চট্টগ্রাম: শ্রীকৃষ্ণের রথ, রাধা-কৃষ্ণের যুগল মূর্তি, কংসের জেলখানাসহ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জীবনের নানা অংশের আদলে সেজে শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছেন ভক্তরা।
বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে নগরের জেএম সেন হল প্রাঙ্গণ থেকে জন্মাষ্টমীর শোভাযাত্রা বের হয়।
আন্দরকিল্লা, লালদীঘির পাড়, সিনেমা প্যালেস, বোস ব্রাদার্স, ডিসি হিল, মোমিন রোড ঘুরে শোভাযাত্রাটি আবার জেএম সেন হলে চারদিনের উৎসব প্রাঙ্গণে চলে আসে।
এর আগে শ্রীশ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে সংবাদ সম্মেলন করে জন্মাষ্টমীর রোডম্যাপ ও কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল। জন্মাষ্টমী মহাশোভাযাত্রায় প্রধান অতিথি ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
তিনি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ছেন। ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের অনুসারী হলেও আমরা বাঙালি। আমাদের চিন্তা হতে হবে আমরা মানুষ। বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে দেশ স্বাধীন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার হাত শক্তিশালী করলে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণ হবে।
আ জ ম নাছির আমৃত্যু জন্মাষ্টমী পরিষদের পাশে থাকার ঘোষণা ও দুই লাখ টাকা অনুদান দেন।
কোতোয়ালী আসনের সংসদ সদস্য শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ৫ লাখ টাকা অনুদান দেন।
অতিথি ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সংসদ সদস্য নোমান আল মাহমুদ, সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, আওয়ামী লীগ নেতা শফর আলী, দেবাশীষ পালিত, কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব প্রমুখ।
নোমান আল মাহমুদ বলেন, আজ আমাদের শপথ হোক সত্য ও ন্যায়ের পথে চলব। সুখী সমৃদ্ধ দেশ গড়ব।
৪০ বছর ধরে চট্টগ্রামে জন্মাষ্টমী উৎসব উদযাপন করে আসছেন জানিয়ে পরিষদের সভাপতি সুকুমার চৌধুরী বলেন, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথিতে জন্মাষ্টমী উৎসব। এ উপলক্ষে বিভিন্ন জেলায় বস্ত্র বিতরণ, রক্তদান, অনাথ-দুস্থদের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ, গীতা পাঠ, সন্ধ্যারতি, জন্মাষ্টমী পূজা-ভোগ, দেশ জাতির কল্যাণ এবং করোনা, ডেঙ্গু, যুদ্ধ, অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি থেকে মুক্তির জন্য সমবেত প্রার্থনা করা হবে। জন্মাষ্টমী উৎসব উদযাপন পরিষদ ধর্ম ও কর্মের সমন্বয়ে গভীরভাবে বিশ্বাসী। আমরা মনে করি, সহিষ্ণু ও অসাম্প্রদায়িক ধর্মীয় চেতনা এবং চিন্তা দেশের উন্নয়ন ও সামাজিক অবক্ষয়ের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে পারে। গণতান্ত্রিক পরিবেশের মূল কথা হলো অহিংস মনোভাব ও সহিষ্ণুতা।
তিনি ৬৪ জেলায় মডেল মন্দির নির্মাণ, বেদখল হওয়া মঠ, মন্দির, দেবোত্তর সম্পত্তি উদ্ধার ও সংরক্ষণে আইন প্রণয়ন, সাম্প্রদায়িক হামলায় বিধ্বস্ত মন্দির, বাড়ি সরকারি উদ্যোগে পুননির্মাণ এবং দুর্গোৎসবে চারদিনের সরকারি ছুটির দাবি জানান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শ্রীশ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন, চসিক কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী, শৈবাল দাশ সুমন, রুমকি সেন গুপ্ত, শ্রীশ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তপন কান্তি দাশ, চন্দন তালুকদার, বিমল কান্তি দে, সাধন কর, নগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি লায়ন আশীষ ভট্টাচার্য, তপন কান্তি দাশ, প্রকৌশলী আশুতোষ সরকার, ডা. বিধান মিত্র, সুমন মজুমদার, শ্রীপ্রকাশ দাস অসিত, তাপস কুমার নন্দী, সুমন দেবনাথ, এস প্রকাশ পাল, রতন রায়, শঙ্কর সেনগুপ্ত, পণ্ডিত গদাধর দাস ব্রহ্মচারী প্রমুখ।
মাতৃসম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকবেন নগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হাসিনা মহিউদ্দিন। সনাতন ধর্মমহাসম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকবেন চসিক মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী। বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করার কথা রয়েছে শ্রীশ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের নেতাদের।
জন্মাষ্টমী উৎসব উপলক্ষে ধর্মীয় নানা উপকরণ, মুড়ি-মুড়কি ও মৌসুমি ফলের মেলা বসেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৩
এআর/এসি/টিসি