চট্টগ্রাম: মাধ্যমিকের গণ্ডি পার হননি কিন্তু নিজেকে পরিচয় দিতেন বিগ্রেডিয়ার জেনারেল। আর অনায়াসে চাকরি দিতে পারেন সেনা, নৌ, বিমান বাহিনীতেও।
গ্রেফতাররা হলেন, মো. হারিফ মিয়া (২৩), মো. ইয়ার হোসেন (৪২), মো. মিলন খান (৩০) ও মো. ইউসুফ মিয়া (৪০)।
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় কুমার সিনহা বাংলানিউজকে বলেন, বন্দর থানা এলাকায় জুয়া ও আবাসিক হোটেলে অসামাজিক কার্যকলাপে বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালিয়ে প্রায় শূন্যের কোটায় নিয়ে এসেছি। স্থানীয়দের অভিযোগে ক্যারাম খেলার মধ্যে জুয়া খেলা হচ্ছে, সেটাও বন্ধ করে দিয়েছি। ক্যারাম খেলা পুনরায় চালু করার জন্য কয়েকজন ব্যক্তিকে আমার কাছে আসে। তারা আমাকে জানিয়েছেন বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সাহেব আমাদের পাঠিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ক্যারাম খেলাটি চালু করে দিতে। তখন আমার সন্দেহ হয়। বিগ্রেডিয়ার জেনারেলের মতো ব্যক্তি ছোট্ট বিষয়ে রিকোয়েস্ট করবেন? তখন ভুয়া বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ভিজিটিং কার্ডটি যাচাই-বাছাই করে ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে। বিগ্রেডিয়ার জেনারেল পরিচয়ে যে মোবাইল নম্বর থেকে কল দেওয়া হয়, সেটা গ্রেফতার মো. হারিফ মিয়ার নামে রেজিস্ট্রেশন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এলাকার যেকোনো বিষয়ে আমাদের পুলিশ কর্মকর্তাদের কল দেওয়া হতো। গ্রেফতার মো. হারিফ মিয়াকে এলাকায় বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ভাই হিসেবে পরিচিত ছিলেন। আসলে বিগ্রেডিয়ার জেনারেল পরিচয়ে হারিফ মিয়া বিভিন্ন জনকে কল দিতেন। তার নেতৃত্বে আছে চার থেকে পাঁচ জনের একটি দল। গ্রেফতার সবার বাড়ি কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহে হলেও চট্টগ্রামের বন্দর এলাকায় তারা গড়ে তুলেছিলেন প্রতারণার এক সাম্রাজ্য। নগরের বন্দর এলাকায় ৯৯৯ এর এক ফোন কলে সমস্যা সমাধানে পুলিশ গেলে তাতে বাঁধ সাধেন এই হারিফ। পরে সন্দেহ হলে রোববার (২০ আগস্ট) বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
বন্দর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কিশোর মজুমদার বাংলানিউজকে বলেন, ভুয়া বিগ্রেডিয়ার জেনারেল পরিচয়ে থানায় তদবিরের জন্য পুলিশ সদস্যদের হুমকি দিতো পুলিশ কমিশনারের। গ্রেফতারের পর তাঁদের কাছ থেকে জব্দ করা হয় অন্তত দুই ডজন সিম কার্ড, বিভিন্ন বাহিনীর চাকরির আবেদনপত্র, ভিজিটং কার্ড, সেনাবাহিনীর লোগো সম্বলিত মানিব্যাগসহ প্রতারণায় ব্যবহার করা নানা উপকরণ। এই চক্রে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০২৩
এমআই/পিডি/টিসি