চট্টগ্রাম: শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, মুখস্থ করা একটি মানসিক নির্যাতনের মতো। মুখস্তবিদ্যা কার্যকরী নয়।
বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) এলজিইডি মিলনায়তনে জেলা পরিসংখ্যান অফিসের আয়োজনে ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে মোবাইল ট্যাব বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২১ প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম মহানগরের সরকারি ও এমপিওভুক্ত স্কুলের ৪৫০ জন মেধাবী শিক্ষার্থীর মাঝে এ মোবাইল ট্যাব বিতরণ হয়। এর ধারাবাহিকতায় ১ম ধাপে ৯ হাজার ৮০০ মোবাইল ট্যাব বিতরণ করা হবে।
উপমন্ত্রী বলেন, আগে খুব ভালো ভালো স্কুল ছিল কিন্তু সাধারণ মানুষের পড়ালেখার সুযোগ ছিল না। একসময় সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তানরাই এসব স্কুলে পড়ালেখা করতো। তারা ভালো সুযোগ সুবিধা পেত। পক্ষান্তরে সাধারণ পরিবারের সন্তানরা ভালো স্কুলও পেত না, শিক্ষাও পেত না। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করেছেন। এরই অংশ হিসেবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে এ স্মার্ট ডিভাইস দেওয়া হচ্ছে। এটি ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা অনেক কিছু শিখতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, বিদ্যালয় পর্যায়ে খুব ভালো ফলাফল করে উন্নতি নাও হতে পারে। পৃথিবীর অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি আছেন যারা বিদ্যালয়ে ভালো ছিলেন না। তাই আমাদের শুধু পাঠ্যবই মুখস্থের ওপর জোর না দিয়ে এটাকে উপভোগ করতে হবে, বাস্তবধর্মী জ্ঞান আহরণ করতে হবে। আর এসবের সমন্বয়ে সামনে আমাদের নতুন কারিকুলাম আসছে।
নওফেল বলেন, স্মার্ট সিটিজেন তৈরির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রদত্ত স্মার্ট ডিভাইস শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন শিক্ষাক্রমের পরিবর্তন বুঝার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। অনলাইন ভিত্তিক নানা ধরনের কোর্স শেখার মাধ্যমে শিক্ষাকে আরো আনন্দদায়ক করে তুলবে। পাশাপাশি মোবাইল ট্যাব স্মার্ট সিটিজেন বিনির্মাণে ভূমিকা রাখবে।
উপস্থিত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, আপনারা এই ডিভাইস অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করবেন। অন্যরাও যাতে এটি ব্যবহার করে উপকৃত হতে পারে সে সুযোগ দিবেন। দলবদ্ধভাবে শেখার মধ্যে আনন্দ আছে। শুধুমাত্র নিজে ভালো ফলাফল করার মানসিকতা নিয়ে বেশি দূর এগিয়ে যাওয়া যায় না। স্বার্থপর শিক্ষার্থী বড় হয়ে স্বার্থপর পেশাজীবী বা চাকুরিজীবী হবে। তখন সে মানুষের স্বার্থের কথা বাদ দিয়ে নিজের স্বার্থ নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। তাই শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফল করার পাশাপাশি ভালো মানুষ হতে হবে। যে পিছিয়ে আছে তাকে এগিয়ে দিতে হবে।
উপমন্ত্রী বলেন, বাংলা আমাদের মাতৃভাষা। বাংলাকে আমরা ভালোবাসি। কিন্তু বাংলার পাশাপাশি আমাদের অবশ্যই ইংরেজি শিখতে হবে। ইংরেজি ছাড়া আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাফল্য সম্ভব নয়। আমাদের ইংরেজির চর্চা বাড়াতে হবে। ভুল হোক বা শুদ্ধ হোক বলার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। অনেকে ইংরেজি বলতে গিয়ে একসেন্ট বা গ্রামারের বিষয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন, যা কোনো সমস্যাই না। সেইসাথে আমাদের বাংলাকেও আরও ভালোভাবে জানতে হবে। ছেলে মেয়েদের প্রযুক্তি ও ইন্টারনেট ব্যবহারে উৎসাহী করতে হবে। তবেই আমরা পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে এগিয়ে যেতে পারবো।
জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. আমিনুর রহমান, জেলা পরিসংখ্যান অফিসের উপপরিচালক মো. ওয়াহিদুর রহমান, জেলা শিক্ষা অফিসার ফরিদুল আলম হোসাইনী, শিক্ষক হোসেন আহমেদ চৌধুরী।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল২৭, ২০২৩
বিই/পিডি/টিসি