চট্টগ্রাম: সুযোগ থাকলেও লোকবল সংকটের পুরোপুরি কাজে লাগানো যাচ্ছে না চট্টগ্রামের সেন্ট্রাল ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরি। ফলে ওষুধের নমুনা পরীক্ষা করতে হলে পাঠাck হচ্ছে ঢাকায়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ওষুধের সব ধরনের পরীক্ষা এখানে করা গেলে সহজে ঢাকামুখী নির্ভরতা যেমন কমবে তেমনি কেন্দ্রীয় ওষুধ টেস্টিং ল্যাবের সহযোগী হিসেবে কাজ করবে।
জানা গেছে, হোমিও-আয়ুর্বেদিক পরীক্ষা হলেও ২০১৫ সালের পর থেকে এ ল্যাবে বন্ধ ছিল এলোপ্যাথিক ওষুধের নমুনা পরীক্ষা। লোকবল সংকট, নিরবিছিন্ন বিদ্যুতের সরবরাহের অভাব, যন্ত্রপাতির অপ্রতুলতাসহ কাঁচামালের অভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এ ল্যাবে সুনজর পড়েনি সরকারের। তবে সম্প্রতি দুটি এইচপিএলসি (হাই-পারফরম্যান্স লিকুইড ক্রোমাটোগ্রাফি) ও তিনটি ইউভি যন্ত্র পেয়েছে ড্রাগ টেস্টিং ল্যাব। যদিও এসব যন্ত্রপাতি এখনো সংযুক্ত হয়নি ল্যাবরেটরিতে। যন্ত্রগুলো সংযুক্ত হলে চট্টগ্রামে এলোপ্যাথিক ওষুধের মান পরীক্ষা করা সম্ভব হবে। এর মাধ্যমে শতভাগ ওষুধের মান পরীক্ষার সক্ষমতা অর্জন করবে চট্টগ্রাম সেন্ট্রাল ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরি।
নিয়ম অনুযায়ী, বাজারে যাওয়ার আগে ওষুধ প্রথমে যাবে ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে। সেখানে পরীক্ষার মাধ্যমে গুণগতমান ঠিক আছে কি-না তা নিশ্চিত হবে। গুণগতমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে তখন বাজারজাতকরণের সুযোগ পাবে সেই ওষুধ। তাছাড়া আমদানি ও রপ্তানির আগেও ড্রাগ ল্যাবরেটরিতে পণ্যের গুণগতমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয় প্রতিটি ওষুধকে। ওষুধ ছাড়াও ওষুধ উৎপাদনের আমদানি করা কাঁচামালও ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার নিয়ম রয়েছে।
চট্টগ্রাম সেন্ট্রাল ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরির উপপরিচালক এমডি কাইয়ূম বাংলানিউজকে বলেন, দীর্ঘ আট বছর চট্টগ্রামে এলোপ্যাথিক ওষুধের পরীক্ষা বন্ধ ছিল। চলতি বছরের শুরুতে আমরা দুটি এইচপিএলসি ও তিনটি ইউভি মেশিন পেয়েছি। তবে এগুলো এখনো ইনস্টলেশন করা হয়নি। ইনস্টলেশন প্রসেস অনেক জটিল হওয়ার কারণে দেরি হচ্ছে। বিদেশি লোকজন এসে ইনস্টলেশন করবেন। আশা করছি দুই-একমাসের মধ্যে ইনস্টলেশন হয়ে যাবে। তখন আমরা শতভাগ এলোপ্যাথিক ওষুধের মান পরীক্ষা করতে পারবো।
তিনি আরও বলেন, আমাদের লোকবল সংকট আছে, কিন্তু সেটা কেটে যাবে। এখানে নমুনা পরীক্ষা না হওয়াতে ঢাকায় কিছু লোকবলকে সংযুক্ত করা হয়েছে। পরিপূর্ণভাবে যখন চালু হবে তখন লোকবলও চলে আসবে। সার্বক্ষণিক বিদ্যুতের জন্য জেনারেটর স্থাপন হবে, আলাদা সাবস্টেশন হবে। সকল ধরনের কাঁচামালও চলে আসবে, তাপ নিরোধক ব্যবস্থা হবে। আধুনিক মেশিনগুলো ইনস্টলেশনের সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য কাজও সম্পন্ন হয়ে যাবে।
স্বাধীনতার পরপরই আঞ্চলিক ল্যাবরেটরি হিসেবে এ প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু। ১৯৯৭ সালের পর এটির নাম দেয়া হয় চট্টগ্রাম সেন্ট্রাল ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরি। এরপর এখানে নতুন কোনো পদ সৃষ্টি করা হয়নি। ফলে জনবল সংকটে ধুঁকছে প্রতিষ্ঠানটি নানা সংকটের মধ্যে দিন কাটছে ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবের।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৩
এমআর/পিডি/টিসি