চট্টগ্রাম: একদিন স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে, সেদিন আর বেশি দূরে নয় বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।
মঙ্গলবার (২০ জুন) দুপুরে কাজীর দেউড়ির সেনা কল্যাণ সংস্থা কনভেনশন হলে 'স্মার্ট বাংলাদেশ স্মার্ট হাট' শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মেয়র বলেন, একসময় যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় এসেছিলেন ডিজিটাল বাংলাদেশ করার প্রত্যয় ঘোষণা করেছিলেন। আজ সবাই সুফল ভোগ করছে।
আগে অনেক গরুর বেপারি সর্বস্বান্ত হয়েছিলেন। অনেক ক্রেতা গরু কেনার টাকা হারিয়েছেন। এখন ডিজিটাল লেনদেনে ঝুঁকি থাকবে না। আমরা স্থায়ীভাবে এটিএম বুথ বসানোর কাজে সহায়তা করবো। মানুষ নগদ টাকা নিয়ে চিন্তায় পড়তে হবে না। নকল টাকা বড় সমস্যা। বহদ্দারহাট আমার বাড়ব। এক গরুর বেপারি কাঁদতে কাঁদতে বললো পঁচিশ হাজার টাকা নকল।
বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এবিএম জহুরুল হুদা।
তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের বড় বিষয় স্মার্ট অটোমেশন। ২০২৭ সালে ক্যাশলেস বাংলাদেশ হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদের পেমেন্ট সিস্টেম স্মার্ট করতে অনেক কাজ করেছে। কোরবানির হাটকে ঘিরে স্মার্ট লেনদেনের ব্যবস্থা থাকবে। সবাইকে জাল টাকা পরীক্ষা করে দেওয়া হবে। পশুর হাট যতদিন চলবে ততদিন বুথ থাকবে। সাদা পোশাকে পুলিশ থাকবে। ব্যাংকাররা সহযোগিতার জন্য পুলিশের সাহায্য নিতে পারবেন। ভিজিল্যান্স টিম থাকবে তাৎক্ষণিক সমাধান দিতে। চট্টগ্রামে দুইটি হাটে আমরা সফল হবো আশাকরি। খামারি ও বেপারিরা যাতে ব্যাংক হিসাব খুলে হাটে আসেন এ সংক্রান্ত একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করার অনুরোধ জানাব। তাহলে টাকা প্রপার চ্যানেলে লেনদেন হবে। তাহলে ইকোনমি সচল থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক মুনতাসিম বিল্লাহ বলেন, আমরা ২০২২ সালে ভালো সাড়া পেয়েছি। চট্টগ্রামে ৫০ কোটি টাকা ডিজিটাল লেনদেন কঠিন হবে না। এটি ব্যাংকের জন্য লাভজনক নয়। যে গরুর খামারি হাটে আসবে তাদের তালিকা করে হিসাব খুলে প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। তাদের আস্থা তৈরির চেষ্টা করছি। যদি কারও হিসাব না থাকে তাহলে বুথ থাকবে। নির্দিষ্ট হাটে কার্ড দিয়ে পশু কিনতে পারবে। জাল টাকার ঝুঁকি থাকবে না। খামারিরা প্রতারিত হবে না। স্মার্ট বাংলাদেশে কোনো ঝুঁকি থাকবে না। ডিজিটাল লেনদেনের অনেক বিকল্প আছে। আশাকরি পরের বছর চট্টগ্রাম শহরের সব পশুর হাট স্মার্ট হাটে রূপান্তর হবে।
প্রাণিসম্পদ পরিচালক আশরাফুল আলম বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। অনেক সময় খামারিরা লেনদেন, টাকা বাড়ি নেওয়ার সমস্যায় পড়তেন। ছিনতাই, চুরির শঙ্কা থাকতো।
স্মার্ট বাংলাদেশ স্মার্ট হাট কর্মসূচি তাদের উপকারে আসবে। এখন আমরা কোরবানির পশুর চাহিদা নিজেরাই পূরণ করতে পারছি। আমরা স্বল্প খরচে বেশি উৎপাদন, নিরাপদ আমিষের চাহিদা পূরণে কাজ করছি। কোরবানির হাটে ভেটেরিনারি মেডিক্যাল টিম থাকবে। মেধাবী জাতির জন্যে প্রাণিজ আমিষের বিকল্প নেই।
ইসলামী ব্যাংকের নুরুল ইসলাম বলেন, ইসলামী ব্যাংক তিন কোটি কাস্টমারের ব্যাংক। স্মার্ট হাটের লিড ব্যাংক হিসেবে আমরা প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম সংগ্রহ করেছি। অ্যাকাউন্ট ছাড়া টাকা লেনদেনের জন্য মোবাইলে সেলফিন চালু রয়েছে আমাদের ব্যাংকে।
ইউসিবির আশরাফুল আলম বলেন, সরকারের উদ্যোগ সফল করতে আমরা কাজ করছি। বাংলাদেশ ব্যাংকের সহযোগিতা আমরা প্রতিনিয়ত পাচ্ছি। আশা করি আমরা সফল হবো।
এতে সঞ্চালনা করেন মাস্টার কার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার মো. কামাল।
১০টি ব্যাংক, ৪টি এমএফএস স্মার্ট বাংলাদেশ স্মার্ট হাট কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে। ঢাকায় ২০২২ সালে এ কার্যক্রম চালু হয়। এবার চট্টগ্রামের সাগরিকা ও নূর নগর হাউজিং সোসাইটি পশুর হাট এ প্রকল্পে যুক্ত হচ্ছে। এ বছর চারটি হাটে ডিজিটালি দেড়শ কোটি টাকার লেনদেনের আশা সংশ্লিষ্টদের।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৫ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০২৩
এআর/পিডি/টিসি