জটিল রোগে আক্রান্ত একুশে পত্রিকার সম্পাদক আজাদ তালুকদারের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (৩ এপ্রিল) রাতে ভারতের মুম্বাইয়ের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন একুশে পত্রিকা সম্পাদককে ফোন করেন প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-২ (যুগ্মসচিব) আল মামুন মুর্শেদ।
এর আগে সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ পাঠিয়ে সম্পাদক আজাদ তালুকদার জানান, সম্প্রতি ‘স্বপ্নফেরি’ নামে একটি গ্রন্থ সম্পাদনা করেছেন তিনি। বইটি উৎসর্গ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। বইটি প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়ার সুযোগ চান তিনি।
ম্যাসেজটি পাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-২ (যুগ্মসচিব) আল মামুন মুর্শেদ যোগাযোগ করেন একুশে পত্রিকা সম্পাদকের সঙ্গে। এ সময় আল মামুন মুর্শেদ বলেন, আপনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বই দিতে চেয়েছেন সরাসরি। আমরা আপনাকে সেই সুযোগটি করে দিতে চাই। কখন দেবেন। এখন আপনি কোথায়?
জবাবে সম্পাদক আজাদ তালুকদার বলেন, আমি মুম্বাইয়ে। এখানে আমার কেমোথেরাপি চলছে। এটা শেষ হতে আড়াই মাসের মতো লাগবে। আর আমি যদি মাঝপথে চলে আসি তাহলে আরও আগে আসবো। কিন্তু সবাই আমাকে পরামর্শ দিচ্ছেন সমস্ত কেমো মুম্বাইয়ে শেষ করে দেশে ফিরতে। সেটা হলে আড়াই থেকে তিন মাস লাগবে।
তখন আল মামুন মুর্শেদ বলেন, আপনি সুবিধামতো সময়ে দেশে ফিরে আসুন। দোয়া করি আপনি সুস্থ হোন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আপনার দেখা হবে, সে ব্যবস্থা করবো। আপনার ব্যক্তিগত কোনো চাওয়া পাওয়া আছে কিনা? আপনি বলুন, আপনার আর্থিক সাপোর্ট দরকার কিনা?
এর পরিপ্রেক্ষিতে আজাদ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের অভিভাবক। তিনি যদি আমার জন্য কিছু করতে চান তবে তা মাথায় তোলা থাকবে। কিন্তু আমার ব্যক্তিগত কোনো দাবি নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একবার সাহচর্য পেলেই হবে।
এক প্রতিক্রিয়ায় চট্টগ্রামের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আজাদ তালুকদার বাংলানিউজকে বলেন, শরীরে চতুর্থবারের মতো কেমোথেরাপি চলছে মুম্বাই টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে। একটি বড়সড় লিভার সার্জারিও হয়েছে ১৩ মাস আগে। কিন্তু সব কষ্ট ছাপিয়ে এবারকার কেমোর ভয়াবহ তাণ্ডব শরীরজুড়ে, যা পৌনে দুবছর ধরে ক্যান্সার-যুদ্ধে লড়ে যাওয়ার সবচেয়ে কঠিন সময়।
এমন এক কঠিন সময়ে বঙ্গবন্ধু-তনয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমার মতো একজন মফস্বলের ক্ষুদ্র গণমাধ্যমকর্মীর স্বাস্থ্যের খোঁজ নিয়েছেন। সাহস যুগিয়েছেন। সুস্থ হয়ে দেশে ফিরলে তার সাথে দেখা করারও সুযোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এমন মাতৃছায়া আমার অসুখের স্বজন, কষ্টকর সময়গুলোতে অন্ধকার ভেদ করে আলোর উৎসারণ। সত্যিই আমি উদ্বেলিত, আবেগাপ্লুত। আমি চিরকৃতজ্ঞ।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৫ সাল থেকে বন্দরনগরীতে সাংবাদিকতা করে আসছেন আজাদ তালুকদার। তিনি এর আগে একাত্তর টিভি, বৈশাখী টিভি, একুশে টিভি, অধুনালুপ্ত দৈনিক সকালের খবর, ট্রান্সকম গ্রুপের সিস্টার কনসার্ন সাপ্তাহিক ২০০০, আন্তর্জাতিক ফিচার সংস্থা-সান ফিচার সার্ভিস, এফএম রেডিওসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে কাজ করেছেন। বর্তমানে একুশে পত্রিকা সম্পাদনার পাশাপাশি সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, সাফল্য নিয়ে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) চট্টগ্রাম কেন্দ্রের বিভিন্ন অনুষ্ঠান নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত আজাদ তালুকদার। দুই বছর আগে লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০১০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০২৩
এমজে