চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা দলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণায় বিক্ষুব্ধ ১৩ জন নেত্রী পদত্যাগ করেছেন। ২০২২ সালের ১০ মার্চ সম্মেলনের এক বছর পর কেন্দ্র থেকে ঘোষিত কমিটিকে ‘বিশেষ সিন্ডিকেট এর কমিটি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) মহিলা দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মনোয়ারা বেগম মনিকে সভাপতি ও জেলি চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা দলের ১৩৬ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়।
জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস এবং সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ এই কমিটির অনুমোদন দেন।
কমিটিতে সখিনা বেগমকে সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং রাবেয়া বেগম বানুকে সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, নাসিমা আলমকে কোষাধ্যক্ষ, অ্যাডভোকেট আয়শা আক্তার সানজিকে দপ্তর সম্পাদক, তানজীনা আক্তারকে প্রচার সম্পাদক, জোহরা বেগমকে সহ-প্রচার সম্পাদকসহ বিভিন্ন পদে ১৯ জনকে নির্বাচিত করা হয়েছে। সহ-সভাপতি করা হয়েছে ১৫ জনকে, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে ৫ জনকে, সহ-সাধারণ সম্পাদক ৩ জন, সাংগঠনিক সম্পাদক ৬ জন, সহ-দপ্তর সম্পাদক ২ জন এবং ৭৬ জনকে সদস্য করা হয়েছে।
কমিটি ঘোষণার পরপরই নতুন কমিটিতে অবমূল্যায়নের অভিযোগে একযোগে পদত্যাগপত্রে সই করেন বিগত কমিটির সহ-সভাপতি জেসমিনা খানম ও শাহিদা খানম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আঁখি সুলতানা, প্রচার সম্পাদক দেওয়ান মাহমুদা আক্তার লিটা, সাংগঠনিক সম্পাদক গুলজার বেগম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজিয়া বেগম বুলু, সহ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরজু নাহার মান্না, সহ-প্রচার সম্পাদক রোকসানা বেগম মাধু, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ফাতেমা কাজল, সদস্য নাছিমা আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুন নাহার লিজা, সহ-যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সায়েরা বেগম এবং সদস্য নার্গিস বেগম।
চসিক সংরক্ষিত ওয়ার্ডের (লালখানবাজার, জামালখান ও বাগমণিরাম) সাবেক কাউন্সিলর মনোয়ারা বেগম মণি বিএনপির ডাকা হরতাল-অবরোধ কর্মসূচিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে কয়েক বার গ্রেফতার হন ও কারাবরণ করেন। বিশেষ বক্তব্যের জেরে দল থেকে তাঁকে একবার বহিষ্কার করা হলেও ২০২০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি সেই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়।
তৃতীয়বারের মতো চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা দলের সভাপতি পদ পাওয়ার পর তিনি বলেন, রাজপথের লড়াকু নেত্রীদের মূল্যায়ন করে কেন্দ্র থেকে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে একটি সুন্দর কমিটি গঠন করা হয়েছে। একটি বড় রাজনৈতিক সংগঠনে নানা মত থাকতেই পারে। যারা বলছেন কাঙ্ক্ষিত পদ পাননি, সেটা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। আমরা দলের জন্য কাজ করবো।
চসিকের সাবেক কাউন্সিলর জেসমিনা খানমকে কমিটিতে তিন নম্বর সহ-সভাপতি পদে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, আমি ১৫ বছর ধরে রাজপথে আছি। যেখানে আমাকে পদোন্নতি দেওয়ার কথা, সেখানে পদাবনতি হয়েছে। এমন কমিটি আমরা চাইনি।
তিন নম্বর সাংগঠনিক সম্পাদক পদে থাকা দেওয়ান মাহমুদা আক্তার লিটা বলেন, এই কমিটির মাধ্যমে ত্যাগী নেত্রীদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। বিএনপির সব কর্মসূচিতে রাজপথে ছিলাম এবং এখনও আছি। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দুটিসহ মোট সাতটি মামলার আসামি হয়েছি। মর্মাহত হয়েই আমি পদত্যাগ করেছি।
নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক জেলি চৌধুরী বলেন, ‘আগের কমিটির চাইতে বর্তমান কমিটিতে উদ্যমী কয়েকজন নেত্রীর স্থান হয়েছে। আন্দোলন-সংগ্রামে তারা সবাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন। সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য তৃণমূলকে ঢেলে সাজাতে আমরা কাজ করবো’।
বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২৩
এমআই/টিসি