চট্টগ্রাম: ডাবের দাম নিয়ন্ত্রণে সম্প্রতি চট্টগ্রামে চালানো হয় অভিযান। কিন্তু এতেও লাগাম টানা যায়নি।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতালে প্রধান ফটকের সামনে থেকে উধাও ভ্রাম্যমাণ ডাবের দোকান। তবে হাসপাতালের পূর্ব গেইটে মেডিক্যাল কর্মকর্তা কর্মচারী কো-অপারেটিভ সোসাইটির নিয়ন্ত্রণাধীন মেডিকপস সুপার শপে মিলছে ডাব। তাও আবার অতিরিক্ত দামে। এছাড়া পূর্ব গেইটের বাহিরে রাইসা মেডিক্যাল নামে একটি ওষুধের দোকানেও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে ডাব। প্রতিটি ছোট ও মাঝারি সাইজের ডাব বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। এছাড়া বড় সাইজের ডাব প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়।
অন্যদিকে, হাসপাতালের অদূরে গলির মধ্যে ডাব বিক্রি করতে দেখা যায়। কিছু সময় না যেতেই এক পুলিশ সদস্য এসে ডাব বিক্রেতাকে সরিয়ে দেন। মোবাইল কোর্টের অভিযানের কারণে বিক্রি বন্ধ রাখা হয়েছে জানিয়ে ওই ডাব বিক্রেতা বাংলানিউজকে বলেন, ডাব নিয়ে ঝামেলা চলেছে। তাই হাসপাতালের সামনে পুলিশ দোকান নিয়ে বসতে দিচ্ছে না। পুলিশ ডাবের ভ্যান থানায় নিয়ে গেলে ২-৩ হাজার টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে আনতে হয়।
এর আগে গত ২৯ আগস্ট চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের সামনে ডাবের দোকানে অভিযান চালায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। জরিমানার পর কিছুটা সহনীয় থাকলেও আবারও একই দৃশ্য। দাম নিয়ন্ত্রণে ভোক্তা অধিকারের অভিযানের পর পুলিশ ভ্রাম্যমাণ দোকান বন্ধ করে দেওয়ায় কৃত্রিম সংকটে বেড়েছে ডাবের দাম।
সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, মানুষের সুবিধার জন্য ডাবের দোকানে অভিযান চালানো হচ্ছে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে যারা ভ্যানগাড়িতে ডাব বিক্রি করতো তারাই বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে। এ সুযোগটা নিয়েছে স্থানীয় ওষুধের দোকানদাররা। এখন বাধ্য হয়ে তাদের কাছ থেকে বাড়তি দামে ডাব কিনতে হচ্ছে।
অভিযানের পর ডাবের দাম নিয়ন্ত্রণের এসেছে কি-না এমন প্রশ্নে ভোক্তা অধিদফতরের উপ পরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ বাংলানিউজকে বলেন, আগে খুচরা বিক্রেতারা ভাউচার দেখাতে পারতো না। এখন তারা সচেতন হয়েছে। তারা এখন ক্রয়ের রশিদ দেখাচ্ছে। অভিযানের ফলে দাম নিয়ন্ত্রণে রয়েছে কি-না তা বলতে পারবো না। তবে একটা শৃঙ্খলা ফিরেছে।
ডেঙ্গু হলেই ডাব খেতে হবে এমন কোনও নিয়ম নেই বলে মন্তব্য করেছেন চিকিৎসকরা। তরল খাবার গ্রহণের প্রতি জোর দিচ্ছেন তারা।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকসাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) এর মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মামুনুর রশিদ বাংলানিউজকে বলেন, ডেঙ্গু হলে ডাব খেতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। পানি শরীরের জন্য অপরিহার্য, বিশেষ করে যখন আপনি ডেঙ্গু জ্বর থেকে সেরে উঠছেন। পানিসহ অন্যান্য তরল মিলে সারাদিন ৩ লিটার তরল গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। অন্যান্য তরল যেমন: বাসায় তৈরি ফলের শরবত, মুরগি বা সবজির স্যুপ দেওয়া যেতে পারে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা অন্তর, যা পানিশূন্যতা রোধে সাহায্য করবে। ডাবের পানি ও ওরাল স্যালাইন ইলেকট্রোলাইট ব্যালান্স রাখতে সাহায্য করবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০২৩
এমআর/এসি/টিসি