চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: চবি আইন অনুষদের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো আয়োজিত জাতীয় আইন সম্মেলন শেষ হয়েছে।
রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) সমাপনী পর্বের মধ্য দিয়ে দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনের পর্দা নামলো।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় ‘পরিবর্তনশীল বিশ্বে আইন’ প্রতিপাদ্যে আয়োজিত সম্মেলনে দেশি-বিদেশি প্রায় ৫০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ৭০টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এ ছাড়া ৩০ জন আইনজ্ঞ প্যানেল বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
চবি আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. রকিবা নবীর সঞ্চালনায় জাতীয় আইন সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি বোরহান উদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন চবি আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ শাহীন চৌধুরী। মুখ্য আলোচক ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. শরিফ ভূঁইয়া। আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ আল ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ছিলেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন চবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে এবং সিনিয়র জেলা ও সেশন জজ ড. আজিজ আহমেদ ভূঁইয়া।
ড. শরীফ ভূঁইয়া বলেন, মানবজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে একধরনের শৃঙ্খলা মেনে চলতে হয়। বিভিন্ন ধরনের আইন সেই শৃঙ্খলা মেনে চলতে সাহায্য করে থাকে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মানবজীবনে বাহ্যিক পরিবর্তন করে না বরং মানব সমাজের সামগ্রিক পরিবর্তনে ভূমিকা রাখে। সারা বিশ্বে আইনের শাসনে পরিবর্তন এসেছে। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আইনের শাসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আইনের শাসন ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য সমাজে গণতন্ত্রের চর্চা অনিবার্য।
ড. শিরীণ আখতার বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে হলে আমাদের আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমি আশা করি দেশ ও জাতি এবং এ বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য এ আইন সম্মেলন ভূমিকা রাখবে।
ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, দেশে প্রথমবারের মতো এ সম্মেলন হচ্ছে। বিষয়টি খুবই সুন্দর। আইন শিক্ষা এবং শেখানোর পদ্ধতিতে অনেক পরিবর্তন নিয়ে আসতে হবে। দেশে মেধা যাচাই করা হয় মুখস্থবিদ্যার ভিত্তিতে। কিন্তু সমস্যা সমাধান, ব্যবস্থাপনার জ্ঞানও গুরুত্বপূর্ণ যা অন্যান্য দেশে শেখানো হয়। বর্তমান সময়ের আলোকে আমাদের শিক্ষাদান পদ্ধতিতে পরিবর্তন প্রয়োজন।
প্রধান অতিথি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি বোরহানউদ্দিন বলেন, আমি চবির আইন বিভাগের একজন শিক্ষার্থী হিসেবে গর্বিত। কারণ এ বিভাগের শিক্ষার্থীরা গত কয়েকবছর খুব ভালো ফলাফল করছে। আইন হচ্ছে ব্যক্তির কাণ্ডজ্ঞান। ব্যক্তি তার কাণ্ডজ্ঞান ব্যবহার না করলে আইন তার কার্যকারিতা হারাবে। কিন্তু বর্তমানে আমরা বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। জলবায়ু পরিবর্তন, মানব পাচার, সাইবার থ্রেট, রোহিঙ্গা সমস্যাসহ আরও অনেক কিছু।
তিনি বলেন, পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে এগিয়ে যেতে আমাদের আইনগুলো সংশোধন করা প্রয়োজন। যাতে বর্তমান সমস্যার সমাধান সহজ করা যায়। এছাড়া আমাদের প্রতিটি ক্ষেত্রে আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে।
জাতীয় আইন সম্মেলনের সমাপনী বক্তব্যে আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন, এ সম্মেলন আইনশিক্ষার্থী এবং আইন গবেষকদের মাঝে নতুন উদ্দীপনার জোগাবে। এরকম গবেষণাধর্মী সম্মেলন আইন শিক্ষা ও গবেষণার দ্বার উন্মুক্ত করতে সাহায্য করবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৩
এমএ/টিসি