চট্টগ্রাম: সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী বলেছেন, সবার সহযোগিতা নিয়ে দ্রুত বাঁশখালী সড়কের কাজ শুরু করা হবে। পহাড়, সমুদ্র, সমতল নিয়ে অপূর্ব সুন্দর এলাকা বাঁশখালী।
রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) বাঁশখালী উপজেলা মিলনায়তনে আয়োজিত জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আপনাদের এমপি আমাকে এখানে নিয়ে এসেছেন। আপনারা ভালো একজন এমপি পেয়েছেন। বড় করে সড়ক করার জন্য সময় নিয়েছি। ছোট হলে করে ফেলতাম। এই সড়কের কাজ দ্রুত শুরু করতে পারলে আমিও সন্তুষ্ট হবো। আপাতত সড়কটি ভালো আছে। শুধু বড় করতে হবে। এখনই কাজ শুরু করলে এক বছর লাগবে।
বাঁশখালীর সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান বলেন, সওজের রাস্তা বাঁশখালীতে কম। শেখেরখীল থেকে ছনুয়া হয়ে কুতুবদিয়া ঘাট সড়ক ও গুনাগরী থেকে পশ্চিম বাঁশখালী সড়কটি সওজ নিলে অনেক মানুষের উপকার হবে। পর্যটনের যে বিকাশ ঘটেছে তা তারও সুফল মিলবে। বাঁশখালীর প্রধান সড়কটি বড় করা সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার কানেকটিভিটির মাঝখানে বাঁশখালী পড়েছে। আমরা চট্টগ্রাম-কক্সবাজারকে গুরুত্ব দিচ্ছি। এখন ঈদমনি পর্যন্ত এই রাস্তাটি গুরুত্ব পেয়েছে৷ টানেল হওয়ার পরে অনেক গুরুত্ব বেড়েছে। সড়কটি নির্মিত হলে ৩০ কিলোমিটার দূরত্ব কমবে। ইতোমধ্যে এই সড়ক নিয়ে একাধিক প্রকল্প তৈরি করেছি। ডোনারও এসেছিল। ৩৪ ফিট করলে আমাদের ২৯০০ কোটি টাকা লাগবে। যার ৫০ শতাংশ লাগে ভূমি অধিগ্রহণে। কালাবিবির দিঘি থেকে এটি ৬০ কিলোমিটার রোড। মাতারবাড়ি গাড়ি এ রোডে আনলে একই সমস্যা হবে। এই রোডে ট্রাক ঢুকবে। চার লেন করার পর দুই মিটার করে সিএনজি লেন করলে ১১ হাজার কোটি টাকা লাগবে। ৮ লেনের অধিগ্রহণ করার পর বড় আকারে সড়কটি করতে গেলে ১৮ হাজার কোটি টাকা লাগবে।
তিনি বলেন, তিনটি সড়কের প্রস্তাবনায় প্রথমটি করতে ডোনার লাগবে না, জিওবিতে হবে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রস্তাবনায় করতে জিওবির টাকায় হবে না, ডোনার লাগবে। আপনারা হেল্প করলে প্রথমভাবে দ্রুত সড়কটি করা হবে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রস্তাবনায় হলে ডোনার নিয়ে কাজ করতে সময় লাগবে। জায়গা দিলে ৩৪ ফুটের সড়ক ৬ মাসে করা যাবে। পাশাপাশি আরো দুই একটা কানেকশন সড়ক করতে পারলে ভালো হবে।
সরকারের সাবেক অতিরিক্ত সচিব হাবিবুল কবির দুলু বলেন, সরকারের প্ল্যান শুনেছি। আনোয়ারা এখন শহর হয়ে গেছে। পেকুয়া শহর হওয়ার পথে। মাঝখানে অবহেলিত আছে বাঁশখালী। আমরা নতুন এমপি পাওয়ার পর আশার ফানুস উপরে উঠে গেছে। সচিব আসায় আশা বেড়েছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী বিধান চন্দ্র ধর বলেন, আমি সওজে থাকতে অনেক প্রচেষ্টা ছিল। টাকার সক্ষমতার কারণে হয়নি। প্রধানমন্ত্রী কর্ণফুলি সেতু প্রকল্প উদ্বোধন করতে আসলে সৌভাগ্যবশত আমি পিডি ছিলাম। মিচিং রোড কানেকটিং করলে দুরুত্ব কমবে। তখনই ডিপিপি পাঠিয়ে ছিলাম। স্টাডি করা হয়েছে। আমরা বাঁশখালীবাসী খুব অসুবিধার মধ্যে আছি। যদি সেতুতে টোল না থাকতো তাহলে আরও শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠতো।
বাঁশখালীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার বলেন, ডোনার খুঁজতে খুঁজতে অনেকগুলো প্রাণ চলে যাবে। তাই কাজটি দ্রুত ডোনার ছাড়া জিওবি ফান্ড থেকে করতে হবে। সড়কটির উন্নয়নে বাঁশখালীর প্রত্যেকে ত্যাগ স্বীকার করবে।
বাঁশখালী উপজেলা প্রকৌশলী বলেন, রাস্তা প্রশস্ত করা জরুরি। এই সড়কে দুর্ঘটনায় অনেকগুলো প্রাণ ঝরছে।
শীলকূপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কায়েশ সরোয়ার সুমন বলেন, প্রধান সড়কটি চার লেনে উন্নীত করে ট্রাফিক যানজট মুক্ত করবেন। এই সড়কটির গুরুত্ব বাড়ায় প্রশস্ত করা জরুরি।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ বলেন, আমাদের রেকর্ডে যদি সড়কটি ৮০ ফুট থাকে তাহলে খুব সহজে করা যাবে। ১৫০০ কোটি টাকায় সুন্দরভাবে সড়কটির কাজ শেষ হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৪
এমআই/পিডি/টিসি