চট্টগ্রাম: হালদা নদীতে নৌকা-জাল নিয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন ডিম সংগ্রহকারীরা। কিছু কিছু স্থানে খুব অল্প পরিমাণে নমুনা ডিম ছাড়লেও পুরোদমে ডিম ছাড়েনি মা মাছ।
হালদা নদীতে গত বছর বৃষ্টি না হওয়ায় ডিম ছাড়েনি মা মাছ। চট্টগ্রামে ৪৫ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বৃষ্টি হয়েছে সেবার। ২০২১ সালে বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢল না নামার কারণে ডিম সংগ্রহ হয়েছে অল্প। সে সঙ্গে যুক্ত হয় ঘূর্ণিঝড়। হালদা নদীর পানিতে বাড়ে লবণাক্ততা। তাই সে বছরও আশানুরূপ ডিম সংগ্রহ করতে পারিনি ডিম সংগ্রহকরীরা। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে ২২ শ মে মা মাছ ডিম ছেড়েছিল। তখন ভারি বৃষ্টির সঙ্গে পাহাড়ি ঢলের প্রকোপ ছিল। যার কারণে মা মাছ ডিম ছাড়ার একটা অনুকূল পরিবেশ পেয়েছিল। ফলে রেকর্ড পরিমাণ ডিম ছেড়েছে মা মাছ।
জানা গেছে, প্রায় ৭০০ থেকে ৮০০ জন ডিম সংগ্রহকারী, ৩০০ থেকে ৩৫০ টি নৌকা। রয়েছেন ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (আইডিএফ) এর ৫ জন সেচ্ছাসেবক। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) হালদা রিসার্চ ল্যাবরেটরির ১৪ জন শিক্ষার্থী। প্রস্তুত রয়েছেন উপজেলা প্রশাসন ও নৌ পুলিশের ১২ জন সদস্য।
ভারী বৃষ্টির সঙ্গে পাহাড়ি ঢল হালদা নদীতে পড়লেই মাছ ডিম ছাড়বে বলে ধারণা করছেন হালদা গবেষকরা।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগে অধ্যাপক ও হালদা গবেষক প্রফেসর মঞ্জুরুল কিবরিয়া বাংলানিউজকে বলেন, কিছু কিছু স্থানে মা মাছে খুব অল্প পরিমাণে ডিম ছেড়েছে। যা পরিমাণে হাতে গুনা ৫ থেকে ১০টি। ডিম সংগ্রহকররীরা সেগুলো নদীতে ছেড়ে দিয়েছে। আশা করছি, ভারী বৃষ্টিপাত হলে অনুকূল পরিবেশ পেলে হালদায় ডিম ছাড়বে মা-মাছ।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিদুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, কিছু কিছু পয়েন্টে অল্প পরিমাণে নমুনা ডিম পেয়েছে ডিম সংগ্রহকারীরা। হালদা নদীতে মা মাছের ডিম ছাড়ার পরিবেশ নিশ্চিত করতে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করছি।
ডিম সংগ্রহকারী আব্দুল কাদের ও আলী আকবর বাংলানিউজকে বলেন, খুব অল্প পরিমাণে নমুনা ডিমের দেখা মিলেছে। সেগুলো আমরা নদীতে ছেড়ে দিয়েছি। এখন শুধু অপেক্ষা করতেছি ভারি বৃষ্টির। ভারি বৃষ্টির সঙ্গে পাহাড়ি ঢল নামলে তখন একটা সম্ভাবনা রয়েছে।
তারা আরও বলেন, ডিম সংগ্রহের নৌকা-জাল ও ডিম সংরক্ষণের জন্য মাটির কুয়াও প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২৩
বিই/পিডি/টিসি