চট্টগ্রাম: দেশে কোটি টাকার ‘পরীর পালং খাট’ একটিই তৈরি হয়েছিল খাগড়াছড়িতে। সেগুন কাঠের সেই খাট উঠেছিল রাজধানীর পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী এক্সিবিশন সেন্টারের ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায়।
ব্যতিক্রমী সৃজনশীল উদ্যোগের কারণে এ খাট নিয়ে কৌতূহল রয়েছে সাধারণ মানুষের। একনজর দেখা, একটু ছোঁয়া, একটি সেলফি তুলতে চান অনেকেই। প্রয়োজন বুঝে উদ্যোক্তারা টিকিটে আয়োজন করেছেন। জনপ্রতি ১০ টাকা। তবুও ভিড় সামলাতে হিমশিম স্টলের মালিক ও নিরাপত্তাকর্মীরা।
২০ লাখের বেশি মানুষের সমাগম হয় চট্টগ্রামের এ বাণিজ্য মেলায়। এর মধ্যে মেলা প্রাঙ্গণে চেম্বারের অস্থায়ী কার্যালয়ের পাশেই ছোট্ট পরিসরের স্টলে প্রদর্শিত হচ্ছে খাটটি।
খাটটির ডিজাইনার ও মালিক খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলার মো. নুরুন্নবী। মেশিনের ব্যবহার ছাড়াই দৃষ্টিনন্দন হাতের কারুকাজ, নিখুঁত ফিনিশিং, সাধারণের মধ্যে অসাধারণ নৈপুণ্যের ডিজাইনের কারণেই সবার আগ্রহ খাটটি দেখার। খাটের চার কোণে দাঁড়িয়ে আছে চারটি কাঠের তৈরি পরী। পরীর পাখা দুইটিও হয়েছে চমৎকার। চার পরীর হাতে রয়েছে প্রজাপতি। বিভিন্ন অংশে আরও ১২টি ছোট পরী রয়েছে। চারটি চাঁদ ও ছয়টি সূর্য রয়েছে খাটে। খাটের পাঠাতনগুলো ভাঁজ করে তুলে রাখা যায়।
২০১৭ সালে এক সহকারীকে নিয়ে খাট তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। তিন বছর দুই মাসে কাজ সম্পন্ন করেছেন তারা। কারিগরের মজুরিসহ প্রায় ৪০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। প্রায় ২০০ ঘনফুট কাঠ থেকে ৮৫ ঘনফুট কাঠের ফাইবার বের করা হয়েছিল রাজকীয় এ খাট তৈরিতে।
স্টলের একজন কর্মী বাংলানিউজকে বলেন, এটি ইউনিক ডিজাইনের খাট। বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের বাণিজ্য মেলায় ইতিমধ্যে ১২ লাখ টাকা দর উঠেছে এ খাটের। ঢাকায় অর্ধকোটি টাকা দর উঠেছিল। তবে বিক্রির বিষয়টি খাটের মালিকের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে চূড়ান্ত হবে।
খাট দেখতে আসা গৃহিণী হুরে জান্নাত কাউসার বাংলানিউজকে বলেন, অনলাইন, টেলিভিশন, ইউটিউব, দৈনিক পত্রিকায় এ খাটের খবর অনেক দেখেছি। ঢাকা বাণিজ্যমেলায় যখন খাটটি তোলা হয়েছিল শঙ্কায় ছিলাম বিক্রি হয়ে যাবে। তাহলে তো আর দেখার সুযোগ পাবো না। অবশেষে সেই স্বপ্ন পূরণ হলো। খুব খুশি হয়েছি আমি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রুবাইয়াত বাংলানিউজকে বলেন, খাটটি নিঃসন্দেহে আনকমন ডিজাইনের। দেখতে পেরে খুব ভালো লাগছে। তবে এর দামটা কোটি টাকা বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে না।
বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০২৩
এআর/পিডি/টিসি