চট্টগ্রাম: সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে নগরের লালদীঘির মাঠে ঐতিহ্যবাহী আব্দুল জব্বারের বলী খেলার রেফারি থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন আব্দুল মালেক। তিনি জব্বারের বলীখেলার ১১৪তম আসরে সেমিফাইনালের রেফারির দায়িত্ব পালন করবেন।
আব্দুল মালেক বাংলানিউজকে বলেন, জব্বারের বলীখেলার ১১৪তম আসরে সেমিফাইনালে রেফারির দায়িত্ব পালন করবো।
তিনি আরও বলেন, আমি ফুটবল খেলোয়াড় ছিলাম। বদরপাতির আব্দুল হামিদ এবং আমি ব্রাদার্স ইউনিয়ন পরিচালনা করতাম। সেটা তখন বদরপাতির টিম ছিল। ১৯৮৯ সালে সহকারী রেফারি হিসাবে বলীখেলা পরিচালনা শুরু করি। ফয়েজ উল্লাহ’র মৃত্যু ও আরেকজন লন্ডনে চলে যাওয়াতে আমার ওপর পড়ে রেফারির দায়িত্ব।
জব্বার মিয়ার বলীখেলায় সহকারী রেফারি হিসেবে শুরু করেছিলাম। পরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বলীখেলায় রেফারির দায়িত্ব পালন করেছি। বিমানবাহিনী, ঢাকা ও বগুড়ায় সাবেক সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহারের বাড়ি এলাকার বলী খেলায় রেফারির দায়িত্ব পালন করেছি। সিআরবিতে সাহাব উদ্দীনের বলীখেলায়ও শুরু থেকে আমি রেফারির দায়িত্ব পালন করেছি’।
রামুর দিদার বলী ও বান্দরবানের একজন বলী যৌথ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য চেষ্টা করছিল জানিয়ে আব্দুল মালেক বলেন, কেউ কাউকে পরাজিত করতে পারছিল না। এ সময় সাবেক মেয়র মরহুম এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী এগিয়ে এলেন। তিনি এক থেকে একশ পর্যন্ত গুনলেন। এরপর তাদের দুজনকেই বহিষ্কার করলেন। পরে অন্য দুইজন বলীকে নিয়ে ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
রেফারির দায়িত্ব পালন করতে ভালো লাগে জানিয়ে সাবেক চসিক কাউন্সিলর আব্দুল মালেক বলেন, জব্বার মিয়ার বলীখেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও জব্বার মিয়ার নাতি শওকত আনোয়ার বাদল বলেছেন-আমাকে আমৃত্যু রেফারির দায়িত্ব পালন করতে হবে। রেফারির দায়িত্ব পালন করতে দেখে দেশ ও দেশের বাইরে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আত্মীয়-স্বজন ফোন করেন, খুশি হন।
জব্বারের বলীখেলার ফাইনাল খেলার দায়িত্ব পাওয়া ছিদ্দিক আহমেদ বলী বাংলানিউজকে বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বলী খেলা খেলেছি। জব্বারের বলী খেলায় পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। দেশের বিভিন্ন স্থানে বলী খেলায় একাধিকবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছি।
তিনি আরও বলেন, মক্কার বলী খেলা, কক্সবাজার বাজারের ডিসি সাহেবের বলী খেলা, পদুয়া পেঠানশাহ বাজারের বলী খেলা, মির্জাখীল বলী খেলা, গহিরার বলী খেলাসহ গত পনেরো বছরে দুইশ’র মতো বলী খেলার রেফারির দায়িত্ব পালন করেছি। জব্বারের বলীখেলার ফাইনাল খেলার দায়িত্ব পালন করব সেটা আমার জন্য গর্ব ও গৌরবের ও আমি আনন্দিত।
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে দেশের যুব সমাজকে সংগঠিত করতে ১৯০৯ সালে স্থানীয় আব্দুল জব্বার সওদাগর নগরের লালদীঘি মাঠে আয়োজন করেন কুস্তি প্রতিযোগিতা। পরে এটি আব্দুল জব্বারের বলীখেলা নামে পরিচিত হয়। বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে বৈশাখ মাসের ১২ তারিখে অনুষ্ঠিত হয় এই বলী খেলা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২২
এমআই/পিডি/টিসি