৎসবের উদ্বোধনকালে খ্যাতিমান লেখক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে গণিত অলিম্পিয়াড, বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডসহ অনেক প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত। আমি দেখেছি এসব জায়গায় শুধু ধনী পরিবারের সন্তানরাই নয়, অনেক মধ্যবিত্ত এবং নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মেধাবী সন্তানরাও অংশ নেয় এবং উত্তীর্ণ হয়। তাই আমাদের কাজ হলো সবক্ষেত্র থেকে আমাদের মেধাবীদের খুঁজে বের করা।
তিনি বলেন, আমরা দেশের সব ছেলেমেয়েকে লেখাপড়া করিয়ে সামনে এগিয়ে আনতে চাই। স্বপ্নবাগিচা তাদের মতো আরও কিছু সংগঠন নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে এই কাজটি করছে। যা শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত শিশুদের শিক্ষায় আলোয় আনতে সাহায্য করবে।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সাবেক সচিব অধ্যাপক আবদুল আলিমের সভাপতিত্বে প্রথম দিনের অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. শফিক হায়দার চৌধুরী।
সকাল ১০টায় পরিত্যক্ত প্লাস্টিক সামগ্রী পুনর্ব্যবহার করার কর্মশালার মধ্য দিয়ে উৎসবের সূচনা করা হয়। এরপর একে একে আয়োজিত হয় লোকনকশা কর্মশালা, শোভাযাত্রা ও উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করে চট্টগ্রামের অগ্নিবীণা পাঠাগারের সদস্যরা। নৃত্য ও গান পরিবেশন করে বান্দরবানের পাওমাং শিশু সদন। নৃত্য ও গান পরিবেশন করে খাগড়াছড়ির ‘পাঠশালা বিন্দু থেকে’। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ‘প্রীতম ও বন্ধুরা’ এবং ব্যান্ড দল ‘মাদল’ অংশ নিয়েছে।
স্কুল উৎসব আয়োজনের সদস্যসচিব এবং স্বপ্নবাগিচা বিদ্যানিকেতনের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহেদুল আলম বলেন, ২০১৯ সালে শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত ৩০ জন শিশুদের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় স্বপ্নবাগিচা বিদ্যানিকেতন। প্রতিষ্ঠার ৫ বছর পর বর্তমানে রেলওয়ে কলোনি এলাকায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ১৫০ জন শিশু এই বিদ্যালয় থেকে নিয়মিত পাঠ নিচ্ছে। পাঠদানের পাশাপাশি সংগঠনের আয়োজনে চালু হয়েছে স্বপ্নবাগিচা ছুটির দিনের পাঠশালা এবং স্বপ্নবাগিচা আরোগ্য নিকেতন। দরিদ্র এবং শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত শিশুদের ধূসর ও মলিন জীবনে উৎসবের আমেজ নিয়ে আসতেই স্কুল উৎসব আয়োজন করা হয়েছে। দুইদিনব্যাপী উৎসবে পরিবেশিত হবে শিশুদের নানা কর্মশালা, ছবি আঁকার মেলা, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০২৩
এআর/পিডি/টিসি