চট্টগ্রাম: পবিত্র রমজানে পণ্য কেনায় সংযমের পরিচয় দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ক্যাব নেতারা বলেছেন, এক মাসের কেনাকাটা একসঙ্গে না করে প্রতি সপ্তাহে করলে বাজারে চাপ পড়বে না। নিত্যপণ্যের বাজারে জোগান ও সরবরাহ ঠিক রাখতে ইফতার সামগ্রী বিতরণের পরিবর্তে নগদ অর্থ বিতরণ করতে হবে।
সোমবার (২০ মার্চ) রিয়াজউদ্দিন বাজারে রমজানে নিত্যপণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে ব্যবসায়ীদের অতিমুনাফা আদায় থেকে সংযম প্রদর্শনের দাবিতে বাজার ভিত্তিক প্রচারণা কর্মসূচিতে ক্যাব নেতারা এসব কথা বলেন।
তারা বলেন, ব্রয়লার মুরগি উৎপাদনকারীদের সঙ্গে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সভায় জানা যায় ১ কেজি মুরগি উৎপাদনে খরচ ১২৫-১৩০ টাকা আর ভোক্তা পর্যায়ে বিক্রি হয় ২৫০ টাকায়। লাভের এই বিশাল পাহাড় শুধু ব্রয়লার মুরগি নয় সব নিত্যপণ্যের দামে এভাবে অতি মুনাফার কারণে বর্তমানে জীবন জীবিকা কঠিন বাস্তবতায়। ব্যবসায়ীরা ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধ, আর্ন্তজাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধি, ডলার ও এলসির সংকটসহ নানা অজুহাত দেখালেও সব পণ্যে এসবের যৌক্তিকতা খুঁজে পাওয়া কঠিন। সেকারণে অতিমুনাফার এখন সামাজিক সংক্রমন ঘটেছে। এ সুযোগে ব্যবসায়ীরা একবার সয়াবিন, একবার পেঁয়াজ, একবার ডাল, আটা-ময়দা এভাবে প্রতিটি পণ্যের বাজারে অস্থিরতা তৈরি করছেন। গুটিকয়েক অসাধু ব্যবসায়ীদের নিত্যপণ্য মূল্যের বাজারে অতিমুনাফা ও তাদের নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের কালক্ষেপণে সরকারের সব অর্জনকে ম্লান করে দিচ্ছে। আর এভাবে বিষয়টিকে অবজ্ঞার ফল দীর্ঘমেয়াদে সরকারের জনপ্রিয়তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম ও ক্যাব যুব গ্রুপের উদ্যোগে গণঅবস্থান ও বাজারভিত্তিক প্রচারণা কর্মসূচির অংশহিসেবে আয়োজিত প্রচারাভিযানে অংশ নেন ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন।
ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি আবু হানিফ নোমানের সঞ্চালনায় সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি সালামত আলী, বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি ইলিয়াছ ভুইয়া, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি সালেহ আহমদ সুলেমান, রিয়াজউদ্দিন বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি এম সাইফুদ্দিন, রিয়াজউদ্দিন বাজার আড়তদার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক সিবলী, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস, পাঁচলাইশের সাধারণ সম্পাদক সেলিম জাহাঙ্গীর, পাহাড়তলীর হারুন গফুর ভুইয়া, জামালখান ওয়ার্ড সভাপতি সালাহউদ্দীন আহমদ, সদরঘাট সভাপতি শাহীন চৌধুরী, চান্দগাঁও থানা সভাপতি মোহাম্মদ জানে আলম, সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল ফারুকী, মহানগর নির্মাণ শ্রমিক লীগের সভাপতি এমএ আলিম রানা, বোয়ালখালী ইউপি চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি নুর মোহাম্মদ চেয়ারম্যান, ক্যাব চান্দগাঁও ওয়ার্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুর রহমান, ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগরের নিলয় বর্মণ, আমজাদুল হক আয়েজ, ইমদাদুল ইসলাম, ওমর করিম, করিমুল ইসলাম, আহসান সাজ্জাদ প্রমুখ।
প্রচারাভিযানকালে নেতারা বলেন, দেশে ইফতারে প্লেটভর্তি ছোলা, পেঁয়াজু, বেগুনি, চপ, জিলাপি ও মুড়ি ছাড়া হয় না। কিন্তু রোজাদারের স্বাস্থ্যের পক্ষে এসব খাবার কতটুকু উপকারী? স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন সারাদিন পানাহার থেকে বিরত থাকার পর সন্ধ্যায় ইফতারিতে ভাজাপোড়া খাবার খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগে আক্রান্ত রোগীদের অবশ্যই সেহেরি ও ইফতারিতে দুধ, ওটস এবং বাদামের মতো হালকা খাবার খাওয়া উচিত। ভাজাপোড়া ও মিষ্টান্নজাতীয় খাবার শরীরে ক্যালরির মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাই যেসব খাবারে তেল ও শর্করাজাতীয় উপাদান থাকে সেসব খাবার পরিহার করাই শ্রেয়। একইভাবে উচ্চরক্তচাপের রোগীদেরও ভাজাপোড়া খাবার খাওয়া উচিত নয়। বিকল্প হিসেবে খিচুড়িও শরীরের জন্য ফলদায়ক হতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২৩
এআর/পিডি/টিসি